বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
বিজ্ঞান মেলায় চমক জেলার
বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাসে উঠেই মনে পড়ল ঘরের আলো-পাখা বন্ধ করতে ভুলে গিয়েছেন। তাতে কী? আপনার মোবাইলটা পকেটে আছে তো? একটি নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করলেই সব বন্ধ হয়ে যাবে।
মোবাইলের চার্জার হারিয়ে গিয়েছে। এ দিকে ফোনে চার্জ প্রায় শেষ। চার্জার কিনতে কিনতে কাল সকাল? উপায়? হাঁটার সময়ে পায়ের জুতোয় যে চাপ পড়ে সেই চাপের শক্তিটাকে এক জায়গায় সঞ্চয় করে রাখুন। বিপদে পড়লে সেই শক্তির মাধ্যমেই দিব্যি চার্জ দেওয়া যাবে আপনার ফোনে।
কল্পবিজ্ঞান নয়। গল্পও নয়।
কলকাতার বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামে (বিআইটিএম) আয়োজিত পূর্ব ভারতের বিজ্ঞান ও কারিগরি মেলা ২০১৪-য় আসা অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে এ রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরাও এই ভাবনাগুলিকেই বিভিন্ন প্রকল্পের মধ্যে দিয়ে বাস্তব করে দেখাল। দর্শকদের বোঝাল বিজ্ঞানের নানা অজানা তথ্য। শুধু তাই নয়, বাকি রাজ্যের প্রতিযোগীদের পিছনে ফেলে ব্যক্তিগত বিভাগে সেরা হল এ রাজ্যের জেলার ছেলে আদিত্য বসু। আদিত্য দক্ষিণ ২৪ পরগনার জয়নগরের কৌতলা রামকৃষ্ণ আশ্রম হাইস্কুলের অষ্টম শ্রেণির ছাত্র। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, ৭ জানুয়ারি থেকে ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত চলা এই মেলায় যোগ দিয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ-সহ পূর্ব ভারতের ৯টি রাজ্যের মোট ১২৮টি স্কুল, ১৪টি কলেজ ও ২টি বিজ্ঞান ক্লাবের মোট ২৮১ জন ছাত্রছাত্রী। মেলার পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান হয় ১১ জানুয়ারি, শনিবার। দলগত বিভাগে সেরা হয়েছে মেঘালয়।
জেলার ছাত্রছাত্রীদের আরও বেশ কিছু ভাবনা নজর কেড়েছে এই বিজ্ঞান ও কারিগরি মেলায়।
কলকাতার বিআইটিএম প্রাঙ্গণে প্রদর্শনী। ছবি: স্বাতী চক্রবর্তী।
আদিত্য বসুর বিষয় ছিল গ্রামে চাষের ফলন বাড়ানোর উপায় ও জীববৈচিত্র। দর্শকদের কৌতূহল মেটানোর ফাঁকে আদিত্য জানায়, পুরো প্রকল্পটি করতে তার সময় লেগেছে প্রায় ২ বছর। তার কথায়, “আমার বাবাই আমার গাইড। আমি যখন পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ি, তখন থেকেই এই মেলার বিভিন্ন বিভাগে যোগ দিতে শুরু করেছিলাম।” এই জেলারই বারুইপুরের রাসমণি বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী নাতাশা সুলতানা ও শ্রেয়া দাস দর্শকদের দেখাল কী ভাবে ব্যাটারি ছাড়াই তৈরি হতে পারে বিদ্যুৎ। নদিয়ার ফুলিয়া শিক্ষানিকেতনের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র রুদ্ররূপ দাস তৈরি করেছিল জিন ক্লোনিংয়ের মডেল। আসানসোল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র সৌরভ শ্রীবাস্তব, রাজবর্ধন চৌহান ও প্রশান্ত দুবে করেছিল এমন এক দমকল গাড়ির মডেল, যেটি অত্যন্ত জনবহুল এলাকাতেও অনায়াসে ঢুকতে সক্ষম। পেন ও মোটর দিয়ে তৈরি এই মডেল দমকলের জল দেওয়া দেখতে ভিড় হয়েছিল ভালই। এ ছাড়াও বর্ধমান, উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলি থেকেও এসেছিল ছাত্রছাত্রীরা।
বাদ ছিল না উত্তরবঙ্গও। কোচবিহার ও মালদহ থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসেছিল। কৃত্রিম ভাবে মৌমাছি পালন ও ফুলের পরাগ সংযোগ বৃদ্ধি করার উপর একটি প্রকল্প তৈরি করেছিল কোচবিহারের কলাবাগান হাই স্কুলের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী গীতা সাহা ও রেশমা পারভিন।
উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, শুধু প্রতিযোগীরাই নয়, মেলা দেখতেও রাজ্যের বিভিন্ন জেলা থেকে ছাত্রছাত্রীরা এসেছিলেন। রাজ্যের যুব কল্যাণ দফতর-সহ পূর্ব ভারতের সমস্ত রাজ্যের শিক্ষা দফতর ছিল এই মেলার যুগ্ম আয়োজক। বিড়লা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড টেকনোলজিক্যাল মিউজিয়ামের কারিগরি আধিকারিক গৌতম শীল বলেন, “প্রতি বছরই জেলা ও রাজ্যে স্তরে এই মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে যে সব প্রতিযোগীর ভাবনা ও কাজ পুরষ্কৃত হয়, তারাই পূর্ব ভারতের এই প্রতিযোগিতায় যোগ দেয়। কাজ করতে গিয়ে দেখেছি প্রত্যন্ত গ্রামেও ছাত্রছাত্রীদের ভাবনা যথেষ্ট উন্নত। ঠিক মতো প্রশিক্ষণ পেলে এরা অনেক দূর যাবে।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.