বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী
রাতে বাড়ি ফেরার পথে গুলিবিদ্ধ হলেন পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী। রবিবার পাণ্ডবেশ্বরে অজয় নদের ঘাটের কাছে ঘটনাটি ঘটে।
বীরভূমের খয়রাশোলে তৃণমূল নেতা অশোক ঘোষ খুনে অন্যতম অভিযুক্তকে গ্রেফতারের সময়ে পুলিশকে সাহায্য করায় তাঁর স্বামীকে খুনের চেষ্টা করা হল বলে অভিযোগ বৈদ্যনাথপুর পঞ্চায়েতের প্রধান লক্ষ্মী ঘোষের। পুলিশ জানায়, এক জনকে ধরা হয়েছে। আরও দু’জনের খোঁজ চলছে।
মাস ছয়েক আগে খয়রাশোলে খুন হন তৃণমূল নেতা অশোকবাবু। লক্ষ্মীদেবী জানান, সেই ঘটনার কিছু ক্ষণের মধ্যে মোটরবাইকে চেপে পালানোর সময়ে পাণ্ডবেশ্বরে ডিভিসি মোড়ের কাছে পুলিশের হাতে ধরা পড়ে আলামত আনসারি ও তার এক সঙ্গী। সেই সময়ে তাঁর স্বামী শান্তি ঘোষ পুলিশকে সহযোগিতা করেছিলেন।
ধৃত আমিন আনসারি।—নিজস্ব চিত্র।
লক্ষ্মীদেবীর অভিযোগ, জামিনে ছাড়া পেয়ে এসে আলামতই তার বাবা আমিন আনসারি ও কাকা লোকমান আনসারিকে সঙ্গে নিয়ে তাঁর স্বামীকে খুনের চেষ্টা করে।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, পৌষ-সংক্রান্তিতে পাণ্ডবেশ্বর ঘাটে মকরস্নানের জন্য পুণ্যার্থীদের ঢল নামে। রবিবার রাতে শান্তিবাবু পুণ্যার্থী শিবিরের আয়োজনের জন্য ঘাটে যান। অভিযোগ, কাজকর্ম সেরে তৃণমূল কর্মী দিলীপ ভাণ্ডারীর মোটরবাইকের পিছনে চেপে বাড়ি ফিরছিলেন শান্তিবাবু। ঘাটের অদূরেই গুলিবিদ্ধ হয়ে লুটিয়ে পড়েন। দিলীপবাবু অভিযোগ করেন, আলামত আনসারি মোটরবাইকে চেপে তাঁদের পাশ দিয়ে খানিকটা এগিয়ে গিয়ে শান্তিবাবুকে লক্ষ করে গুলি চালায়। তাতে তাঁরা দু’জনেই পড়ে গিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। আলামতেরা পালিয়ে য়ায়। এলাকার মানুষ তাঁদের উদ্ধার করে শান্তিবাবুকে পুলিশের সাহায্যে হাসপাতালে পাঠান। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, শান্তিবাবুকে প্রথমে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল, পরে পানাগড়ে একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর মেরুদণ্ডের কাছে গুলি লেগেছে।
লক্ষ্মীদেবী অভিযোগ করেন, মাস পাঁচেক জেলে থাকার পরে কয়েক দিন আগে ছাড়া পেয়ে ফিরে আলামত নানা রকম হুমকি দিচ্ছে। দিন পনেরো আগে তিনি স্বামীর মোটরবাইকের পিছনে বসে বাড়ি ফিরছিলেন। পাণ্ডবেশ্বর লেভেল-ক্রসিংএর কাছে রেললাইনে ট্রেন এসে পড়ায় তাঁরা আটকে পড়েন। ঠিক সে সময় আলামতের বাবা আমিন আনসারি তাঁদের কাছে এসে খুনের হুমকি দেন বলে অভিযোগ। লক্ষ্মীদেবীর কথায়, “তার পরে যে এই ঘটনা ঘটবে, ভাবতেও পারিনি।” তিনি আলামত, আমিন এবং লোকমানের নামে খুনের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছেন।
লোকমান ১৯৯৩ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত কেন্দ্রা পঞ্চায়েতের সদস্য ছিলেন। প্রথমে কংগ্রেস, পরে তৃণমূলে যোগ দেন তিনি। তৃণমূল সূত্রে খবর, দলের পাণ্ডবেশ্বর ব্লক সভাপতি নরেন চক্রবর্তী ও লোকমান আনসারির অনুগামীদের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। সোমবার নরেনবাবুর দাবি, “আলামতের বাবা ফরওয়ার্ড ব্লকের শ্রমিক সংগঠনের দীর্ঘ দিনের নেতা। বছর চার আগে বেআইনি অস্ত্র রাখার অভিযোগে ধরা পড়েছিলেন।” লোকমানের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তাঁর দাবি, “শান্তিবাবুর নিজের পকেটে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। কোনও ভাবে সেটির ট্রিগারে চাপ পড়ায় ফেটে গিয়ে এই বিপত্তি। আমাদের ফাঁসানো হচ্ছে। দলের উচ্চ নেতৃত্বকেও বিষয়টি জানিয়েছি। পুলিশ নিরপেক্ষ ভাবে তদন্ত করলেই সত্য সামনে আসবে।”
তৃণমূলের জেলা (শিল্পাঞ্চল) সভাপতি অপূর্ব মুখোপাধ্যায় বলেন, “পুলিশ তদন্ত করছে। কী ঘটেছে, তারাই খুঁজে বের করবে।” পুলিশ জানায়, আমিন আনসারিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকিদের খোঁজ চলছে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.