কুয়াশার দিল্লিতে সমস্ত বিমানে
প্রশিক্ষিত পাইলট চায় ডিজিসিএ
রাজধানীর রানওয়ে ঘন কুয়াশায় ঢাকা পড়ে প্রতি শীতেই। যন্ত্রের সাহায্যে পথ দেখিয়ে নামিয়ে আনা হয় বিমানকে। তার জন্য রয়েছে ইন্সট্রুমেন্টাল ল্যান্ডিং সিস্টেম (আইএলএস)। কিন্তু, বিমানবন্দরে শুধু সেই যন্ত্র বসালেই হবে না। যে বিমান নামছে, তার ভিতরেও সেই যন্ত্রের নির্দেশ মানার মতো কলকব্জা থাকতে হবে। ককপিটে বসা দুই পাইলটেরও সেই সংক্রান্ত প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। দিল্লি-সহ দেশের বড় কয়েকটি বিমানন্দরে এই আইএলএস ব্যবস্থা আছে। এক শহর থেকে অন্য শহরে নিয়মিত উড়ে যায় যে বিমানগুলি, সেগুলির ৯০ শতাংশের আইএলএস-এর উপযোগী কলকব্জাও রয়েছে। সমস্যা শুধু পাইলটদের নিয়ে। তাঁদের সকলের সেই প্রশিক্ষণ নেই। ফলে ভুগতে হচ্ছে যাত্রীদের।
দেশের আকাশে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ডিরেক্টরেট জেনারেল অফ সিভিল অ্যাভিয়েশন (ডিজিসিএ) তাই এ নিয়ে কড়া বার্তা দিয়েছে বিমানসংস্থাগুলিকে। ডিজিসিএ-এর কর্তা হিসেবে সদ্য দায়িত্ব নেওয়া প্রভাত কুমার সম্প্রতি এ নিয়ে বৈঠক করেছেন বিমানসংস্থাগুলির সঙ্গে। জানিয়েছেন, কুয়াশার সময়ে যে সব পাইলট যাত্রীবিমান নিয়ে দিল্লি থেকে ওঠানামা করবেন, তাঁদের সকলেরই ওই প্রশিক্ষণ থাকতে হবে। না থাকলে সেই বিমানসংস্থার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এর জন্য একটি কমিটিও গঠিত হয়েছে। রিপোর্ট চেয়ে পাঠানো হয়েছে সেই কমিটির কাছ থেকে।
এয়ার ইন্ডিয়া সূত্রের খবর, তাদের মোট পাইলটের সংখ্যা ৭০০। তাঁদের মধ্যে ৪২০ জনের কুয়াশায় বিমান নামানোর মতো প্রশিক্ষণ রয়েছে। জেট জানাচ্ছে, প্রায় সমস্ত বড় বিমানের পাইলটদের ওই প্রশিক্ষণ রয়েছে। নেই শুধু ছোট বিমানগুলির। কিন্তু, সেগুলিও দিল্লি থেকে ওঠানামা করে। অন্য বিমানসংস্থাগুলির অবস্থা আরও খারাপ।
দেখা যাচ্ছে, কুয়াশার মধ্যে দিল্লিতে নামার মতো যন্ত্র বিমানবন্দরে এবং বিমানে থাকলেও অনেক ক্ষেত্রেই সেই যন্ত্রের সাহায্য নিয়ে বিমান নামানোর মতো প্রশিক্ষণ না থাকায় চালকরা বিমান নামাতে পারেন না। মুখ ঘুরিয়ে অন্যত্র চলে যেতে হয় অনেক বিমানকে। সময়ে দিল্লি পৌঁছতে না পেরে বিপাকে পড়েন বহু যাত্রী, আবার রাজধানী থেকে অন্য শহরে যেতে চাওয়া মানুষ আটকে পড়েন। লাউঞ্জে প্রচুর যাত্রী জড়ো হলে চাপ পড়ে বিমানবন্দরের উপরে।
এটা ঘটনা যে ভারতের বহু বিমানবন্দরে বিমানকে নামাতে সাহায্য করার মতো যন্ত্র নেই। সে ক্ষেত্রে রানওয়ের ৫০০০ মিটার উপর থেকে বিমানবন্দরকে দেখা গেলে তবেই নেমে আসতে পারেন পাইলট। কিছু বিমানবন্দরে কয়েকটি যন্ত্র রয়েছে, যার সাহায্যে রানওয়ের ১৫০০ মিটার উপর থেকে দেখা গেলেও নেমে আসা সম্ভব হয়। সাধারণত বিমান পরিবহণের ক্ষেত্রে একেই দৃশ্যমানতা বলা হয়। এর পরের ধাপই হচ্ছে আইএলএস।
আইএলএস-এরও বিভিন্ন ভাগ রয়েছে। মুম্বই, হায়দরাবাদ, বেঙ্গালুরুর মতো বিমানবন্দর, যেখানে কুয়াশা কম, সেখানে ক্যাটাগরি-১ আইএলএস বসানো রয়েছে। এ ক্ষেত্রে ৮০০ মিটার দৃশ্যমানতা হলেই নামতে পারে বিমান। তার সঙ্গে রানওয়ে ভিজুয়াল রেঞ্জ নামে একটি যন্ত্র বিমানবন্দরে বসানো থাকলে ৫৫০ মিটার পর্যন্ত দেখা গেলেও বিমান নামানো যায়।
যে শহরে কুয়াশার প্রকোপ তুলনায় বেশি, সেই কলকাতা, লখনউ এবং অমৃতসরে বসানো রয়েছে ক্যাট-২ আইএলএস। এ ক্ষেত্রে ৩৫০ মিটার উপর থেকে রানওয়ে দেখা গেলেই নামতে পারে বিমান।
দিল্লিতে রয়েছে ক্যাট-৩ (এ এবং বি) আইএলএস। দৃশ্যমানতা যদি ৫০ মিটারও হয়ে যায়, তা হলেও নামতে পারে বিমান। সেই সুবিধার পূর্ণ সদ্ব্যবহারই লক্ষ্য এখন জিডিসিএ-র।
আইএলএস-এর সর্বোচ্চ হচ্ছে ক্যাট-৩সি। বলা হয়, দৃশ্যমানতা শূন্য হলেও সেই যন্ত্রের সাহায্যে নেমে আসতে পারে বিমান। ভারতের কোনও বিমানবন্দরে সেই যন্ত্র নেই। লন্ডন, হিথরো-সহ বিশ্বের কয়েকটি মাত্র বিমানবন্দরে তা রয়েছে ।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.