শহরের রাস্তা থেকে চুরি মোটরবাইক-গাড়ি, আতঙ্ক
রাস্তার পাশে মোটরবাইক রেখে কাজ সারতে অফিস-কাছারিতে ঢুকেছেন আরোহী। ফিরে দেখেন, বাহন উধাও।
রাস্তায় চাবি দিয়ে গাড়ি রেখে ঘুমোতে গিয়েছেন চালক। সকালে ফিরে দেখেন, গাড়ি নেই।
দুর্গাপুর শহরে এমন ঘটনা ঘটছে প্রায়শয়ই। পুলিশের হিসেবই বলছে, মাসে গড়ে ১০টি করে মোটরবাইক ও একটি করে চার চাকা চুরি যাচ্ছে শহরে। অধিকাংশ চুরিরই কিনারা হয়নি। ফলে, বাড়ছে আতঙ্ক। পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব অবশ্য জানান, ইতিমধ্যে গাড়ি চুরি চক্রের এক পাণ্ডাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বাঁকুড়া থেকে। সম্প্রতি একটি ডাকাতির ঘটনায় ধরা পড়ে তিন জন। মোটরবাইক-গাড়ি চুরিতে তাদের কোনও যোগ আছে কি না দেখা হচ্ছে। দ্রুত দুষ্কৃতীদের পাকড়াও করা হবে বলে আশ্বাস তাঁর।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়ছে, ২০১২ সালে দুর্গাপুরে প্রায় ১৪০টি মোটরবাইক চুরির অভিযোগ জমা পড়েছিল। সেই তুলনায় সদ্য শেষ হওয়া ২০১৩ অনেকটা স্বস্তি দিয়েছে পুলিশকে। তা সত্ত্বেও যা পরিস্থিতি, তাতে দুশ্চিন্তা কাটছে না বলে পুলিশেরই একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অক্টোবর ও নভেম্বরে দুর্গাপুর শহর এলাকায় মোট ২২টি মোটরবাইক চুরি যায়। তবে বেশ কয়েক জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করার ফলেই চুরির হার নেমে এসেছে বলে পুলিশের দাবি।
গত ১৭ ডিসেম্বর রাতে সিটি সেন্টার থেকে দু’টি গাড়ি চুরি হয়ে যায়। রানিগঞ্জের বাসিন্দা লালবিহারী রায় পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগে জানান, তাঁর গাড়িটি সিটি সেন্টারের অম্বুজা এলাকায় একটি বেসরকারি সংস্থায় ভাড়া খাটে। সকালে দেখা যায়, গাড়িটি উধাও। বাঁকুড়ার বাসিন্দা অশোক মালাকার পুলিশকে জানান, রাতে তিনি বাঁকুড়া থেকে গাড়ি নিয়ে সিটি সেন্টারে আসেন। ডেলি মার্কেটের কাছে গাড়ি রেখে তিনি ঘুমোতে যান। সকালে দেখেন, গাড়ি নেই। জনবহুল সিটি সেন্টার থেকে একই রাতে এ ভাবে পরপর দু’টি গাড়ি চুরির খবরে আতঙ্ক ছড়ায় এলাকায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রাতে টহলদার পুলিশের গাড়ি ঘুরে বেড়ায়। তা সত্ত্বেও এমন ঘটনা ঘটছে।
সিটি সেন্টারের নন কোম্পানি এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ চট্টরাজ বলেন, “আমার বাড়িতে গ্যারাজ নেই। উঠোনে ফাঁকা জায়গায় গাড়ি রাখি। চোরের ভয়ে রাতের ঘুম উড়ে গিয়েছে।” বেনাচিতির সারদা পল্লির বাসিন্দা সুদীপ উপাধ্যায় বলেন, “বাড়ির ভিতরে রাখার জায়গা নেই। রাতে বাইরে মোটর-সাইকেল রাখি। আতঙ্কে থাকি।” বেনাচিতির সারদাপল্লির বাসিন্দা সুদীপ উপাধ্যায় বলেন, “বাড়ির ভিতরে রাখার জায়গা নেই। রাতে বাইরে মোটরবাইক রাখি। ভয়ে-ভয়ে রয়েছি।”
পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, টহল আগের থেকে বাড়ানো হয়েছে। কোকওভেন থানার পুলিশ বাঁকুড়ার বেলিয়াতোড়ের বাঁধকানা থেকে দিন কয়েক আগে রাজু ক্যাওড়া নামে এক জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের দাবি, দুর্গাপুর শহরের বিভিন্ন জায়গা থেকে মোটরবাইক চুরির সঙ্গে যুক্ত রাজু জেরায় জানিয়েছে, সে ‘রিসিভার’ এবং ‘লিফ্টার’-এর কাজ করে থাকে। পশ্চিম মেদিনীপুরের গড়বেতা, ফুলবেদিয়া, বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাটি, বীরভূম, মুর্শিদাবাদের বেশ কিছু জায়গা, ফরাক্কা প্রভৃতি এলাকায় সে মোটরবাইক পাচার করে থাকে বলে ধৃত জানিয়েছে, দাবি পুলিশের। ইতিমধ্যে তাকে জেরা করে শ্যামপুর এলাকা থেকে দু’টি চোরাই মোটরবাইক উদ্ধার করা হয়েছে। এক পুলিশ আধিকারিক বলেন, “ধৃতকে নিয়ে অভিযান চালিয়ে মোটরবাইকগুলি উদ্ধারের চেষ্টা করা হবে।”
মাস দেড়েক আগে ধান্ডাবাদের একটি ডাকাতির ঘটনায় ২৪ ডিসেম্বর রাতে পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করে। পুলিশের সন্দেহ, ধৃতেরা আগেও শহরে নানা দুষ্কর্ম করেছে। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “শহরে ইদানীং ঘটে যাওয়া মোটরবাইক এবং গাড়ি চুরির ঘটনায় এই ধৃতদের যোগাযোগের সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।” পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ধৃতেরা সরাসরি যুক্ত না থাকলেও তাদের সঙ্গে গাড়ি চুরি চক্রের যোগ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। পুলিশের আশ্বাস, দ্রুত সব গাড়ি চুরির কিনারা করা হবে।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.