বাঁশ কেটে মই তৈরি করে তিন তলায় উঠে গুলি-বোমা ছুড়ে, মারধরের পর ব্যবসায়ী ৩ ভাইয়ের টাকা গয়না লুঠ করেছে এক দল দুষ্কৃতী। ওই দলটিতে কম পক্ষে ৪০ জন ছিল বলে জানা গিয়েছে। বুধবার গভীর রাতে মালদহ হরিশ্চন্দ্রপুরের পিরোজপুরে ঘটনাটি ঘটে। পড়শিদের ভয় দেখাতে দলটি বোমাবাজি করে। এক মহিলাকে লক্ষ করে দুষ্কৃতীরা গুলিও চালায়। যদিও ওই মহিলার কানের পাশ দিয়ে গুলি বেরিয়ে যায়। দুষ্কৃতী দলটি প্রায় আধ ঘণ্টা লুঠপাট চালিয়ে চম্পট দেয়। সে সময় বিযয়টি মোবাইলে জানানো হলেও পুলিশ আসার আগে দুষ্কৃতীরা পালায়। চাঁচলের গোবিন্দপাড়া স্কুলে একই রাতে কিছু দুষ্কৃতী দরজা ভেঙে ঢুকে স্কুলের নথি তছনছ করে।
পুলিশ জানায়, দোতলা বাড়িতে একই সঙ্গে থাকেন ৩ ভাই বৈদ্যনাথ, কেদারনাথ ও হরিহর সাহা। বড় ভাই স্থানীয় এক ডাকঘরের পোস্টমাস্টার। পুলিশ ও ব্যবসায়ীর পরিবার সূত্রে জানা যায়, রাত ১২টা নাগাদ প্রায় ৪০ জনের দুষ্কৃতী দলটি হানা দেয়। বাড়ির ভিতরে ছিল জনা তিরিশেক দুষ্কৃতী। এ ছাড়া বাকিরা বাইরে। এলাকার কোনও বাঁশ বাগান থেকে বাঁশ কেটে নিয়ে এসে মই বানিয়ে প্রথমে তারা তিন তলার ছাদে ওঠে। সেখান থেকে বাড়িতে ঢুকে শাবল দিয়ে দরজা ভেঙে একেকটি ঘরে ঢুকে লুঠপাট চালাতে থাকে। ওই সময় বেশ কিছু জমি ও বাড়ির দলিল ছিঁড়তে বাধা দেওয়ায় বেধড়ক মারধর করা হয় পরিবারের লোকজনকে। ঘরে দরজা খুলতে দেরি করায় হরিহরবাবুর স্ত্রী রিনা দেবীকে লক্ষ করে তারা গুলিও ছোড়ে। গুলি কানের পাশ দিয়ে দেওয়াল ঘড়িতে লাগে। দুষ্কৃতীদের প্রত্যেকেরই বয়স গড়ে ২০ থেকে ২২ বছরের মধ্যে বলে পুলিশ জানতে পেরেছে। বড়ভাই বৈদ্যনাথ ও ছোট ভাই হরিহর এ দিন বলেছেন, “দুষ্কৃতীরা নিজেদের মধ্যে হিন্দিতে কথা বলছিল। ওরা আতঙ্ক ছড়াতে মারধরও করে। সবার হাতেই আগ্নেয়াস্ত্র ছিল।” কয়েক জন প্রতিবেশী জানিয়েছেন, বাইরে থাকা দলের বাকি দুষ্কৃতীরা পর পর বোমা ছোড়ায় কেউ আর এগিয়ে যাওয়ার সাহস করেননি। আইসি বাবিন মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই পরিবারটির সুদে টাকা খাটানোর কারবার রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। তাই পরিকল্পনা করে ডাকাতি কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।” মালদহের পুলিশ সুপার কল্যাণ মুখোপাধ্যায় এই দিন এই প্রসঙ্গে বলেছেন, “কারা ওই ডাকাতির ঘটনায় জড়িত তা জানার চেষ্টা চলছে। পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করে দিয়েছে।” গোবিন্দপাড়া স্কুলে কারা কেন হানা দিয়েছিল তাও দেখা হচ্ছে বলে তিনি জানিয়েছেন। |