|
|
|
|
মমতার সফরের পরেই বদল পশ্চিমাঞ্চল পর্ষদে
বরুণ দে • মেদিনীপুর |
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জঙ্গলমহল সফরের পরপরই রদবদল হল পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদে। পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরলেন শালবনির বিধায়ক শ্রীকান্ত মাহাতো। এলেন গোপীবল্লভপুরের বিধায়ক চূড়ামণি মাহাতো।
রাজ্যে পালাবদলের পর থেকে পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন শ্রীকান্ত। তৃণমূল সূত্রের খবর, তাঁর কাজকর্মে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী সন্তুষ্ট ছিলেন না। বেশ কিছু দিন ধরেই তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে শালবনির এই বিধায়কের বিরুদ্ধে প্রভাব খাটানো, দুর্নীতি-সহ নানা অভিযোগ যাচ্ছিল। জঙ্গলমহলে সাম্প্রতিক সফরে এসে মুখ্যমন্ত্রীকেও ওই সব অভিযোগ শুনতে হয়। তারপরই রদবদলের সিদ্ধান্ত। এ নিয়ে বিশদে কিছু বলেননি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়নমন্ত্রী সুকুমার হাঁসদা। তিনি শুধু বলেন, “আগে শ্রীকান্ত মাহাতো পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর জায়গায় চূড়ামণি মাহাতো ভাইস চেয়ারম্যান হয়েছেন। এটা প্রশাসনিক ব্যাপার।”
শ্রীকান্ত মাহাতো অবশ্য এই সিদ্ধান্তের কথা জানেন না বলে দাবি করেছেন। তাঁর বক্তব্য, “ভাইস চেয়ারম্যান পদ থেকে আমাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে কি না, জানি না।” আর নতুন ভাইস চেয়ারম্যান চূড়ামণি মাহাতো শনিবার বলেন, “আজ দুপুরেই চিঠি পেয়েছি। নতুন দায়িত্ব যথাযথ ভাবে পালনের চেষ্টা করব।”
বাঁকুড়া, পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুর, বীরভূম এবং বর্ধমান রাজ্যের এই ৫টি জেলার ‘পিছিয়ে পড়া’ ৭৪টি ব্লকের উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০০৬ সালে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ গঠিত হয়। পানীয় জলের বন্দোবস্ত, রাস্তা তৈরি, সেচের ব্যবস্থা, হস্টেল তৈরির মতো উন্নয়নের নানা কাজ করে পর্ষদ। পর্ষদের মূল কার্যালয় রয়েছে বাঁকুড়ায়। বাম আমলে পশ্চিমাঞ্চল মন্ত্রী ছিলেন সুশান্ত ঘোষ। রাজ্যে পালাবদলের পর মন্ত্রী হন ঝাড়গ্রামের বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা। তিনিই পদাধিকার বলে পর্ষদের ‘এগ্জিকিউটিভ কমিটি’র চেয়ারম্যান। আর ভাইস চেয়ারম্যান ছিলেন শ্রীকান্ত। তিনি যুব তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি পদেও রয়েছেন। তৃণমূল সূত্রের খবর, কয়েক মাস ধরেই শ্রীকান্তর কাজকর্ম নিয়ে অভিযোগ উঠছিল। দলীয় এবং পুলিশ-প্রশাসনের সূত্রে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও কিছু অভিযোগ পৌঁছয়। গত ডিসেম্বরে মেদিনীপুরে এসে শ্রীকান্তকে সতর্ক পর্যন্ত করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তথা সাংসদ মুকুল রায়। বুঝিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁর কাজকর্মে দলনেত্রী খুশি নন। পুলিশ-প্রশাসনের সব কাজে তাঁর হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন নেই।
গত মঙ্গলবার জঙ্গলমহল সফরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তখন শ্রীকান্ত বিরুদ্ধে পুলিশ-প্রশাসনের কাজে হস্তক্ষেপ, প্রভাব খাটানো, দুর্নীতির মতো অভিযোগ ফের মুখ্যমন্ত্রীর কানে পৌঁছয়। এরপরই সব দিক খতিয়ে দেখে শ্রীকান্তকে পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন পর্ষদের ভাইস চেয়ারম্যানের পদ থেকে সরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন মুখ্যমন্ত্রী। পর্ষদের ‘এগজিকিউটিভ কমিটি’র সদস্য মোট ১৬ জন। মেদিনীপুরের বিধায়ক মৃগেন মাইতি, নয়াগ্রামের বিধায়ক দুলাল মুর্মুও ওই কমিটিতে আছেন। |
|
|
|
|
|