|
|
|
|
বিবেকানন্দ-স্মরণেও কাজিয়া |
নিজস্ব সংবাদদাতা • খড়্গপুর |
বিবেকানন্দের জন্ম-সার্ধশতবর্ষের অনুষ্ঠানেও রাজনৈতিক সৌজন্যের ছবি দেখা গেল না রেলশহরে। রবিবার খড়্গপুরের কৌশল্যা মোড়ে কংগ্রেস পরিচালিত পুরসভা যে অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল, সেখানে বিরোধী তৃণমূলের একজন কাউন্সিলরও উপস্থিত ছিলেন না। বরং পুরসভার অনুষ্ঠান শুরুর আগেই তৃণমূল কাউন্সিলর তথা প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল বিবেকানন্দের মূর্তিতে মাল্যদান করেন। তাঁর অভিযোগ, বোর্ড-মিটিং না করে সরকারি অনুষ্ঠান হয় না। এ ক্ষেত্রে তাই হয়েছে। তবে পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডের দাবি, পুর-পারিষদদের বৈঠক ডেকেই অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছিল। |
|
বিবেকানন্দের মূর্তিতে মাল্যদান করছেন খড়্গপুরের পুরপ্রধান। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ। |
২০১০ সালে কংগ্রেসের সমর্থন নিয়ে খড়্গপুরে পুরবোর্ড গড়েছিল তৃণমূল। পুরপ্রধান হয়েছিলেন জহরবাবু। তবে এক বছরের মধ্যে সমর্থন প্রত্যাহার করে নে কংগ্রেস। ২০১২ সালের ১৪ অগস্ট কংগ্রেস অনাস্থা আনে। সেই অনাস্থা নিয়ে অনেক জটিলতাও হয়। শেষমেশ হাইকোর্টের নির্দেশে গত বছর ৫ অগস্ট অনাস্থা নিয়ে ভোটাভুটিতে ১৬-১৪ ব্যবধানে তৃণমূলকে হারিয়ে পুরসভা দখল করে কংগ্রেস। তারপর থেকে দুই শিবিরে বিরোধিতা রয়েছে। কিন্তু মনীষীদের জন্মদিনেও তা প্রকাশ্যে আসায় শহরবাসী ক্ষুণ্ণ। খড়্গপুরের সাংস্কৃতিক সংস্থা ‘শঙ্খমালা’র সম্পাদক কৃশানু আচার্য বলেন, “রাজনীতিতে বিরোধিতা থাকবে। তবে একজন মনীষীর স্মরণানুষ্ঠানে রাজনীতি কাম্য নয়।”
প্রতি বছরই কৌশল্যা মোড়ে বিবেকানন্দের জন্মদিনে তাঁর মূর্তিতে মাল্যদান করে স্থানীয় ‘বিবেকানন্দ শতবর্ষ উত্সব কমিটি’। এ বছর পুরসভা ওই কমিটির সঙ্গে যৌথ ভাবে বিবেকানন্দের জন্মসার্ধশতবর্ষ উদ্যাপন উত্সবের আয়োজন করে। সকালে সেই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মহকুমাশাসক আর বিমলা, পুরপ্রধান রবিশঙ্কর পাণ্ডে, উপ-পুরপ্রধান চিত্তরঞ্জন মণ্ডল প্রমুখ। তবে তৃণমূলের কোনও কাউন্সিলর আসেননি। রবিশঙ্করবাবু বলেন, “এই অনুষ্ঠানের জন্য সব কাউন্সিলরকেই পুরসভার পক্ষ থেকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। ওঁরা কেন আসেননি তা ওঁরাই ভাল বলতে পারবেন।”
পুরসভার অনুষ্ঠান শুরুর আগেই প্রাক্তন পুরপ্রধান জহরলাল পাল ও কয়েকজন তৃণমূল কাউন্সিলর কৌশল্যা মোড়ে বিবেকানন্দের মূর্তিতে মালা দেন। এ প্রসঙ্গে জহরবাবুর বক্তব্য, “আমরা প্রতিবছরই ওই মূর্তিতে দলীয় উদ্যোগে মাল্যদান করি। এ বছরও করেছি। তবে পুরসভার সরকারি অনুষ্ঠান থাকলে তো বোর্ড মিটিং হবে। আমাদের ডেকে সেই বোর্ড মিটিং হয়নি। শুধু একটা চিঠি দিলেই তো হয় না।” অভিযোগ মানতে নারাজ পুরপ্রধান। তাঁর দাবি, “আমরা অনুষ্ঠানের ছ’দিন আগে পুর-পারিষদের বৈঠক করেছিলাম। এক্সিকিউটিভ অফিসার সেই বৈঠক ডেকেছিলেন। কমিটিতে বিজেপি, সিপিএম ও তৃণমূলের বিরোধী দলনেতাকে রাখা হয়। সেই বৈঠকের সিদ্ধান্তপত্র পাঠানো হয়েছে সকলকে। আমার মনে হয় ওঁরা (তৃণমূল কাউন্সিলরা) সৌজন্য হারিয়ে ফেলেছেন।” |
|
|
|
|
|