ডিআইয়ের দফতরে অভব্য আচরণের অভিযোগে পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল সেকেন্ডারি চিটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার ঘটনার বিরুদ্ধে সরব হলেন এবিটিএ নেতৃত্ব। বৃহস্পতিবার স্কুলগুলিতে তাঁরা কালো ব্যাজ পড়েন। পরে কালো ব্যানারে ‘ছি’ লিখে মিছিল করে মহকুমাশাসকের দফতরে যান। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবি তোলেন। নতুন নিয়োগ হওয়া প্রায় ৮০০ শিক্ষকের অনুমোদন স্কুল পরিদর্শক না দেওয়ায় তাদের বেতনের ক্ষেত্রে সমস্যা হবে দাবি করে মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপ চান তাঁরা।
মহকুমাশাসক দীপাপ প্রিয়া বলেন, “এবিটিএ সদস্যরা এ দিন এসেছিলেন। তাঁদের সমস্যার বিষয়টি জেলাশাসককে জানাব।” স্কুল পরিদর্শক সঞ্জীব কুমার ঘোষ জানান, দুই শিক্ষক সংগঠন বুধবার সমস্যা নিয়ে তাঁর দফতরে এসেছিলেন। কত জন শিক্ষক নতুন নিয়োগ হয়েছেন তা দেখা হচ্ছে। নতুন নিয়োগ হওয়া শিক্ষক-শিক্ষিকারা দফতরে এসে জানালে সেই মতো অনুমোদন দেওয়া হয়। তবে তিনি বলেন, “কম্পিউটার ব্যবস্থায় গোলমালের কারণে নতুন শিক্ষকদের অনুমোদন দেওয়া যায়নি। সে কারণে ১৫ জানুয়ারির পর্যন্ত সময় বাড়িয়ে তার মধ্যে স্কুলের তরফে সমস্ত জানাতে বলা হয়েছে।”
তৃণমূল মনোভাবাপন্ন ওই শিক্ষক সংগঠনের তরফে অবশ্য মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করা হয়েছে। এ বিটিএ’র দাবি, জেলায় প্রায় ৮০০ নতুন শিক্ষক নিয়োগ হয়েছেন। স্কুল পরিদর্শকের দফতর থেকে তাদের অনুমোদন মিললে স্কুলগুলিকে তা ফের কম্পিউটার ব্যবস্থা অনলাইনে তা জানাতে হবে। স্কুল পরিদর্শক তা পেলে বেতনের বিল তৈরি করে পাঠাতে হবে। এবিটিএ-র জেলা সভাপতি তমাল চন্দ বলেন, “স্কুল পরিদর্শক এখনও একটিও নতুন নিয়োগ অনুমোদন করেননি। অথচ তা করতে সময় লাগবে। শিক্ষকেরা বিপাকে পড়বেন। তাই অবিলম্বে তা করার দাবি তুলে মহকুমাশাসকের হস্তক্ষেপ চেয়েছি।” তমালবাবুর দাবি, শনিবার এবং রবিবার ছুটির দিন। সোমবারও একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান দিবসের জন্য ছুটি রয়েছে। অথচ এ দিন পর্যন্ত এক জন নতুন শিক্ষকের অনুমোদনও স্কুল পরিদর্শক দেননি।
বুধবার স্কুল পরিদর্শকের দফতরে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠন এবং এবিটিএ ওই সমস্যা নিয়ে স্মারকলিপি দিতে যায়। স্মারকলিপি দেওয়া নিয়ে দুই সংগঠনের গোলমালে নিগৃহীত হন সাংবাদিকদের একাংশ। বুধবার ওই ঘটনা নিয়ে সাংবাদিকদের একাংশের তরফে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। শিলিগুড়ি জার্নালিস্ট ক্লাবের তরফে ঘটনার নিন্দা করে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানানো হয়। ঘটনার পর পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল সেকেন্ডারি টিচার অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমাও চাওয়া হয়। ওই শিক্ষক সংগঠনের নেতা জয়ন্ত কর বলেন, “কে মেরেছে জানি না। তবে ভুল বোঝাবুঝির জন্য ক্ষমা চেয়েছি।”
ওই দিন প্রথমে তৃণমূলের সংগঠন ডিআই-এর সঙ্গে কথা বলে। বেলা আড়াইটে থেকে ৩টা পর্যন্ত এবিটিএ’র সঙ্গে দেখা করার সময় দিয়েছিলেন স্কুল পরিদর্শক। সেই সময়ে-ও তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা ডিআইয়ের দফতরে বসে ছিলেন। দেরি হচ্ছে দেখে এবিটিএ’র জেলা সম্পাদক তমালবাবু এবং কয়েকজন ডিআই’এর দফতরে ঢোকেন। ডিাইকে তুই তোকারি করে শিক্ষকদের অনুমোদনের ফাইল চাইলে প্রতিবাদ করেন তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের সদস্যরা। তমালবাবু পাল্টা অভব্য আচরণ করেন বলে অভিযোগ। সে সময় তারা ক্ষিপ্ত হয়ে তমালবাবুদের ধাক্কা দিয়ে বার করে দেন বলে অভিযোগ। |