তাহেরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র
নিয়মিত ডাক্তার আসেন না, সমস্যায় রোগীরা
সাকুল্যে একজন চিকিৎসক। তাঁর আসা-যাওয়া মর্জিমাফিক। ভাগ্যক্রমে কোনও কোনও দিন রোগীরা তাঁর দেখা পান। সপ্তাহের সিংহভাগ দিনই ভারপ্রাপ্ত চিকিৎসকের পা পড়ে না তাহেরপুর প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে। ফলে দীর্ঘদিন ধরে পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন রোগীরা।
বুধবার বেলা এগারোটা নাগাদ তাহেরপুর স্টেশন থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে রোগীদের হয়রানির চিত্র চোখে পড়ল। তাহেরপুরেরই বাসিন্দা বছর সত্তরের জগদীশ চৌহান এসেছিলেন ডাক্তার দেখাতে। কিন্তু, ডাক্তারের দেখা না পেয়ে অবশেষে ফার্মাসিস্টের কাছ থেকে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরতে হয়েছে তাঁকে। জগদীশবাবু বলেন, “হাত-পা চুলকাচ্ছে। তাই ভাবলাম হাসপাতালে যাই। কিন্তু চিকিৎসকের দেখা মিলল না।” তাহেরপুর নোটিফায়েড এলাকার প্রায় ৭৫ ছুঁইছুঁই সুমিত্রা রায়ও হাসপাতালে এসে ডাক্তারের দেখা না পেয়ে ফিরে গিয়েছেন। তিনি বলেন, “শ্বাসকষ্ট হচ্ছে। হাঁটতে পারছি না। কথা বলতে কষ্ট হচ্ছে। কিন্তু হাসপাতালে ডাক্তারের দেখা না পেয়ে বাড়ি ফিরতে হল।” হাসপাতালের এক কর্মী জানালেন, প্রতিদিন গড়ে ৪০-৫০ জন রোগী আসেন। গরমকালে সংখ্যাটা আরও বাড়ে। নামকেওয়াস্তে একজন চিকিৎসক থাকলেও, ভাগ্যের জোর না থাকলে তাঁর সাক্ষাত পাওয়া মুশকিল। সব ঝক্কি সামলাতে হয় ফার্মাসিষ্টকে। চার জন কর্মী থাকলেও ওদের আধিকাংশই গল্প-গুজব করে কাটিয়ে দেন।
অথচ এক সময় এই হাসপাতালে নিয়মিত আসতেন ডাক্তার-নার্সরা। তাঁদের থাকার আবাসনও ছিল। এখন ভগ্নপ্রায় সেই আবাসনে কেউই থাকেন না। ১৯৭৫ সালে এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের শিলান্যাস করেন রানাঘাটের তৎকালীন বিধায়ক কংগ্রেসের নরেশ চন্দ্র চাকী। দু’য়েক পর উদ্বোধন করেন রাজ্যের প্রাক্তন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী অজিত কুমার পাঁজা। নরেশবাবু বলেন, “বিধায়ক হিসেবে ওই হাসপাতালে দশ শয্যার ‘ইনডোর’ পরিষেবা চালু করেছিলাম। এক সময় চিকিৎসক ও নার্সদের আবাসনও ছিল। পরবর্তীতে শয্যা বাড়িয়ে ২৫ করা হয়। বামেরা ক্ষমতায় এসে হাসপাতালের দফারফা করেছে। অথচ এই হাসপাতালের উপর কয়েক হাজার মানুষ নির্ভরশীল।” একই কথা শুনিয়ে তাহেরপুর নোটিফায়েডের প্রাক্তন উপ পুরপ্রধান তথা তৃনমূল নেতা পরিতোষ ঘোষ বলেন, “হাসপাতালে সাকুল্যে একজন ডাক্তার রয়েছেন। তিনি আবার নিয়মিত আসেন না। রোগীরা এসে ডাক্তারের দেখা না পেয়ে ফিরে যান।”
স্বাস্থ্যকেন্দ্রের চিকিৎসক অর্পিতা দেওয়ান বলেন, “আমি হবিবপুরে রানাঘাট-১ নম্বর ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে কর্মরত। তাহেরপুরের ওই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে আমাকে সপ্তাহে চার দিন যেতে হয়। শারীরিক অসুস্থতার কারণে ১৪ দিন ছুটি নিয়েছি। বিষয়টি উচ্চ পদস্থ আধিকারিকদের জানিয়েছি। আগামী ২০ জানুয়ারি ছুটির মেয়াদ শেষ হবে। ভেবেছিলাম আরও কয়েক দিন ছুটি নেব। কিন্তু চিকিৎসক সংখ্যায় কম থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।” রানাঘাট-১ এর বিএমওএইচ বাপ্পা ঢালি বলেন, “ওই চিকিৎসক তাঁর অনুপস্থিতির ব্যাপারে আমাকে কোনও কিছুই জানাননি। কেন তিনি নিয়মিত আসেন না তা অবশ্যই খোঁজ নিয়ে দেখব।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.