নতুন শিক্ষাবর্ষ চালু হতে আর ছ’মাস বাকি। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু ঘোষণা করেছিলেন, নতুন শিক্ষাবর্ষেই সিঙ্গুর কলেজের নতুন ভবনে ক্লাস শুরু হবে। কিন্তু জমি মেলা সত্ত্বেও ভবন তৈরির কাজ এখনও শুরুই হল না। দিন কয়েক আগে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়। ফলে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভবন তৈরির পরে সেখানে ক্লাস শুরু করা নিয়ে সংশয়ে কর্তৃপক্ষ-পড়ুয়ারা।
সিঙ্গুরের বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্যের আশ্বাস, “খুব তাড়াতাড়ি কলেজ তৈরি হয়ে যাবে।” রাজ্যের কৃষি প্রতিমন্ত্রী তথা হরিপালের বিধায়ক বেচারাম মান্নাও বলেন, “নতুন শিক্ষাবর্ষে নতুন কলেজেই ক্লাস করবেন পড়ুয়ারা। রাস্তা না থাকার জন্যই সমস্যা হচ্ছিল। রাস্তা তৈরি হলেই কলেজ তৈরির কাজ শুরু হবে।” |
আটটি ঘর নিয়ে এখানেই চলছে কলেজ। ছবি: দীপঙ্কর দে। |
এলাকায় কোনও কলেজ না থাকায় দীর্ঘদিন ধরে সিঙ্গুরের পড়ুয়ারা পড়তে যান শ্রীরামপুর বা হরিপাল কলেজে। গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সিঙ্গুরে এসে ওই কলেজ তৈরি ও নতুন শিক্ষাবর্ষ থেকে নতুন কলেজ ভবনে ক্লাস শুরুর কথা ঘোষণা করেন। তাঁর নির্দেশ মতো ৬ সেপ্টেম্বর থেকে সিঙ্গুর মহামায়া উচ্চ বিদ্যালয়ের আটটি ঘর নিয়ে চালু হয় কলেজ। শুরু হয় বাংলা, ইংরেজি, ইতিহাস, রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং দর্শনের সাম্মানিক স্নাতক স্তরের পঠনপাঠন। ১২৫টি আসনের ৮২টিতে পড়ুয়ারা ভর্তি হন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ-সহ ছ’জন স্থায়ী শিক্ষক নিযুক্ত হন। কয়েক জন স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীও সেখানে পড়াতে শুরু করেন। তবে বেহাল পরিকাঠামোয় জেরবার শিক্ষকেরা।
সিঙ্গুরের বারুইপাড়া পলতাগড় পঞ্চায়েতের ঘনশ্যামপুরে শিক্ষা দফতরের জমিতে ওই কলেজ হওয়ার কথা। দিন কয়েক আগে ওই জমির সামনের দু’টি রাস্তা তৈরির কাজ শুরু হয়। জুলাই মাস থেকে চালু হবে নতুন শিক্ষাবর্ষ। কিন্তু তার আগে ওই কলেজ ভবন তৈরি ও অন্যান্য ব্যবস্থা সম্পন্ন করা যাবে না বলেই মনে করছেন পড়ুয়াদের অনেকে। তাঁদের বক্তব্য, “ছ’মাসের মধ্যে কি কলেজ ভবন তৈরি করা সম্ভব?” একই সংশয় শিক্ষকদের। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জয়ন্ত চক্রবর্তী বলেন, “দ্রুত কলেজ ভবন তৈরির জন্য প্রশাসনের কর্তাদের জানিয়েছি।”
ওই স্কুলে জায়গার অভাব, নিজস্ব শৌচাগার না থাকা-সহ নানা সমস্যার কথা তুলেছেন কলেজের শিক্ষকেরা। তা মেনে নিয়েছেন বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের কলেজ সমূহের পরিদর্শক দেবকুমার পাঁজা। সিঙ্গুর কলেজ ওই বিশ্ববিদ্যালয়েরই অধীন। দেবকুমারবাবু বলেন, “নতুন বছরে ক্লাস শুরুর জন্যে ওই স্কুলে আরও চার-পাঁচটি ঘর দরকার। পরিকাঠামো নিয়ে কোনও অভিযোগ এলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সমাধানের জন্য ব্যবস্থা করা হবে।” সমস্যা মেটানোর চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন সিঙ্গুরের বিধায়ক। |