চলতি বছরের প্রথম তুষারপাত হল দার্জিলিঙের টাইগার হিলে। বরফ পড়ল সান্দাকফুতেও। কিন্তু, এত কম সময়ের জন্য তুষারপাত হল যে তা উপভোগ করতে যাওয়ার সময়ই পেলেন না কেউ। কারণ, মাত্র ৫ মিনিটের মধ্যেই ঝিরিঝিরি বরফ পড়া বন্ধ হয়ে যায়। ফলে, শনিবার সকালে বরফ পড়ার এই খবর পেয়ে তা দেখার জন্য দার্জিলিং সদর কিংবা সমতল শিলিগুড়ি থেকে যাঁরা যাওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়েছিলেন, কেউই শেষ পর্যন্ত যাননি। তবে আবহাওয়ার যা পরিস্থিতি তাতে ফের তুষারপাতের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আবহাওয়াবিদরা জানিয়েছেন। তাতে কিছুটা হলেও উৎসাহিত পর্যটকেরা।
সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ২৫৬০ মিটার উঁচুতে রয়েছে টাইগার হিল, সেখানে একটি পর্যটকদের জন্য একটি প্যাভেলিয়নও রয়েছে। সেই প্যাভেলিয়নের ম্যানেজার প্রদীপ লামা বলেন, “তখন বেলা সাড়ে ১০টা হবে। হঠাৎ দেখি কুচি কুচি বরফ পড়তে শুরু করেছে। সে এক দারুণ দৃশ্য। উৎসাহীদের জানাব ভাবছি। কিন্তু, মিনিট পাঁচেকের মধ্যেই তুষারপাত বন্ধ হয়ে গেল। সামান্য কুচি বরফ গলতে বেশি লাগেনি। সে জন্য তুষারপাত উপভোগ করার ইচ্ছে কারও পূর্ণ হয়নি। তবে আবহাওয়া দফতর থেকে যে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে তাতে তুষারপাতের সম্ভাবনা ক্রমশ প্রবল হচ্ছে।” |
তার আগে সকাল ৮টা নাগাদ দার্জিলিং থেকে ৬১ কিলোমিটার দূরে সান্দাকফু এলাকাতেও কিছুক্ষণ তুষারপাত হয়। সান্দাকফু সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩৬৩৬ মিটার উঁচুতে রয়েছে। সেখানেও মিনিট ছয়েক তুষারপাত হয় বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। ট্যুর অপারেটরদের তরফে কয়েকজন জানান, শীতের সময়ে তুষারপাতে সাক্ষী হতে অনেক পর্যটকের গন্তব্য থাকে পাহাড়। এবারও পাহাড়ে দেশ-বিদেশের কয়েকশো পর্যটক রয়েছেন। ট্যুর অপারেটরদের এক মুখপাত্র জানান, তাঁরা নিয়মিত আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।
দার্জিলিঙের তাপমাত্রা এখন দিনের বেলায় ৩-৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশেপাশেই ঘোরাফেরা করছে। টাইগার হিলে তা শূন্য ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছাকাছি। সেখানকার প্যাভেলিয়নের ম্যানেজার জানান, তিন দিন ধরে রাতের বেলায় টাইগার হিলের তাপমাত্রা মাইনাস ৩ ডিগ্রি সেলসিসাসে নেমে যাচ্ছে। তিনি বলেন, “সাধারণত শীতের সময়ে আকাশে মেঘ জমলে তুষারপাতের সম্ভাবনা প্রবল হয়। এ দিন আকাশ ছিল পরিষ্কার। সে জন্য তুষারপাত হবে সেটা ভাবিনি। যখন হল তা কয়েক মুহূর্তেই ফুরিয়ে গেল।”
শীতের সময়ে সান্দাকফু ও টাইগারে তুষারপাত হওয়াটা অবশ্য নতুন কিছু নয়। গত বছর ১৩ ডিসেম্বর সান্দাকফুতে তুষারপাত হয়। ওই বছরের ১ ফেব্রুয়ারি টাইগার হিলেও বরফ পড়েছিল। তবে দার্জিলিং শহর দীর্ঘদিন তুষারপাত দেখেনি। দার্জিলিং শহরের বাসিন্দারা ২০০৮ সালে শেষবার তুষারপাত দেখেছিলেন। সে বছর ২৬ জানুয়ারি দার্জিলিং শহরের বেশ কয়েকটি এলাকা বরফে ঢেকে যায়। তার আগের বছরেও ১৪ ফেব্রুয়ারি তুষারে মুড়ে যায় দার্জিলিং।
এ দিন সকালে তুষারপাতের খবর পেয়েই টাইগারে যাওয়ার জন্য গাড়ি নিয়ে বার হন ম্যাল লাগোয়া এলাকার বাসিন্দা বিনীতা লামা। তিনি বললেন, “বাড়ি থেকে বার হওয়ার পরে শুনি বরফ পড়া থেমে গিয়েছে। তা ছাড়া বরফ জমেনি। গিয়ে লাভ হবে না। তাই ফিরে আসি।” |