লোকসভা নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার আগেই জঙ্গিপুরে নির্বাচনী প্রচারে নেমে পড়ল কংগ্রেস ও তৃণমূল। এবারেও সেই বিড়ি শ্রমিকদের বঞ্চনাকে হাতিয়ার করে মাঠে নেমে পড়েছে যুযুধান পক্ষ।
গত শনিবার থেকেই জঙ্গিপুরে প্রচারে নেমে পড়েছেন কংগ্রেস প্রার্থী তথা বর্তমান সাংসদ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তাঁর অভিযোগ, ‘‘রাজ্য সরকারের ন্যুনতম মজুরি ধার্য থাকলেও জঙ্গিপুরের বিড়ি শ্রমিকেরা এক হাজার বিড়ি বেঁধে ১০০ টাকা মজুরিও হাতে পাচ্ছেন না।” সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “কেন্দ্রীয় সরকার এই এলাকায় বিড়ি শ্রমিক হাসপাতাল খোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কিন্তু জমির অভাবে কাজ শুরু করা যাচ্ছে না। সমস্যা হল রাজ্য সরকারকে কোনও চিঠি লিখলে তার উত্তর মেলে না।’’
অন্য দিকে এখনও পর্যন্ত প্রার্থী ঘোষণা না হলেও ভোটের প্রচারে নেমে পড়েছে তৃণমূলও। প্রচারের হাতিয়ার সেই বিড়ি শ্রমিক। শনিবার বাসুদেবপুরে এক প্রকাশ্য সভায় রাজ্যের মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দুনারায়ণ চৌধুরী বলেন, “সরকার ন্যুনতম মজুরি ধার্য করেছে ১৬৯ টাকা। তাহলে কেন বিড়ি শ্রমিকদের মজুরি ১০০ টাকায় রফা করা হয়েছে। রফায় কংগ্রেস, সিপিএম সই করলেও তৃণমূল সই করেনি।”
জঙ্গিপুরে ভোটারদের মধ্যে প্রায় ৬ লক্ষই বিড়ি শ্রমিক। কংগ্রেস ও তৃণমূল দুই দলই চাইছে প্রচারের শুরু থেকেই ওই শ্রমিকদের কাছে টানতে। প্রদেশ কংগ্রেস ইতিমধ্যেই ঘোষণা করে দিয়েছে মুর্শিদাবাদ-সহ তিন জেলায় দলীয় ৬ সাংসদই এবারও নিজেদের কেন্দ্রে প্রার্থী হচ্ছেন। রাজ্য কংগ্রেসের পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব সাংবাদিক বৈঠক করে জানিয়েছেন, ‘‘লোকসভা ভোটে জোট হচ্ছে না তৃণমূলের সঙ্গে। রাজ্যের সর্বত্র কংগ্রেস নেতা ও কর্মীদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে দিয়ে দলীয় প্রচারে নেমে পড়তে বলা হয়েছে।” কিন্তু এত আগে থেকে প্রচার কেন? সোহরাব বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপতি হওয়ার আগে প্রণব মুখোপাধ্যায় দু’বার জঙ্গিপুর থেকে জয়ী হন। ২০০৪ সালে জেতেন ৩৭ হাজারে। ২০০৯ সালে সেই ব্যবধান বেড়ে দাঁড়ায় ১ লক্ষ ২৮ হাজারে। কিন্তু ২০১২ সালের উপনির্বাচনে অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের জয়ের ব্যবধান নেমে আসে আড়াই হাজারে। সেই কথা চিন্তা করেই জঙ্গিপুরে নির্বাচন ঘোষণা আগেই প্রচারে নেমে পড়েছে দল।”
তৃণমূলের জঙ্গিপুর মহকুমা সভাপতি জগন্নাথ চৌধুরির দাবি, ‘‘গোটা জেলায় কংগ্রেসের ভাঙন চরম আকার নিয়েছে। এবারের লোকসভায় কংগ্রেসের ছয় আসন কমে একে দাঁড়াবে। বিড়ি শ্রমিকরা সরকার নির্দিষ্ট হারে মজুরি না পাওয়ার দায় কংগ্রেস ও বামেদের। এ রাজ্যে তারাই তো ক্ষমতায় থেকে মালিকদের সঙ্গে রফা চুক্তি করে শ্রমিকদের কম মজুরি নিতে বাধ্য করেছেন জঙ্গিপুরে।” |