ফেডেরার, নাদাল, মারে, শারাপোভা, আজারেঙ্কার মতো মহাতারকাদের সফল অস্ট্রেলীয় ওপেন অভিযান শুরুর দিনে মেলবোর্ন পার্কের শীর্ষ টিআরপি সম্পূর্ণ টেনিস বহির্ভূত একটি বিষয় বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্ল্যাম এরিনার ভয়াবহ গরম!
মঙ্গলবার সারা দিন তাপমাত্রা ছিল চল্লিশ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশে। স্থানীয় সময় সন্ধে পৌনে ছ’টায় মারের ম্যাচ শুরুর সময় হাইসেন্স কোর্ট এরিনার তাপমাত্রা ওঠে ৪২.২ ডিগ্রি। উইম্বলডন চ্যাম্পিয়ন স্ট্রেট সেটে জিতলেও বলেছেন, “এখানকার কিছু ব্যাপার বোধহয় একটু বাস্তবোচিত ভাবে দেখা দরকার। এ ভাবে চললে কোনও দিন কোনও বড় শারীরিক অঘটন ঘটে যেতেই পারে!” |
‘বড়’ না হোক, এ দিনই টুর্নামেন্টে বেশ কয়েকটা শারীরিক পতনের ঘটনা ঘটে গিয়েছে। ফ্রান্সের বোনোয়া পেয়ারের বিরুদ্ধে কানাডার ফ্রাঙ্ক ডান্সভিচ পুরো ম্যাচ খেলে হারলেও একটা সময় কোর্টে অজ্ঞান হয়ে পড়েন। “সাংঘাতিক গরমে একটা সময় শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পেরে কোর্টের ধারে বিলবোর্ড ধরে দাঁড়িয়ে পড়েছিলাম। তার পর আর কিছু জানি না! কয়েক সেকেন্ড পর চোখ খুলে দেখলাম অনেক লোক চারপাশে। আমার শুশ্রূষা চলছে,” পরে বলেন ফ্রাঙ্ক। তাঁরই দেশের তারকা মিলোস রাওনিকের বিরুদ্ধে হারা ম্যাচে একটা সময় স্প্যানিশ প্রতিপক্ষ ড্যানিয়েল ট্র্যাভার অজ্ঞান হয়ে পড়া এক বলবয়কে কোর্টের ধারে দৌড়ে গিয়ে না ধরলে সেই কিশোর পড়ে যেত। লিয়েন্ডার পেজের ডাবলস সঙ্গী রাদেক স্টেপানেক-ও প্রথম সিঙ্গলস ম্যাচে গরমে কাহিল হয়ে কোর্টের ধারে বমি করার পর চতুর্থ সেটে অবসর নিতে বাধ্য হন।
গত বারের মেয়েদের চ্যাম্পিয়ন আজারেঙ্কা প্রথম রাউন্ড জিতে বলে দেন, “কোর্টে মনে হচ্ছিল খেলছি না তো, যেন ফুটন্ত ফ্রাইং প্যানের উপর নাচছি!” বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর মেয়ে ওজনিয়াকি সকাল এগারোটায় দিনের প্রথম ম্যাচ খেলেও বলেছেন, “আমার এনার্জি ড্রিঙ্কসের প্লাস্টিক বোতলগুলোকে কোর্টের ধারে দেখে মনে হচ্ছিল, এই বুঝি ভেতরের জল ফুটতে শুরু করল!” আজারেঙ্কা, শারাপোভারা এখন ব্রেকে আইসজ্যাকেট গায়ে চাপিয়ে থাকছেন। অসহ্য গরমের মোকাবিলায়।
টুর্নামেন্টের প্রথম সপ্তাহ এ রকম তাপমাত্রা থাকবে বলে মেলবোর্ন আবহাওয়া অফিসের পূর্বাভাস। তা সত্ত্বেও সংগঠকেরা নির্বিকার। টুর্নামেন্ট রেফারি ওয়েন ম্যাককিওয়েন এবং চিফ মেডিক্যাল অফিসার ডক্টর টিম উডের সমবেত মন্তব্য, “তাপমাত্রা বেশি হলেও আদ্রর্তা কম। মঙ্গলবার বেশির ভাগ ম্যাচ শেষ হয়েছে কোর্টে মেডিক্যাল টিমকে না ডেকেই।” কিন্তু শুধু গরমে কাহিল হওয়া নয়, চোট-আঘাতেও এ দিন জন ইসনার, বার্নার্ড টমিচরা ম্যাচ ছেড়ে দিতে বাধ্য হন। শীর্ষ বাছাই নাদালের বিরুদ্ধে অস্ট্রেলিয়ার এক নম্বর তারকা টমিচ প্রথম সেট ৪-৬ হারার পর কুঁচকির চোটে ওয়াকওভার দেন। |
অন্য দিকে, টমিচের পূর্বসুরি অস্ট্রেলীয় তারকা লেটন হিউইট আজ প্রথম রাউন্ডে হারলেও বত্রিশ বছর বয়সেও এই গরমে পাঁচ সেট লড়াই করেছেন। আরও এক বিখ্যাত বত্রিশ সংগঠকদের সাহসের কারণ হচ্ছেন। তিনিফেডেরার। এডবার্গকে কোচ রাখার পর যাঁকে ‘ফেডবার্গ’ বলা হচ্ছে, ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াসে খেলে স্ট্রেট সেটে জেতার পর বলেন, “দুবাইয়ে তো এর চেয়েও বেশি গরমে প্র্যাকটিস করে এলাম!”
তবে মেলবোর্নের গরমের মধ্যে ভারতীয়দের জন্য ঠান্ডা খবর, সোমদেব দেববর্মনের প্রথম রাউন্ডেই বিদায়। স্পেনের লোপেজের কাছে ৪-৬, ৫-৭, ১-৬ হেরে।
|