শিশুর মৃত্যু, চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ
ক সদ্যজাতের মৃত্যুতে নার্সদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠল কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে। সোমবার কাটোয়ার মহকুমাশাসক তথা ওই হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির সভাপতির কাছে বিষয়টি নিয়ে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন ওই প্রসূতী, পুতুল দাস।
পুতুলদেবীর অভিযোগ, লেবার রুমে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরেই তাঁর শরীর থেকে শিশুটির মাথা বেরিয়ে আসে। ওই অবস্থাতেই তাঁর টেবিলটিকে তিন বার ঘোরানো হয়। তখনই কোনওভাবে মাথায় আঘাত লেগে ওই সদ্যজাতের মৃত্যু হয় বলে পুতুলদেবীর অনুমান। কাটোয়ার মহকুমাশাসক আর অর্জুন বলেন, “এখনও আমি ওই অভিযোগ হাতে পাইনি। পেলে ঘটনাটি খতিয়ে দেখব।”
হাসপাতাল চত্বরে শোকার্ত পুতুলদেবীর পরিবার।—নিজস্ব চিত্র।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুরে মঙ্গলকোটের বাজার গ্রামের ওই মহিলা প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি হন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর শাশুড়ি মঞ্জুদেবী। তাঁরা জানান, ভর্তি হওয়ার পরেই ওই হাসপাতালের চিকিৎসক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় প্রসূতীকে দেখেন। সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ আরও একবার তিনি পুতুলদেবীকে দেখে জানান, মা ও শিশু ভাল আছে। এ দিন কাটোয়া হাসপাতালে বসে নার্সদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দেন মঞ্জুদেবী। তাঁর অভিযোগ, “রবিবার রাতে প্রসব যন্ত্রণা ওঠার পরে বৌমাকে লেবার রুমে নিয়ে যান নার্সেরা। সেখানে বসে থাকতে থাকতেই শিশুর মাথা বেরিয়ে আসে। তা সত্বেও বৌমাকে টেবিলে তোলা হয়নি। তারও বেশ কিছুক্ষণ পরে তাঁকে টেবিলে তোলা হয়।” পুতুলদেবীরও দাবি, “টেবিলে তোলার পরে টেবিলটিকে তিনবার ঘোরানো হয়। তারপরে প্রসব করানো হয়।” তিনি জানান, শিশুটির মাথায় আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। রক্তের দাগও রয়েছে। সোমবার সকালে কাঁদতে কাঁদতে পুতুলদেবী বলেন, “বারো বছর বিয়ে হয়েছে। কোনও সন্তান ছিল না। ডাক্তার-বদ্যি দেখিয়ে, ঠাকুরের কাছে মানত করেও লাভ হয়নি। এত দিনে যদি বা সন্তান এল, তাও কেড়ে নিল।” হাসপাতালের এক কোণে মৃত সদ্যজাতকে নিয়ে বসেছিলেন ওই প্রসূতীর ননদ মনিকাদেবী। তিনি বলেন, “বৌদিকে তো সামলানোই যাচ্ছে না। তার উপর একে নিয়ে গেলে কী যে হবে!” মঞ্জুদেবীর অভিযোগ, লেবার রুমে নিয়ে যাওয়ার পর থেকেই দুর্ব্যবহার করছেন নার্সরা।
তবে কাটোয়া হাসপাতালের নার্সদের ব্যবহার নিয়ে রোগীর পরিজনেরাই নন, আশা কর্মীদেরও অভিযোগ রয়েছে। এই আশা কর্মীরা গ্রাম থেকে প্রসূতীদের নিয়ে এসে হাসপাতালে ভর্তি করান। প্রসূতীদের প্রাথমিক দেখভালও করেন। কাটোয়া হাসপাতালে আশা কর্মীদের জন্য ‘দিশা হেল্প ডেস্ক’ও রয়েছে। কাটোয়া ১ ব্লকের সুদপুর এলাকার এক আশা কর্মী অর্পণা সিংহের অভিযোগ, “আমরা প্রসূতী নিয়ে আসি। ভর্তি করার পরে খোঁজ খবর নিতে গেলেই নার্সরা দুর্ব্যবহার করেন। কার্যত আমাদের ওয়ার্ড থেকে তাড়িয়ে দেন। ব্লক সভায় বিষয়টি জানিয়েয়ছি।”
মহকুমা হাসপাতালের সুপার বর্ণরাম টুডু বলেন, “বিষয়টি নজরে নেই, খোঁজ নিয়ে দেখব।” আর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সোমনাথ মুখোপাধ্যায় সোমবার বিকেলে বলেন, “নার্সদের সঙ্গে কথা হলে বুঝতে পারব সাধারণ প্রসবে কেন এরকম ঘটনা ঘটল।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.