সকাল পৌনে দশটায় বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে বাংলার ক্রিকেটাররা দেখলেন, তাঁদের হোটেল নিয়ে যাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছে এমন একটা বাস, যা অনেকটা কলকাতার রাস্তার পাবলিক বাসের মতো। এমন বাস দেখেই মাথা গরম লক্ষ্মীরতন শুক্লদের।
হওয়াটা স্বাভাবিক। রঞ্জি ট্রফির সেমিফাইনাল খেলতে এসে যে এমন অভ্যর্থনা পাবেন, তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি বোধহয়। প্রথমে কেউই উঠতে চাননি সেই বাসে। শুধু এক জন বাদে। তিনি কোচ অশোক মলহোত্র। তাঁর বক্তব্য, এ সব ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে ঝামেলা করে অযথা ক্রিকেট থেকে ফোকাস সরিয়ে লাভ নেই। এয়ারপোর্ট থেকে টিম হোটেল— বড়জোর আধ ঘণ্টার রাস্তা। সেটুকু রাস্তা এই বাসেই চলে যাওয়া যাবে। অধিনায়ক লক্ষ্মী বাকি সতীর্থদের বুঝিয়ে-সুঝিয়ে বাসে তুলে দেন। ততক্ষণে অবশ্য তিনটে গাড়ির ব্যবস্থা হয়ে গিয়েছিল ক্রিকেটারদের হোটেলে নিয়ে যাওয়ার জন্য। কিন্তু কোচ-ক্যাপ্টেনের কথামতো পুরো টিম বাসেই উঠে পড়ে।
দল সকালে ইন্দৌর পৌঁছলেও এ দিন প্র্যাকটিস ছিল না লক্ষ্মীদের। বিকেলে হোটেলের জিমে গা ঘামিয়ে নিলেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার সকালে সেমিফাইনালের প্রস্তুতি শুরু। মহারাষ্ট্রও একই সঙ্গে প্র্যাকটিসে নামবে। বাংলার মতো তারাও টগবগ করে ফুটছে। গোটা দলটারই গড় বয়স ২৫-২৬। তরুণ বিপক্ষের তুলনায় বাংলার প্রধান ভরসা দলের অভিজ্ঞ, পোড়খাওয়া ক্রিকেটাররা। ১৯৯২-এ মহারাষ্ট্রের যে দল রঞ্জি ফাইনালে উঠে হেরে গিয়েছিল, সেই টিমের ক্যাপ্টেন সুরেন্দ্র ভাবে-ই এ বার কোচ। এই পর্যায়ের ম্যাচে টেম্পারামেন্টটা কেমন হওয়া উচিত, ভালই জানেন তিনি। বাংলারও তেমন আছেন অশোক মলহোত্র। ১৯৯০-এ রঞ্জি চ্যাম্পিয়ন দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য ছিলেন তিনি।
অশোক দিন্দা, ঋদ্ধিমান সাহাদের অবশ্য আড়াই বছর আগে এই হোলকার স্টেডিয়ামে দলীপ ট্রফি জয়ের অভিজ্ঞতা আছে। দিন্দা সেই ফাইনালে সাত উইকেট পেয়েছিলেন। “এখানে এসে মনে পড়ছে সেই ম্যাচটার কথা। মনে করার চেষ্টা করছি, সেই ম্যাচে কী কী ভাল হয়েছিল। সেগুলোও কাজে লাগতে পারে এই ম্যাচে”, বলছিলেন দলের প্রধান পেস অস্ত্র। ঋদ্ধিমান অবশ্য পিছনে তাকানোর পক্ষপাতী নন। বললেন, “এটা একটা নতুন ম্যাচ। সব কিছু নতুন করেই ভাবতে হবে।”
ইন্দৌর উইকেটে ইডেনের মতোই ঘাস ছাড়া রয়েছে। তাতে হালকা রোলার চালানোর নির্দেশ দিয়েছেন পিচের দায়িত্বে থাকা বাঙালি কিউরেটর তাপস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বললেন, “ব্যাটসম্যানরা শট খেলতে পারবে যেমন, তেমন পেসাররাও বাউন্স ও গতি পাবে এখানে। পরের দিকে স্পিনাররা টার্ন পাবে।” |