পূর্ত-সড়কের কাজিয়ায় নিত্য দুর্ভোগ খন্দ-পথে
থ-দুর্ভোগ যে কী তা এক বছর ধরে হাড়েহাড়ে টের পেয়ে চলেছেন ধূপগুড়ি হয়ে সোনাপুর রাস্তায় চলাচল কারী যাত্রীরা। ৩৮ কিলোমিটার রাস্তার মধ্যে মেরেকেটে মাত্র ১০ কিলোমিটার রাস্তার হাল চলাচলের যোগ্য হলেও বাকি রাস্তাটায় পিচের প্রলেপ উঠে গিয়েছে বহু দিন আগে। সে জায়গায় বড় বড় প্রচুর গর্ত তৈরি হয়েছে। ওই পথেই ফালাকাটা ও ধূপগুড়ির মধ্যে যোগাযোগ প্রায় স্তব্ধ হতে বসেছে। খুব প্রয়োজন ছাড়া প্রাণের ঝুঁকি নিয়ে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচল করেন না বহু মানুষই। গত এক বছরে ওই বেহাল রাস্তায় গাড়ির চাকা ফেঁসে কয়েকটি বাস-সহ ছোট গাড়ি উল্টে যাওয়ার ঘটনায় বেশ কিছু যাত্রী জখম হয়েছেন। কয়েক মাস আগে বাস উল্টে প্রাণ যায় এক পরিবহণ কর্মীর। রাতে কুয়াশাচ্ছন্ন ওই রাস্তায় গন্তব্যে যেতে প্রতিনিয়ত মোটর বাইক দুর্ঘটনা লেগেই রয়েছে।
বেহাল রাস্তা মেরামতির দাবিতে এলাকার লোকজন ইতিমধ্যে দুই দফায় রাস্তা অবরোধ করেছেন। বেহাল রাস্তা মেরামতির কাজ দ্রুত শুরু না করা হলে বড় ধরনের আন্দোলনে নামার হুমকিও দিয়েছেন তারা। চার লেনের মহাসড়ক তৈরি করার জন্য পাঁচ বছর আগে ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটা হয়ে সোনাপুর পর্যন্ত ওই রাস্তা অধিগ্রহণ করে ন্যাশনাল হাইওয়ে অথরিটি কর্তৃপক্ষ। অভিযোগ, ধূপগুড়ি কলেজ এলাকার থেকে ফালাকাটার গুয়াবর নগর পর্যন্ত যে রাস্তাটি পূর্ত দফতরের অধীনে ছিল তা বর্তমানে মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের অধীনে।

ফালাকাটা থেকে ধূপগুড়ি যাওয়ায়র রাস্তা। রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।
মাঝে কিছু অংশ রাস্তা বাদ দিয়ে একই ভাবে ফালাকাটা শহরের পর আলিপুরদুয়ার যাতায়াতের ৩১ নম্বর জাতীয় সড়ক তারা অধিগ্রহণ করে নেয়। জমি জটিলতার কারণে চার লেন তৈরির কাজ শুরু না করলেও ওই অধিগৃহীত পথ মহা সড়ক কর্তৃপক্ষ রক্ষণাবেক্ষণ করেননি বলে অভিযোগ। মহাসড়ক কর্তৃপক্ষের দায়িত্বে থাকা জেনারেল ম্যানেজার আর কে চৌধুরীর দাবি, “বছর খানেক আগেই ওই রাস্তা রক্ষণাবেক্ষণের দায় আমাদের হাতে নেই। সেটি পূর্ত দফতর দেখছে।” তবে কবে মহাসড়ক নির্মাণের কাজ শুরু করা হবে সে বিষয়ে অবশ্য স্পষ্ট ভাবে কিছু বলতে পারেননি তিনি।
রাস্তার বেহাল দশায় রীতিমতো ক্ষুব্ধ বাম পরিচালিত জলপাইগুড়ি জেলা পরিষদের সভাধিপতি নূরজাহান বেগম, এমনকী ফালাকাটার তৃণমূল বিধায়ক অনিল অধিকারীও। নূরজাহান বলেন, “বেহাল রাস্তার জন্য ধূপগুড়ি থেকে ফালাকাটা হয়ে আলিপুরদুয়ার যায়াতায় করা যে কতটা কষ্টসাধ্য তা এক মাত্র ভুক্তভোগীরা জানেন। এ নিয়ে বহু অভিযোগ এসেছে। আমি বার বার পূর্ত দফতরের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করি। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ কিছু দিন আগে আমায় চিঠি দিয়ে জানিয়ে দেয় আগামী কিছু দিনের মধ্যে রাস্তা মেরামতির কাজ শুরু করবে।” বিধায়ক অনিলবাবুর কথায়, ওই রাস্তা দিয়ে আমায় মাঝে মধ্যে যাতায়াত করতে হয়। ওই রাস্তায় চলাচল করার ভোগান্তি অনেক। তবে দ্রুত মেরামতির কাজ শুরু হবে শুনেছি।”
রাস্তার অবস্থা নিয়ে রীতিমত ক্ষুব্ধ বাস মালিকরা। রাস্তা দিয়ে শিলিগুড়ি, কোচবিহার, আলিপুরদুয়ার রুটে মোট ৬৫ বাস চলাচল করে প্রতিদিন। রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে বেশ কয়েকটি বাস চলানো মালিক বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ। ফালাকাটা মোটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সুভাষ রক্ষিত বলেন, “অবিলম্বে রাস্তা মেরামতি না হলে আমরা বাস চলানো বন্ধ করতে বাধ্য হব। খানাখন্দে ভরা রাস্তা পেরোতে গিয়ে রোজ যন্ত্রাংশ ভাঙছে। বড় সড় ক্ষতির মুখে আমরা।” ধূপগুড়ি ব্লকের শালবাড়ি গ্রামের এক কৃষকের কথায়, “ফি শনি ও মঙ্গলবার ধূপগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে আমাদের যেতে হয়। গর্তে ভরা রাস্তা পেরোতে চান না ভ্যান চালকেরা। তাই বুঝিয়ে-সুজিয়ে প্রায় দ্বিগুণ ভ্যান-ভাড়া দিয়ে ধূপগুড়িতে সব্জি নিয়ে যাই আমরা।”





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.