সাংসদ সোমেনের ইস্তফা, মুকুলের মন্তব্য ক্ষতি নেই
পূর্ব ঘোষণা মতো বুধবার সাংসদ পদে ইস্তফা দিলেন সোমেন মিত্র। আগামী সপ্তাহেই তাঁর তৃণমূল ছেড়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার কথা। তবে সোমেনবাবুর দলত্যাগকে কোনও গুরুত্বই দিচ্ছেন না তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়-সহ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। তাঁরা মনে করেন, সোমেনবাবু দীর্ঘদিন তৃণমূল থেকে বিচ্ছিন্ন। ফলে তাঁর তৃণমূল-ত্যাগে দলের কোনও ক্ষতি হবে না।
এ দিন লোকসভার সেক্রেটারি জেনারেল এস বালশেখরের সঙ্গে দেখা করে ইস্তফা পত্র জমা দেন সোমেনবাবু। বছর খানেক ধরেই ডায়মন্ডহারবারের তৃণমূল সাংসদ সোমেনবাবুর সঙ্গে দলীয় নেতৃত্বের সংঘাত চলছিল। তারই পরিণতি এ দিন পদত্যাগ। সোমেনবাবুর কথায়, “দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে আমার খাপ খাচ্ছিল না। কারণ আমরা ক্ষমতায় আসার আগে মানুষকে যে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তার থেকে তৃণমূল সরে এসেছে। বলা হয়েছিল, বদলা নয় বদল চাই। কিন্তু এখন সেই বদলার রাজনীতি চলছে।”
তৃণমূল ছেড়ে আগামী ২১ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক ভাবে তাঁর কংগ্রেসে যোগদানের কথা এ দিন ঘোষণা করেছেন এআইসিসি-র তরফে পশ্চিমবঙ্গের দায়িত্বপ্রাপ্ত সম্পাদক শাকিল আহমেদ খান। তিনি বলেন, “সোমেনবাবুর কংগ্রেসে যোগদান করলে পশ্চিমবঙ্গে দল শক্তিশালী হবে বলে আমরা মনে করি। ২১ জানুয়ারি প্রদেশ কংগ্রেসের দফতরে আনুষ্ঠনিক ভাবে সোমেনবাবু যোগদান করবেন। প্রদেশ কংগ্রেস নেতৃত্ব ও জেলা কংগ্রেসের নেতারা তাঁকে ওখানে স্বাগত জানাবেন।” কংগ্রেসে যোগদান নিয়ে সোমেনবাবু বলেন, “সবাই জানে কংগ্রেসের এখন ক্ষয়িষ্ণু দশা। দলকে সংগঠিত করাই হবে আমার প্রধান কাজ।” মুকুলবাবু অবশ্য মনে করেন, “তৃণমূল যখন তৈরি হয়েছিল, সেই ১৯৯৮ সালে সোমেনবাবুর হাত ধরেই কংগ্রেস দলটি উঠে যাচ্ছিল। উনি তখন প্রদেশ কংগ্রেসের সভাপতি ছিলেন। বাংলার কংগ্রেস কর্মীরাই ওঁর প্রতি বিরক্ত হয়ে কংগ্রেস ছেড়েছিল।”
তাঁর নির্বাচনী কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে বেআইনি অর্থলগ্নি সংস্থার রমরমা বন্ধে বছর দেড়েক আগে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক ও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কাছে সোমেনবাবু চিঠি লিখেছিলেন। তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে না জানিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে চিঠি লেখায় তাঁর উপর বেজায় চটে ছিলেন দলীয় নেতৃত্ব। সেই শুরু। মুকুলবাবু জাহাজ প্রতিমন্ত্রী থাকাকালীন তাঁর সঙ্গেও সংঘাত হয়েছে সোমেনবাবুর। পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী চৌরঙ্গীর তৃণমূল বিধায়ক শিখা মিত্রও দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করায় তাঁকে ইতিমধ্যেই সাসপেণ্ড করেছে দল। শিখাদেবী অবশ্য এখনও তৃণমূল ছাড়েননি। এ দিন পদত্যাগের পরে সোমেনবাবুর মন্তব্য, “এখন নিজেকে অনেকটাই মুক্ত মনে হচ্ছে। এতদিন কোনও স্বাধীনতা ছিল না।” সোমেনবাবুর এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে লোকসভার দলের মুখ্য সচেতক কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পাঁচ বছর তৃণমূলে থেকে যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা ভোগ করলেন কেন? আগে ইস্তফা দিলে খুশি হতাম।”
লোকসভা ভোটের আগে সোমেনবাবুর সাংসদ পদে ইস্তফা দিয়ে কংগ্রেসের পথে পা বাড়ানোকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল যুবা’র সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এ দিন বেহালার রায়নগর মাঠে ব্রিগেড-প্রস্তুতির সভায় সরাসরি সোমেনবাবুর নাম না-করে অভিষেক বলেন, “কংগ্রেসের কিছু ভুঁইফোঁড় নেতা ক্ষমতার জন্য তৃণমূলে এসেছিলেন। ক্ষমতা না পাওয়ায় দুর্নীতির সঙ্গে মিশে থাকতে কংগ্রেসে ফিরছেন।” কংগ্রেসে ফিরে তিনি লোকসভায় প্রার্থীও হতে পারেন সোমেনবাবু ইঙ্গিত দিয়েছেন। তাঁকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে অভিষেক বলেন, “তৃণমূল নেত্রীর ছবি ছাড়া ১০টা ভোট পেয়ে দেখান! কী ভাবছেন, কংগ্রেসে গিয়ে মন্ত্রী হবেন?” পার্থবাবু বলেন, “উনি চলে যাওয়ায় দলে প্রভাব পড়বে না। দল বরং শক্তিশালী হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.