মেলায় দেখাতে নিয়ে যাওয়ার নাম করে আড়াই মাসের এক শিশুপুত্রকে নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক মহিলার বিরুদ্ধে। দিল্লিতে সেই মহিলার বাড়ি থেকে ওই শিশুকে উদ্ধার করে রবিবার তার মা শেফালি বিবির হাতে তুলে দিয়েছে পুলিশ। অভিযুক্ত মহিলা পলাতক। পুলিশ জেনেছে, দ্বিতীয় পক্ষের স্বামীর চাপেই ওই শিশুপুত্রকে চুরি করেন অভিযুক্ত মহিলা।
মুর্শিদাবাদের খড়গ্রামের বাসিন্দা শেফালি বিবির সঙ্গে অভিযুক্ত মহিলার আলাপ হয়েছিল বহরমপুর মাতৃসদনে। শেফালি বিবিকে সেই মহিলা তাঁর মোবাইল নম্বরও দিয়েছিলেন। ৫ জানুয়ারি ওই মহিলা শেফালিবিবির বাড়িতেও যান। কাছেই মোমিনপুরে মেলা বসেছে। সেখানে শিশুটিকে ঘুরিয়ে আনার নাম করে তিনি তাকে নিয়ে উধাও হয়ে যান। সারা দিন দু’জনের কারও খোঁজ না মেলার পরে শেফালি বিবি পরের দিন পুলিশে অভিযোগ জানান। ওই মোবাইল নম্বরের উপরে ভিত্তি করে পুলিশ ওই মহিলার খোঁজ পায়। জানা যায়, নওদা এলাকার বাসিন্দা ওই অভিযুক্ত মহিলার প্রথম পক্ষের বারো ও আট বছরের দু’টি ছেলে ও ছয় বছরের একটি মেয়ে রয়েছে। তিনটি সন্তান হওয়ার পরে ওই মহিলার বন্ধ্যাকরণ হয়। |
তার কিছু দিনের মধ্যেই প্রথম পক্ষের স্বামীর সঙ্গে তাঁর ছাড়াছাড়ি হয়ে যায়। ওই মহিলা এরপরে ফের বিয়ে করেন রেজিনগরের জয়নগর গ্রামের এক বাসিন্দাকে। বিয়ের পরে সন্তানের জন্য চাপ দিতে থাকেন দ্বিতীয় পক্ষের স্বামী। এমনকী সন্তান না হলে তাঁকে বিবাহ-বিচ্ছেদের হুমকিও দেন। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, সেই কারণেই শিশুচুরির পরিকল্পনা করেন অভিযুক্ত মহিলা।
তদন্তে জানা গিয়েছে, শেফালি বিবির শিশুটিকে নিয়ে দিল্লি চলে যান ওই মহিলা। পুলিশ তাঁর মা-র কাছ থেকে দিল্লির ঠিকানা পায়। কান্দি মহকুমার পুলিশ আধিকারিক সন্দীপ সেন বলেন, “ওই শিশুটির একটি ছবি শেফালিবিবি আমাদের দিয়েছিলেন। তা দেখেই শিশুটিকে শনাক্ত করা গিয়েছে। তবে এর পরেও যদি শিশুটির পরিচয় নিয়ে কোনও সংশয় তৈরি হয়, তা হলে যা পরীক্ষা করার, তা করা হবে।” জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “ওই মহিলাকে ধরার চেষ্টা করা হচ্ছে।” সপ্তাহভর অপেক্ষার পর ছেলেকে ফিরে পেয়ে খুশি শেফালি বিবি বলেন, “সাত দিন ভাল করে খাইনি। ভাল মানুষ সেজে ওই মহিলা যে এমন কাজ করবেন, তা ভাবতেও পারিনি।” শিশুটির বাবা জসমিন মামিন ছেলেকে ফিরে পেয়ে থানায় হাজির সমস্ত লোককে মিষ্টি খাওয়াতে ভোলেননি। |