|
|
|
|
দৌত্য মালিহাবাদির |
চাই রাজ্যসভায় সংখ্যালঘু মুখ, চর্চা বামে
সন্দীপন চক্রবর্তী • কলকাতা |
নরেন্দ্র মোদীর হাত ধরে সাম্প্রদায়িকতার বিপদের উত্থানের কথা বলে প্রচার তুঙ্গে। বিজেপি-র সঙ্গে তৃণমূলের আঁতাঁতের অভিযোগও প্রচারের হাতিয়ার। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে এই লড়াইয়ের মরসুমে রাজ্যসভায় কেন সংখ্যালঘু প্রতিনিধি থাকবে না, সেই প্রশ্নে এ বার চর্চা শুরু হয়েছে বাম শিবিরে।
লোকসভা ভোটে এ বার বিজেপি এবং সাম্প্রদায়িকতার বিপদের মোকাবিলাকে অন্যতম প্রধান লক্ষ্য ধরে ইতিমধ্যেই সরব বাম নেতৃত্ব। কিন্তু তার আগেই এ রাজ্যে রয়েছে রাজ্যসভার নির্বাচন। এপ্রিলের গোড়ায় এ রাজ্য থেকে খালি হবে রাজ্যসভার পাঁচটি আসন। যার জন্য সম্ভবত নির্বাচন হবে মার্চের শেষে। এবং যে সব সাংসদের মেয়াদ আর মাসদুয়েকের মধ্যে ফুরোবে, তার মধ্যে আছেন গত বারের নির্দল প্রার্থী সৈয়দ আহমেদ মালিহাবাদিও। সেই প্রেক্ষিতেই বাম শিবিরের মধ্যে দাবি উঠতে শুরু করেছে, বিজেপি-র বিরুদ্ধে লড়াইয়ের বার্তা আরও জোরালো করার জন্য সংখ্যালঘু কাউকে রাজ্যসভার টিকিট দেওয়া হোক। আলিমুদ্দিন অবশ্য এই বিষয়ে এখনও সিদ্ধান্তে পৌঁছতে পারেনি।
রাজ্য বিধানসভায় এখন যে শিবিরের যা শক্তি, সেই অঙ্ক অনুযায়ী বামফ্রন্ট আসন্ন রাজ্যসভার নির্বাচনে এক জন প্রার্থীকেই জেতাতে পারবে। ছ’বছর আগে ধর্মনিরপেক্ষ মুখ হিসাবে মালিহাবাদি ছিলেন সর্বসম্মত প্রার্থী। বামেদের পাশাপাশি কংগ্রেসও তাঁকে ভোট দিয়েছিল। এ বার সাংসদ-পদের মেয়াদ ফুরনোর মুখে স্বয়ং মালিহাবাদি বাম শিবিরে যোগাযোগ শুরু করেছেন বলে ফ্রন্ট সূত্রের খবর। প্রবীণ কিছু বাম নেতার সঙ্গে দেখা করে তাঁর তরফে বলা হচ্ছে, গত বার ধর্মনিরপেক্ষ প্রার্থী হিসাবে যাঁকে তুলে ধরা হল, এখনকার রাজনৈতিক আবহে সেই পরিচয় তো আরও প্রাসঙ্গিক! এই বক্তব্যের মধ্যে যুক্তি খুঁজে পাচ্ছেন শরিক নেতৃত্বের একাংশ। সিপিএম নেতৃত্বের সঙ্গে এই নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার সময় এই যুক্তির কথাই তাঁরা বলবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মালিহাবাদির ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে অবশ্য বলা হচ্ছে, তিনি নেহাতই সৌজন্য সাক্ষাৎ সেরেছেন। তবে ফ্রন্টের এক বর্ষীয়ান নেতার কথায়, “এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ থেকে আর তো কোনও সংখ্যালঘু সাংসদ রাজ্যসভায় নেই। মোদীর সঙ্গে যখন আমরা লড়ছি, তৃণমূলের সঙ্গে বিজেপি-র বোঝাপড়ার কথা বলছি, সেই সময় সংখ্যালঘু কোনও প্রতিনিধিকে রাজ্যসভায় পাঠালে ভাল বার্তা যাবে।” মালিহাবাদিই ফের মনোনীত হলে ফ্রন্টের এই অংশের আপত্তি নেই। আবার আলিমুদ্দিন যদি বাম শিবির থেকেই সংখ্যালঘু কাউকে বেছে নেয়, তাতেও সমস্যা নেই। প্রসঙ্গত, এ রাজ্য থেকে সিপিএম সাংসদ মইনুল হাসানের রাজ্যসভার মেয়াদ আগেই শেষ হয়েছে।
শুধু সংখ্যালঘু নিয়ে টানাপোড়েনই নয়, এ বারের পাঁচ সাংসদের মেয়াদ ফুরনোর সঙ্গে সঙ্গে এ রাজ্য থেকে রাজ্যসভায় বাম শরিকদের প্রতিনিধিত্বও শেষ হয়ে যাবে। সিপিআই এবং আরএসপি-র এখন সংসদের উচ্চ কক্ষে কেউ নেই বাংলা থেকে। এ বার ফুরোচ্ছে ফরওয়ার্ড ব্লক সাংসদ বরুণ মুখোপাধ্যায়ের মেয়াদও।
শরিকেরা অবশ্য ধরেই রেখেছে, কেবল এক জন জিততে পারবেন, এমন অবস্থায় তাদের ভাগ্যে শিকে ছেঁড়ার সম্ভাবনা নেই! আর উল্টো দিকে চাপ বাড়ছে সিপিএমের উপরে! দলের কেন্দ্রীয় কমিটির এক সদস্যের কথায়, “এক জনই যখন নিশ্চিত ভাবে জয়ের জায়গায় থাকবেন, তখন সব চাহিদা পূরণ করা স্বাভাবিক ভাবেই সম্ভব হবে না! দল এবং বামফ্রন্টে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত হবে।” |
|
|
|
|
|