পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় না হলেও কিছুটা তো বটে। আর তাতেই বেজায় খুশি গাড়িপ্রেমীরা। এ বার থেকে গাড়ি ‘পার্ক’ করতে গিয়ে আর কালঘাম ছুটবে না তাঁদের। নয়া প্রযুক্তিই তাঁদের হয়ে সে কাজ করে দেবে। সম্প্রতি লাস ভেগাসের এক প্রদর্শনীতে এমন কথাই শুনিয়েছে ফ্রান্সের এক সংস্থা।
শপিং মল, কর্পোরেট অফিস, কিংবা বড় হাসপাতালে তড়িঘড়ি গাড়ি পার্ক করতে গিয়ে প্রায়শই বেকায়দায় পড়তে হয় আনকোরা চালককে। শুধু তা-ই নয়, জায়গার অভাবে বহু সময় অভিজ্ঞ চালকও হিমসিম খান। সেই সমস্যা ঘোচাতেই নয়া ‘অ্যাপস’ নিয়ে এসেছে ফ্রান্সের ওই সংস্থা। এটি ঠিক কী ভাবে কাজ করবে? মনে করুন, কোনও পার্কিং লটের সামনে আপনি গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে। কী ভাবে পার্ক করবেন, বুঝে উঠতে পারছেন না। কুছ পরোয়া নেহি। গাড়ি থেকে নেমে গিয়ে শুধুমাত্র স্মার্টফোনের নির্দিষ্ট অ্যাপসটি চালিয়ে দিলেই হবে। গাড়ি নিজের থেকেই ফাঁকা জায়গা খুঁজে নেবে। আর তার পর সেখানেই সটান ঢুকে যাবে। তা-ও আপনার মেহন্নত ছাড়াই। এমনকী, ‘ভ্যালে পার্কিং’ করতে গিয়ে ‘টিপস’ বাবদ যে গ্যাঁটের কড়ি খরচ করতে হত, সেটিও বেঁচে যাবে। অর্থাৎ ডবল মুনাফা।
শুনে অবশ্য অনেকেই ভুরু কোঁচকাচ্ছেন। এ-ও কী সম্ভব? এ তো স্বয়ংক্রিয় গাড়ির মতোই অবিশ্বাস্য ব্যাপার। কিন্তু তা যে নয়, সেটা প্রমাণ করতে লাস ভেগাসে আয়োজিত বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশের এক প্রদর্শনীতে বিষয়টি হাতেকলমে করে দেখিয়েছে ওই সংস্থা।
তবে তাতেও কমছে না প্রশ্ন। কোথায়, কী ভাবে, কতটুকু জায়গার মধ্যে গাড়ি ঢুকবে, সেটা মানুষকে বুঝতে সাহায্য করে তাঁর উন্নত মস্তিষ্ক এবং ‘রিফ্লেক্স’। অ্যাপস কী ভাবে এই তথ্যগুলি বিশ্লেষণ করে বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নেবে? যে সংস্থা অ্যাপসটি বানিয়েছেন, তার কর্নধারের দাবি, “এটি মানুষের মস্তিষ্কের মতোই।” বাকি গাড়িগুলিতে যে সব সেন্সর ব্যবহার করা হয়, সেগুলিই এখানে ব্যবহার করা হয়েছে। খালি অতিরিক্ত কেরামতির নেপথ্যে থাকবে আরও কিছু বিশেষ বৈদ্যুতিন যন্ত্রাংশ। তাতেই কেল্লাফতে।
একই সঙ্গে সংস্থার তরফ থেকে আরও দাবি করা হয়েছে, শুধুমাত্র কিছু বহুমূল্য গাড়ির জন্য নয়, আমজনতা যাতে এই অ্যাপস ব্যবহার করতে পারে, সে দিকে খেয়াল রেখেই এটি তৈরি করা হয়েছে। তবে নিছক পার্কিংয়ের পরিশ্রম বাঁচাতে নয়, দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমাতেও এই অ্যাপস কাজে আসবে, আশা নিমার্তা-সংস্থার।
তবে শুধু পার্কিং নয়, এই অ্যাপস চালিয়ে দিলে পার্কিং লট থেকে গাড়ি বের করে আনার কষ্টও করতে হবে না। চালকের সামনে নিজের থেকেই গাড়ি হাজির হয়ে যাবে। এর ফলে বাকিরা তো বটেই, বয়সের ভারে থমকে যাওয়া বৃদ্ধরাও অনেক সহজে গাড়ির উপর নিয়ন্ত্রণ করতে পারবেন। অর্থাৎ আক্ষরিক অর্থেই এই অ্যাপস আবালবৃদ্ধবনিতার কাজে লাগবে, দাবি নির্মাতার। |