দীর্ঘ দিন ধরে সংস্কারের অভাবে ফ্লাড শেল্টারের ভিতরে ঝুলে পড়েছে সিলিংয়ের বিম, ইটের দেওয়াল। তার পাশেই রয়েছে নগেন্দ্রপুর হেমন্তকুমারী হাইস্কুল ও একটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। স্কুল ও অঙ্গনওয়াড়ির কচিকাচারা মাঝে মধ্যেই ঢুকে পড়ছে তার ভিতরে। দুর্ঘটনাও ঘটেছে একাধিকবার। দক্ষিণ ২৪ পরগনার মথুরাপুর ২ ব্লকের নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের ওই স্কুলটির কর্তৃপক্ষ ওই ফ্লাড শেল্টারটি ভেঙে ফেলার জন্য একাধিকবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ।
এক সময়ে প্রতি বর্ষাতেই নদীবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হত ওই পঞ্চায়েত এলাকা। জলের তোড়ে ভেসে যাওয়া পরিবারগুলির অস্থায়ী বসবাসের জন্য বছর ৪০ আগে ওই দোতলা ফ্লাড শেল্টারটি তৈরি করে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। পাশের নগেন্দ্রপুর হেমন্তকুমারী হাইস্কুলের ভবনটিও অনেক পুরনো। ১৯৬৪ সালে তৈরি হয় সেটি। বছর সাতেক আগে ওই স্কুলের পাশেই তৈরি হয় অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র। |
মথুরাপুরের ভগ্নপ্রায় ফ্লাড শেল্টার। ছবি: দিলীপ নস্কর। |
স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, এখন স্কুলে প্রায় ১৩৫০ জন পড়ুয়া রয়েছে। অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্রেও ৪৫ জন কচিকাঁচার ভিড়। স্কুলের মিড ডে মিলের রান্নাঘরটিও ফ্লাড শেল্টারের গা ঘেঁষে। টিফিনের সময়ে প্রায়ই পড়ুয়ারা খাবার নিয়ে ঢুকে পড়ে ঝুলে থাকা ফ্লাড শেল্টারটির ভিতর। ইতিমধ্যেই ছাদের চাঙড় ভেঙে পড়ে জখম হয়েছে কয়েক জন পড়ুয়া।
স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, অনেক বার ফ্লাড শেডটি ভেঙে ফেলার জন্য প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁরা। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দ্বিজেন ভুঁইয়া বলেন, “দীর্ঘ দিন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে ফ্লাড সেন্টারটি। শেল্টারটি সংস্কার করা বা ভেঙে ফেলার জন্য বিডিওকে অনেকবার বলেছি।” শিক্ষক-শিক্ষিকাদের বক্তব্য, “সব সময়ে তো স্কুলের কচিকাচাদের চোখে চোখে রাখা যায় না। নজর এড়িয়ে ছোটরা খেলতে ঢুকে যায় ওই শেডটির ভিতর।” তবে সব পড়ুয়াকেই ওই ফ্লাড শেডের ভিতরে না ঢোকার জন্য সতর্ক করেছেন বলে জানান তাঁরা।
নগেন্দ্রপুর পঞ্চায়েতের প্রধান রামকৃষ্ণ বৈরাগীও বলেন, “কয়েক দিন আগেই বিডিওকে ফ্লাড শেল্টারটি দেখিয়েছি। অবিলম্বে ব্যবস্থা না নিলে দুর্ঘটনা ঘটবে। প্রশাসন অনুমতি দিলে আমরাও ভেঙে ফেলতে পারি।”
মথুরাপুর ২ বিডিও ত্রিদিব সর বলেন, “বিপজ্জনক ফ্লাড শেল্টারটি দেখেছি। ওটা ভাঙা হবে না সংস্কার করা হবে, তা নিয়ে জেলাপ্রশাসনের কাছে জানতে চাইব। জেলা প্রশাসনের নির্দেশমতো ব্যবস্থা নেব।”
|