মধ্যমগ্রাম-কাণ্ডে মৃতার বাবাকে নীতীশের চাকরি

১৩ জানুয়ারি
ধ্যমগ্রামের সেই ধর্ষিত, মৃত কিশোরীর বাবাকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার পুলিশের চাকরি দিতে চাইলেন। আজ নীতীশের সঙ্গে কিশোরীর বাবা-মা প্রায় আড়াই ঘণ্টা কথা বললেন। নিজের রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে আপ্লুত তাঁরা। তবে ধন্দে রয়েছেন, বিহার থেকে মেয়ের উপর অবিচারের লড়াইটা চালিয়ে যেতে পারবেন তো?
গত কাল সন্ধায় ৬টায় নীতীশের সঙ্গে তাঁদের দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু ট্রেন দেরিতে পৌঁছনোয় তা হয়নি। আজ সন্ধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী নীতীশ কুমার ওই পরিবারকে ১ নম্বর অ্যানে মার্গে, মুখ্যমন্ত্রী-নিবাসে ডেকে নেন।
নীতীশের কাছে পৌঁছে মেয়েটির বাবা অভিযোগ করেন, “পশ্চিমবঙ্গ সরকার তাদের জন্য কিছুই করেনি।” সেখানে থাকাও যে ওই পরিবার নিরাপদ বলে মনে করছেন না, তা-ও নীতীশকে জানান মেয়েটির মা। তাঁর চিন্তা স্বামীকে নিয়েই। এর পরেই মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের বিহারে এসে থাকার পরামর্শ দেন। বিহারের সমস্তিপুরের বাসিন্দা এই পরিবারটি দীর্ঘ দিন ধরে পশ্চিমবঙ্গে বসবাস করছেন। সেখানেই ট্যাক্সি চালান মৃতার বাবা। মুখ্যমন্ত্রী তাঁকে বলেন, “আর কলকাতায় থাকতে হবে না। এখানে চলে আসুন। আমি বিহার পুলিশে আপনার চাকরির ব্যবস্থা করে দিচ্ছি।” মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরিবারটির আলোচনার সময় উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের জলসম্পদ মন্ত্রী বিজয় চৌধুরী এবং মুখ্যমন্ত্রীর প্রধান সচিব। মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের সামনেই স্বরাষ্ট্র সচিব এবং ডিজিপি-কে চাকরির ব্যাপারে ফোন করে কথা বলেন। এর পরেই মেয়েটির বাবার কাছ থেকে একটি চাকরির আবেদন লিখিয়ে নেন নীতীশ। হঠাৎ করে মুখ্যমন্ত্রী চাকরির প্রস্তাব দেওয়ায় একটু হকচকিয়ে যান পরিবারটি। মেয়েটির বাবা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এ বিষয়ে ভাবার জন্য কয়েক দিন সময় চান। নীতীশ তাঁদের বলেন, “যান, সবার সঙ্গে আলোচনা করে যে সিদ্ধান্তই নেবেন, তা আমাকে
ফোনে জানাবেন। আমি সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা করব।”
পরিবারটি মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে বেরিয়ে বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবে আমরা একটু দ্বন্দ্বে রয়েছি। আমরা কলকাতায় ফিরে গিয়ে সিদ্ধান্ত নেব বলে মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীও আমাদের এই নিয়ে ভাবতে বলেছেন।” কিন্তু কলকাতা ছেড়ে এলে মেয়ের প্রতি অবিচারের প্রতিকার তাঁরা কী করে করবেন? মুখ্যমন্ত্রী তখন তাঁদের বলেন, “ওখানে থেকে যদি আরও একটা ক্ষতি হয়ে যায়, তা হলে লড়াই করবেন কী ভাবে? এখানে এসেও তো লড়াই করতে পারবেন। আমরা পাশে থাকব।” মুখ্যমন্ত্রী তাঁদের আশ্বস্ত করেন, ন্যায় বিচার পেতে তাঁদের যাতে অসুবিধা না হয় তাও দেখা হবে।
মেয়েটির মৃত্যুর পরপরই নীতীশ বিধায়কদের একটি দল পাঠান ওই পরিবারটির গ্রামের বাড়িতে। আজ জনতা দরবারে নীতীশ এক প্রশ্নের উত্তরে সে কথা উল্লেখ করে বলেন, “জলসম্পদ মন্ত্রী বিজয় চৌধুরীকে ওঁরা বলেছিলেন, আমার সঙ্গে দেখা করতে চান। আমি তা শুনেই ওঁদের সঙ্গে কথা বলছি। সরকারের পক্ষ থেকে আমাদের যা করার তা করছি। পুলিশের একজন আইজিকে পশ্চিমবঙ্গে পাঠিয়ে ঘটনার রিপোর্ট নিয়েছি। মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তবহিল থেকে ১ লক্ষ টাকাও দেওয়া হয়েছে।” তবে কিশোরীর ধর্ষণ ও মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্তের ব্যাপারে নীতীশ বলেন, “অন্য রাজ্য সরকারের কাজে হস্তক্ষেপ করা আমার কাজ নয়। সুতরাং এই নিয়ে আমি কিছু বলছি না। তবে ওই পরিবার যদি মনে করে এই রাজ্যে এসে বসবাস করবেন, তার সব ব্যবস্থা আমি করে দেব।” ওই কিশোরীর পরিবারের সঙ্গে নীতীশের এই সাক্ষাৎ নিয়ে এ দিন মুখ খোলেন সিটু-র রাজ্য সভাপতি শ্যামল চক্রবর্তী। তাঁর বক্তব্য, বিচার না পেয়ে যে ভাবে ওই কিশোরীর বাবাকে বিহারের মুখ্যমন্ত্রীর দ্বারস্থ হতে হয়েছে, তা পশ্চিমবঙ্গের পক্ষে লজ্জার।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.