|
|
|
|
আঁধার চৌরঙ্গি, আলোর দাবি খোদ পুলিশের |
সুমন ঘোষ • খড়্গপুর |
রেলশহর খড়্গপুর ঘেঁষা চৌরঙ্গি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি এলাকা। চারদিকে চারটি রাস্তা চলে গিয়েছে। কলকাতা থেকে জঙ্গলমহলের প্রবেশপথই হল এই চৌরঙ্গি। একদিকে ৬ নম্বর জাতীয় সড়ক রয়েছে। ৬০ নম্বর সড়কের সঙ্গেও যুক্ত এই এলাকা। চৌরঙ্গি মোড়ে বাসও দাঁড়ায়। অথচ এলাকায় কোনও যাত্রী প্রতীক্ষালয় নেই, নেই পর্যাপ্ত আলো। সন্ধে নামলেই অন্ধকারে ঢেকে যায় চৌরঙ্গি। অপরাধমূলক কাজকর্মের আশঙ্কা বাড়ে।
সমস্যা সমাধানে এ বার চৌরঙ্গিকে আলোকিত করার দাবি জানাল খোদ পুলিশ। কোথায় কতগুলি আলো দিতে হবে তার নকশা বানিয়ে পাঠানো হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছে। জেলা প্রশাসন তা পাঠিয়েছে মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদকে। পর্ষদের চেয়ারম্যান মৃগেন মাইতি বলেন, “এটা ঠিক যে ওখানে আলো দেওয়া প্রয়োজন। পুলিশের আবেদন আমার কাছে এসেছে। আমরা আলোর ব্যবস্থাও করতে পারি। কিন্তু বিদ্যুতের বিল কে দেবে, সেটাই সমস্যা। তাই সৌর আলো দেওয়া যায় ভাবা হচ্ছে।” বিষয়টি নিয়ে শীঘ্রই সব দফতরের সঙ্গে আলোচনায় বসবেন বলে পর্ষদ চেয়ারম্যান জানিয়েছেন। |
|
পথবাতি নেই, চৌরঙ্গিতে অন্ধকারেই বাসের অপেক্ষায় যাত্রীরা।—নিজস্ব চিত্র। |
চারদিকে রাস্তা থাকায় চৌরঙ্গি মোড় যথেষ্ট দুর্ঘটনাপ্রবণ। দুর্ঘটনা এড়াতে মাঝে একটা গোলাকার অংশ ঘিরে দেওয়া হয়েছে। আর চারদিকে চারটি ‘ব’ আকৃতির অংশ রয়েছে। অথচ এই গোটা চত্বরে আলো রয়েছে হাতে গোনা দু’-একটি। ফলে চারদিকই অন্ধকার হয়ে থাকে। ফলে সমস্যায় পড়েন বাসযাত্রীরা। চৌরঙ্গি থেকে মেদিনীপুর ও খড়্গপুর দু’দিকের বাসই মেলে। অনেকে আবার ঝাড়গ্রাম যাওয়ার জন্যও এখানে বাসে ওঠেন। এখানে কোনও যাত্রী প্রতীক্ষালয় নেই। এলাকাটি লোকালয় থেকেও কিছুটা দূরে। সন্ধে নামলেই চৌরঙ্গিতে অসামাজিক কাজকর্ম হয় বলে অভিযোগ। কখনও জোর করে লরি আটকে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে, আবার কখনও বাসের জন্য অপেক্ষারত যাত্রীদের জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়ারও ঘটনা ঘটেছে।
পুলিশ যে নকশা দিয়েছে, তাতে চারটি ‘ব’ আকৃতির চত্বরটিতে ৬টি করে ২৪টি আলো দিতে বলা হয়েছে। আর মাঝের গোলাকার অংশে থাকবে ১৬টি আলো দিতে। সব মিলিয়ে ৪০টি আলো দিলেই চারদিক আলোকিত হবে বলে পুলিশের অভিমত। মৃগেনবাবু অবশ্য বিদ্যুত্ বিল কে দেবে তা নিশ্চিত করার পরে আলো বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন। যাত্রীদের যাতে রোদে-জলে খোলা আকাশের নীচে দাঁড়াতে না হয় সে জন্য একটি প্রতীক্ষালয় তৈরির পরিকল্পনা পর্ষদের রয়েছে বলে মৃগেনবাবু জানান। তাঁর কথায়, “বিদ্যুত্ বিল বিষয়টি এসে যাওয়ায় আলো লাগানোর ব্যাপারে একটু সময় লাগছে। তবে শীঘ্রই যাত্রী প্রতীক্ষালয়টি আমরা করে দেব।” চৌরঙ্গির মতো আরও কয়েকটি এলাকায় বেশি আলো দেওয়ার কথাও জানানো হয়েছে পুলিশের পক্ষ থেকে। এগুলি সবই খড়্গপুরে। সাদাতপুর রাখাজঙ্গল এলাকায় বনজারা বস্তি এলাকায়, প্রিন্টিং প্রেসের কাছে, চাঁদনি চক এলাকায় দুর্গামন্দির থেকে বাসস্ট্যাণ্ড পর্যন্ত, ঠাকুরচকে, পুরাতন বাজার থেকে বোগদা পর্যন্ত, কৌশল্যাতে তেলকলের কাছে ও শহরের ২ থেকে ৬ নম্বর অ্যাভিনিউতে। মৃগেনবাবু বলেন, “সব প্রস্তাবই খতিয়ে দেখা হবে।” |
|
|
|
|
|