আগামী ৩০ জানুয়ারি তৃণমূল কংগ্রেসের বিগ্রেড সমাবেশ উপলক্ষে বাগনানে তৃণমূলের ডাকা প্রচার সভা কার্যত পরিণত হল লোকসভা ভোটের প্রচার সভায়। সেই সভাতেই বক্তব্য রাখতে উঠে উলুবেড়িয়ার সাংসদ সুলতান আহমেদের ফের লোকসভায় প্রার্থী হওয়ার জল্পনা উস্কে দিলেন কৃষি বিপণন মন্ত্রী অরূপ রায়। একই সঙ্গে ফের তাঁর কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হওয়ার কথা ঘোষণা করলেন তৃণমূলে সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায়। অর্থাৎ, শুধু সাংসদ হিসাবে জেতাই নয়, তৃণমূল যে আগামী লোকসভা ভোটের পরে কেন্দ্রে চালিকা শক্তি হতে চলেছে, সুলতানের প্রসঙ্গ টেনে এ দিন সেই দাবিও আগাম জানিয়ে রাখলেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
বাগনান কেন্দ্রীয় বাসস্ট্যান্ডে বাগনান ব্লক তৃণমূল আয়োজিত সোমবারের এই সভায় মুকুল রায়ের পাশাপাশি হাজির ছিলেন সাংসদ সুলতান আহমেদ, বাগনানের বিধায়ক অরুণাভ সেন, হাওড়া (সদর)-র সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ বিভিন্ন এলাকার দলীয় বিধায়কেরা। |
বক্তা যখন মুকুল। —নিজস্ব চিত্র। |
অরূপবাবু সুলতানকে দেখিয়ে বলেন, “উলুবেড়িয়া থেকে ফের লোকসভায় যিনি প্রার্থী হবেন, সেই সুলতান আহমেদকে এ বার ২ লক্ষ ভোটে জিতিয়ে আসনটি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আপনারা উপহার দিন।” অরূপবাবুর এই মন্তব্যের রেশ টেনে মুকুলবাবুও তাঁর বক্তৃতায় বলেন, “সুলতানকে আমি প্রাক্তন মন্ত্রী বলি না। অল্প সময়ের জন্য তিনি মন্ত্রিত্বের বাইরে আছেন। তিনি ফের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হবেন।” একই সঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “সামনের লোকসভা নির্বাচনে আমাদের ভূমিকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাম্প্রদায়িক বিজেপি ও দুর্নীতিগ্রস্ত কংগ্রেস দিল্লির ক্ষমতায় যেতে পারবে না। এখন থেকেই চেষ্টা চালাতে হবে। প্রতিটি বুথে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। যত বেশি সম্ভব সংখ্যায় লোকসভা আসনে আমাদের জিততে হবে। সারা দেশকে নেতৃত্ব দেবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।”
এ দিনের সভায় ভিড় হয়েছিল বেশ ভালই। বক্তৃতা দিতে গিয়ে মুকুলবাবু বলেন, “সিপিএমের মুখে সন্ত্রাসের সমালোচনা সাজে না। সন্ত্রাসের যে চেহারা তাঁরা গত ৩৪ বছরে এই রাজ্যে দেখিয়েছে, ভারতবর্ষের অন্যান্য এলাকার মানুষ কল্পনা করতে পারবে না।” উন্নয়নকে হাতিয়ার করেই যে আগামী লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূল লড়াই করবে, তাও জানিয়ে দেন মুকুলবাবু।
মধ্যমগ্রাম ধর্ষণকাণ্ডের পরে পুলিশ অপরাধীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া সত্ত্বেও কংগ্রেস এবং সিপিএম যে ভাবে সরকারের সমালোচনা করছে, এ দিন তারও নিন্দা করেন মুকুলবাবু। তিনি বলেন, “জ্যোতিবাবু এবং বুদ্ধদেববাবু যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন, তখন একের পর এক ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা ঘটলেও পুলিশ তা ধামাচাপা দিয়েছে।” তাঁর সংযোজন, “যদিও আমাদের সরকার ব্যবস্থা নিচ্ছে, তবু এ ধরনের ঘটনাগুলি অত্যন্ত নিন্দনীয় এবং একটিও ঘটা উচিত নয়।” এই সমস্ত ঘটনার বিরুদ্ধে সচেতনতা বাড়াতে তৃণমূল কংগ্রেস পাড়ায় পাড়ায় সচেতনতা শিবির করে প্রচার চালাবে বলে জানান তিনি।
|