|
|
|
|
স্বামীজির আদর্শ তুলে মোদীকে নিশানা প্রধানমন্ত্রীর
নিজস্ব প্রতিবেদন
১২ জানুয়ারি |
বিবেকানন্দের জন্মদিন উদ্যাপনে প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং ইউপিএ সভানেত্রী সনিয়া গাঁধী জোর দিলেন ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে। আর একই সঙ্গে সেই সুযোগে বিজেপি এবং তাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীকে আক্রমণ করলেন বিবেকানন্দ প্রসঙ্গ বলতে গিয়ে।
সত্যিকারের ধর্মে ঘৃণা বা বিভাজনের কোনও ভিত্তি নেই জানালেন প্রধানমন্ত্রী। বিবেকানন্দের আদর্শ থেকে তিনি অনুপ্রেরণা পান। তাঁর কথায়, “ঘৃণা বা বিভাজন নয়। সব ধর্মের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও সহনশীলতাই একমাত্র পথ। বিবেকানন্দের এই বার্তা আমাদের দেশের ক্ষেত্রে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।”
লোকসভা ভোটের প্রচারে নানা জায়গায় নরেন্দ্র মোদীকেও বলতে শোনা যাচ্ছে বিবেকানন্দ সম্পর্কে। বিশেষ করে যুবসমাজের কাছে পৌঁছতে বিবেকানন্দের আদর্শের কথাই বলেন মোদী। শুধু তিনি বলছেন এমনটা নয়, দলও তাঁকে সে ভাবেই তুলে ধরছে। বিবেকানন্দ যেমন দেশের যুবসমাজকে একজোট করতে পেরেছিলেন, মোদীও যেন সেই কাজটাই করছেন বিজেপি তাদের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থীর গ্রহণযোগ্যতা বাড়িয়ে তুলতে ব্যবহার করছে এই অস্ত্রই। |
|
স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম সার্ধশতবার্ষিকীর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে সনিয়া
গাঁধী এবং মনমোহন সিংহ। রবিবার দিল্লিতে। ছবি: পিটিআই। |
বিজেপি সভাপতি রাজনাথ সিংহ তো প্রকাশ্যেই বলছেন, “বিবেকানন্দ যে ভাবে নতুন দেশ গড়তে চেয়েছিলেন, সেই স্বপ্ন এখন দেখাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদী।” বিজেপি-র দাবি, এই প্রচারে তাঁরা যথেষ্ট সাড়া পাচ্ছেন। আর সেই কারণেই মোদীর প্রতি ইদানীং যুবসমাজ অনেকটাই ঝুঁকছে। তাই মোদীর বিরুদ্ধে বার্তা দিতেই বিবেকানন্দের জন্মদিনের মঞ্চকে এ দিন ব্যবহার করেছেন মনমোহন-সনিয়া।
সনিয়া বলেন, বিবেকানন্দ যুবসমাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলতেন। তাই দেশের তরুণ-তরুণীদের শিক্ষা এবং স্বনির্ভর হওয়ার দিকে জোর দিতে হবে। তাঁর মন্তব্য, “ধর্মান্ধতা আজ আমাদের দেশের শান্তি বিঘ্নিত করছে।
তাই স্বামীজির বাণী আজ আরও বেশি করে প্রাসঙ্গিক। দেশের যুবসমাজ বিবেকানন্দের আদর্শ মনে রেখে ধর্মান্ধতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামুক।” এর আগেও কংগ্রেস মোদী এবং বিজেপিকে আক্রমণ করেছে তাদের সাম্প্রদায়িকতার এবং বিভাজনের রাজনীতির প্রসঙ্গ তুলে। এ দিনও নাম না করেই মোদীকে ঠেকাতে বারবার বিবেকানন্দের আদর্শের মাধ্যমে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে শান্তি ও ঐক্য বজার রাখার কথা মনে করিয়েছেন মনমোহন-সনিয়া। এর পাশাপাশি তাঁদের বক্তব্যে গুরুত্ব দিয়েছেন যুবসমাজকেও।
১৮৯৩ সালে শিকাগো ধর্ম সম্মেলনে বিবেকানন্দের বক্তৃতার
কথা তোলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, “স্বামীজি জানিয়েছিলেন বিচ্ছিন্নতাবাদ, ধর্মান্ধতা, বৈষম্য বহু দিন আমাদের সুন্দর পৃথিবীকে গ্রাস করে রেখেছে। তাই হিংসা তৈরি হয়েছে বিশ্বে। হয়েছে রক্তপাত। সভ্যতা ধ্বংস হয়েছে। সেই ভয়ঙ্কর দৈত্যরা না থাকলে পৃথিবীটা হয়তো আরও উন্নত হতে পারত।”
যুবসমাজের প্রতি বার্তা দিয়ে সনিয়া আবার বলেন, “সারা বিশ্বে জনসংখ্যার একটা বড় অংশ বার্ধক্যের দিকে এগোচ্ছে। কিন্তু আমাদের দেশের মুখ এখন তারুণ্যে উজ্জ্বল। তাদের নিয়ে আমাদের অনেক আশা।” এই যুবসমাজকে মোদীর প্রভাব থেকে মুক্ত করতে সনিয়া
চান, তাদের শিক্ষায় গুরুত্ব দিতে, তাঁদের আশা পূরণ করতে। সভানেত্রীর মন্তব্য, “তাঁদের আশা ব্যর্থ হলে চলবে না, আমরা সেটা হতে দেব না।” |
|
|
|
|
|