রেল লাইনের দু’পাড়ের গ্রামগুলিতে বাস করেন প্রায় হাজার তিনেক মানুষ। প্রতিদিনই নানা প্রয়োজনে তাঁদের এক পার থেকে আরেক পারে যাতায়াত লেগেই থাকে। অথচ দু’প্রান্তের একমাত্র যোগাযোগকারী রাস্তাটি ব্যবহার করতে অন্তত চার কিলোমিটার পথ উজিয়ে যেতে হয় তাঁদের। ফলে সময় বাঁচাতে রেল লাইন টপকেই চলাচল করেন গ্রামবাসীরা। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের কাছে বারবার আবেদন জানিয়েও লাভ হয়নি। এর জেরেই প্রায়শই দুর্ঘটনা, এমনকী মৃত্যুও হয় বলে জানান তাঁরা।
আসানসোল পুরসভার ৫০ নম্বর ওয়ার্ডের বরাচক রেল স্টেশন লাগোয়া দু’প্রান্তের প্রায় সাতটি গ্রামের বাসিন্দারা বহু বছর ধরে এই সমস্যায় ভুগছেন। তাঁদের অভিযোগ, বহুবার এ বিষয়ে রেল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় পুর প্রশাসনকে জানিয়েও আশ্বাস ছাড়া কিছুই মেলেনি। এলাকায় গিয়ে দেখা গিয়েছে, বরাচক, তেলিপাড়া, বোরিংডাঙা, ময়লাধাওড়া, বয়লাধাওড়া, ফতেপুর-এই সমস্ত গ্রামগুলিতে প্রায় তিন হাজার বাসিন্দা বসবাস করেন। গ্রামবাসীদের জিজ্ঞেস করে জানা গেল, বরাচক রেল স্টেশনের ১ ও ২ নম্বর প্ল্যাটফর্মের সংযোগে একটি ফুটওভার ব্রিজ রয়েছে। সেটি দিয়ে তাঁরা ২ নম্বর প্লাটফর্মে যান। |
তারপরে সেখান থেকে লাইন টপকে চলে যান পাশের গ্রামে। তাঁরাই জানান, সমস্যা হয় যখন চার নম্বর ডাউন লাইনে ট্রেন দাঁড়িয়ে থাকে। তখন বাসিন্দারা হয় ট্রেনের তলা দিয়ে পারাপার করেন, অথবা দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে বাধ্য হন। স্থানীয় বাসিন্দা ভক্তিপদ পাল বলেন, “আমাদের নানা কাজে নিয়মিত লাইন পারাপার করেই চলাফেরা করতে হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরাও সেই ভাবেই যাতায়াত করে। কেউ আমাদের কথা ভাবছেন না।” আরেক বাসিন্দা তারা কর্মকার বলেন, “ঝুঁকি নিয়ে চলাফেরা করতে হয় বলে এখানে মাঝে মাঝে দুর্ঘটনা ঘটে। মানুষও মারা যাচ্ছেন॥ পুরসভার মেয়র পারিষদ তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ঘটক। তাঁরাও রেল কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে সচেষ্ট হবার আবেদন করেন। অভিজিৎবাবু বলেন, “এখানে রাস্তা বা ফুটওভার ব্রিজ তৈরি করার জন্য পুরসভার সাহায্য দরকার হলে আমরা করব।”
রেল সূত্রে জানা গিয়েছে, আজ, সোমবার আসানসোল ডিভিসনের এডিআরএম বিষয়টি নিয়ে ওই এলাকার বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। রেল সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, যে এখনই ওখানে রাস্তা বা ফুটওভার ব্রিজ তৈরির কোনও পরিকল্পনা রেলের নেই। কারণ, ফ্রেট করিডরের জন্য আরও দু’টি লাইন পাতার পরিকল্পনা রয়েছে। |