কলেজ শিক্ষককে মারধরের ঘটনায় জড়িয়ে পড়লেন প্রাক্তন মন্ত্রী হুমায়ুন কবীর।
তাঁর মাস কয়েকের মন্ত্রিত্বে বিরোধীদের ‘হুমকি’ দেওয়ার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। নিজের নির্বাচনী এলাকা মুর্শিদাবাদের রেজিনগরের শক্তিপুর থানায় জামিন অযোগ্য সেই অভিযোগ এখনও ঝুলে রয়েছে।
উপ-নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পরে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে গেলেও জেলা তৃণমূলের কার্যনির্বাহী সভাপতি হুমায়ুনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ দায়েরের বিরাম নেই।
রেজিনগরের কংগ্রেস বিধায়ক রবিউল আলমকে মারধর করা, সরকারি বিধি ভেঙে সভা প্রশাসনিক ভবনের সামনে সভা করার পর অভিযোগের সেই তালিকায় শেষ সংযোজন বহরমপুর কৃষ্ণনাথ কলেজের হস্টেল সুপার তথা কলেজের অঙ্কের এক শিক্ষককে মারধর করা।
বৃহস্পতিবার জনা কয়েক সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে ওই কলেজের হস্টেলে ঢুকতে গেলে আপত্তি করেছিলেন হস্টেল সুপার রাজীব মুখোপাধ্যায়। সেই সময়ে তাঁকে মারধর করা হয় বলে পুলিশ অভিযোগ দায়ের করেছেন অধ্যক্ষ সোমেশ রায়। তিনি অবশ্য একা নন, অভিযুক্তদের তালিকায় রয়েছেন সদ্য নির্বাচিত বহরমপুর পুরসভার দুই তৃণমূল কাউন্সিলর প্রদীপ নন্দী ও কানাই রায়। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “কলেজ কর্তৃপক্ষের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তও শুরু হয়েছে।”
প্রাক্তন মন্ত্রী অবশ্য তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা সব অভিযোগই উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, “খবর পেয়েছিলাম প্রদীপ ও কানাইকে মারধর করা হচ্ছে। তাই ছুটে গিয়েছিলাম হস্টেলে। তবে গিয়ে দেখি উত্তেজিত ভাবে কথা কাটাকাটি হচ্ছে। কারও গায়ে হাত তোলার প্রশ্নই নেই।” তাঁর দাবি, ওই কলেজের অধ্যক্ষের চেয়ারে বসে কংগ্রেসের হয়ে রাজনীতি করছেন সোমেশবাবু।
সোমেশবাবু পাল্টা বলেন, “কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই আমার সম্পর্ক নেই।” তাঁর দাবি, ওই দিনের ঘটনার বিরুদ্ধে কলেজ কর্তৃপক্ষ সভা ডেকে নিন্দা প্রস্তাব নিয়েছে। কলেজ ও হস্টেলের ছাত্রছাত্রী থেকে অধ্যপক ও শিক্ষাকর্মীরা ওই ঘটনার পরে নিরাপত্তহীনতা ভুগছেন।
২০ জানুয়ারি মুর্শিদাবাদ জেলার ছাত্র সংসদ নির্বাচন। নির্বাচনের প্রচার ঘিরে যাতে অশান্তি না ছড়ায় সে জন্য কলেজের ছাত্রাবাসে প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কলেজ কর্তৃপক্ষ। কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে, গন্ডগোল এড়াতে ছাত্রাবাসের গেট বন্ধ রাখা হচ্ছে। সোমেশবাবু বলেন, “ছাত্রাবাসের দরজা বন্ধ রাখার অপরাধে হস্টেল সুপার রাজীববাবুর জামার কলার ধরে তাঁকে মারধর করা হয়।” রাজীববাবু নিজেও জানান, তাঁকে মারধর করা হয়েছে। তাঁর অভিযোগ, “হুমায়ুন কবীর জনা কয়েক দলীয় কর্মী নিয়ে হস্টেলে পৌঁছেই আমার জামার কলার ধরে ঝাঁকাতে তাকেন। মারধরও করা হয়। হস্টেলের ছাত্রেরাই ছুটে এসে আমাকে উদ্ধার করেন।” |