২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ইরানি ট্রফির অবশিষ্ট ভারত স্কোয়াডে সুযোগ পেয়েছিলেন ঈশ্বর পাণ্ডে। সে বার রঞ্জি মরসুমে মধ্যপ্রদেশের হয়ে ৪৮টা উইকেট নিয়েছিলেন তিনি। চলতি মরসুমে তাঁর রঞ্জি উইকেটের সংখ্যা ২৪। সঙ্গে যোগ করুন গত অক্টোবরে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’-র বিরুদ্ধে ৪টে উইকেট। যার স্বীকৃতি— নিউজিল্যান্ড সফরে টেস্ট এবং ওয়ান ডে দলে তাঁর নাম।
“সুযোগ পেয়ে আমি খুব খুশি। গত দু’বছর আমার পারফরম্যান্সের পুরস্কার এটা। অতীতে ভাল ক্রিকেট খেলেছি। আশা করি ভবিষ্যতেও ভাল খেলে আমার জায়গাটার মর্যাদা দিতে পারব,” নিউজিল্যান্ড যাওয়ার আগে বলছিলেন ঈশ্বর। মধ্যপ্রদেশের পূর্ব প্রান্তে রেওয়া-র মিডিয়াম পেসার যখন প্রথম ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন, তখন তাঁর স্বপ্ন ছিল ব্যাটসম্যান হওয়া। ফৌজি অফিসারের ছেলে, ৬ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতা। বাবা-র কাছ থেকেই জন্মসূত্রে শক্তপোক্ত চেহারাটা পেয়েছেন। এই উচ্চতার জন্যই বাউন্স একটা বাড়তি অস্ত্র ঈশ্বরের কাছে। তবে গতি নয়, জোর দিতে চান সুইংয়ের উপর। “আমি সাধারণত ১৩০-১৩৫ গতিতে বল করি। সুইংটাই আমার প্রধান অস্ত্র। সেটাকেই আরও জোরদার করতে চাই,” বলছিলেন ভারতীয় পেস ব্যাটারির নতুন অস্ত্র।
|
ঈশ্বর পাণ্ডে
বয়স ২৪ বছর
১৫৩ দিন
উচ্চতা ৬ ফুট
২ ইঞ্চি
মেন্টর লিলি, ম্যাকগ্রা
অস্ত্র বাউন্স, আউটসুইং
গড় গতি ১৩০-১৩৫ কিলোমিটার
সেরা বোলিং ৮-৮৪ (প্রথম শ্রেণি) |
|
|
আঠারো বছর বয়সে মন দিয়ে বল করতে শুরু করা ঈশ্বর এখন ভারতীয় পেস আক্রমণের অন্যতম সদস্য হয়ে উঠতে চলেছেন। ছ’বছরে অনেক উন্নতি করেছেন তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ সিরিজের আগে ইন্ডিয়া ‘এ’ দলের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকা গিয়েছিলেন ঈশ্বর। সেখানে দুটো বেসরকারি টেস্টে ১১টা উইকেট আছে তাঁর। “যে কোনও পেসারের কাছে বিদেশে খেলাটা খুব আনন্দের। দক্ষিণ আফ্রিকায় যে পরিবেশে বল করেছি, সেটা আমাদের দেশের চেয়ে একদম আলাদা। আমি খুব খুশি যে প্রথম বার জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েই বিদেশে খেলতে যাচ্ছি,” বলছিলেন ঈশ্বর। সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “নিউজিল্যান্ডে অনেক কিছু শিখতে পারব। ওখানকার পিচে সুইং আর বাউন্স থাকবে, তাই তরুণ পেসার হিসেবে ঝাঁপিয়ে পড়ার ইচ্ছেটা খুব বেশি থাকবে। কিন্তু আমি যেটা পারি, সেটার উপরই ফোকাস করব। নির্দিষ্ট লাইন-লেংথে বল করে যাব। সুইং করাব।”
আসন্ন সফরে জাহির খানের সঙ্গে বল করতে মুখিয়ে আছেন ঈশ্বর। যাঁর সঙ্গে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ‘এ’ সিরিজে বল করেছিলেন তিনি। “জাহিরের কাছ থেকে কত কিছু শেখার আছে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে ওর সঙ্গে যেটুকু সময় কাটিয়েছিলাম, তার মধ্যেই জাহির শিখিয়েছিল ম্যাচের জন্য কী ভাবে প্রস্তুতি নিতে হয়। বোলিং টেকনিক নিয়েও পরামর্শ দিয়েছিল। রিভার্স সুইং নিয়ে বলেছিল, পুরনো বলে কী ভাবে বল করতে হয়।” |
‘নেপিয়ারের আবহাওয়াটা দারুণ। মনে হয় সারাক্ষণ দৌড়ে বেড়াই।
সূর্যের তাপ সামলানোর জন্য এই উজ্জ্বল লাল রংয়ের সানগ্লাসের খুব দরকার।’ প্র্যাকটিসে যাওয়ার পথে টিম বাসে বিরাট কোহলি। |
নিউজিল্যান্ডে হাওয়ার পাশাপাশি চার পেসারের সঙ্গে লড়ে প্রথম এগারোয় জায়গা করে নেওয়ার চ্যালেঞ্জটাও নিতে হবে ঈশ্বরকে। ইশান্ত শর্মা, ভুবনেশ্বর কুমার, মহম্মদ শামির পাশাপাশি ওয়ান ডে স্কোয়াডে রয়েছেন বরুণ অ্যারনও। আর টেস্টে এই চার জনের সঙ্গে যোগ হবে জাহির এবং উমেশ যাদব। যা নিয়ে ঈশ্বরের বক্তব্য, “আমার একমাত্র লক্ষ্য হল নিজেকে নিংড়ে দিয়ে বল করা। সেটা নেটে হোক বা ম্যাচে। প্রথম সুযোগে যাতে সবাইকে প্রভাবিত করতে পারি, সেটাও চেষ্টা করব। জাতীয় অভিষেক ঘটানোর সুযোগ যদি আসে, তা হলে সেটা নিয়ে বেশি না ভেবে শুধু বলটা করে যাব।” |