একশো দিনের কাজের প্রকল্পে গতি আনতে এবং খরচ বাড়াতে আরও দু’টি কেন্দ্রীয় প্রকল্প একসঙ্গে মিলিয়ে কাজ করানোর সিদ্ধান্ত নিল উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন। পঞ্চায়েত এলাকায় গরিব মানুষদের জন্য শৌচাগার নির্মাণ (নির্মল ভারত অভিযান) ও গৃহ নির্মাণের কাজ (ইন্দিরা আবাস যোজনা) যুক্ত করা হল একশো দিনের কাজে। নতুন এই ব্যবস্থা জেলার মধ্যে প্রথম শুরু হয়েছে বনগাঁ ব্লকে। বনগাঁ ব্লককে মডেল হিসাবে ধরে নিয়ে জেলার অন্য ব্লকেও এই উদ্যোগ নেওয়ার চিন্তাভাবনা শুরু হচ্ছে।
এতদিন কেন্দ্রের নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্পে গ্রামীণ এলাকায় বিপিএল পরিবারগুলিকে শৌচাগার তৈরি করে দেওয়া হচ্ছিল। এক একটি শৌচাগার তৈরি করতে খরচ হচ্ছিল সাড়ে ৪ হাজার টাকা। একশো দিনের কাজের সঙ্গে নির্মল ভারত অভিযান প্রকল্প জুড়ে দেওয়ায় এক-একটি শৌচাগার তৈরি করতে খরচ হচ্ছে ১২ হাজার টাকা করে। এর ফলে শৌচাগারের গুণগত মান অনেকটাই বেড়েছে। |
অতীতে শৌচাগারের একটি চেম্বার তৈরি করা হত। এখন করা হচ্ছে দু’টি। শৌচাগারের ছাদে থাকত ফাইবার শিট। এখন দেওয়া হচ্ছে টিন। উন্নত মানের শৌচাগার তৈরি হওয়ায় মানুষের মধ্যে এ নিয়ে বেড়েছে উৎসাহও। বনগাঁ ব্লক প্রশাসন সূত্রের খবর, ব্লকের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্যে ৬টি গ্রাম পঞ্চায়েত ইতিমধ্যেই নির্মল গ্রাম পঞ্চায়েতের সম্মান পেয়েছে। ব্লক অফিস থেকে প্রতিটি সংসদ ধরে ধরে সমীক্ষা চালানো হচ্ছে।
প্রথম পর্যায়ে প্রতিটি সংসদে ৬টি উন্নত শৌচাগার তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ডিসেম্বর থেকে জেলায় ইন্দিরা আবাস যোজনা প্রকল্পের সঙ্গে একশো দিনের কাজ প্রকল্পকে যুক্ত করা হয়েছে। এর ফলে গরিব মানুষ দু’টি সুবিধা পাচ্ছেন। কোথাও জমি নিচু বা কর্দমাক্ত থাকলে তা মাটি ফেলে বাড়ি তৈরির জন্য উপযুক্ত করা হচ্ছে। এর সঙ্গে অতীতে ইন্দিরা আবাস যোজনায় গৃহ নির্মাণের জন্য এক জন ব্যক্তি পেতেন ৪৫ হাজার টাকা। বর্তমানে একশো দিনের কাজ যুক্ত হওয়ায় তিনি পাচ্ছেন ৭০ হাজার টাকা। তিনটি পর্যায়ে এই ৭০ হাজার টাকা দেওয়া হবে। প্রশাসন সূত্রের খবর, নিচু জমিতে বাড়ি তৈরির ফলে বর্ষায় জল জমে তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। যাতায়াতেও সমস্যা হয়। ক্ষতি হয় ঝড়েও। এর ফলে নিচু এলাকায় বাড়ি তৈরি নিয়ে নিয়ে অনাগ্রহ দেখা যাচ্ছিল বেনিফিসিয়ারিদের মধ্যে। বাসিন্দাদের মধ্যে। সেই কারণে বনগাঁ ব্লকে ইতিমধ্যেই নতুন ব্যবস্থায় গৃহ নির্মাণের জন্য প্রথম কিস্তির ১৭ হাজার ৫০০ টাকা দিয়ে দেওয়া হয়েছে। ব্লকে ১৩৬৫টি গৃহ নির্মাণের কাজ চলছে। জেলায় তৈরি হচ্ছে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার বাড়ি।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শীঘ্রই জেলায় আসছেন উন্নয়ন মূলক কাজের অগ্রগতির খতিয়ান নিতে। একশো দিনের কাজে গতি বাড়াতে প্রতিটি জেলার প্রশাসনিক কর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। এই নতুন ব্যবস্থা ওই চিন্তাভাবনারই ফল বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক সঞ্জয় বনশল বলেন, “ওই দুটি প্রকল্পের সঙ্গে একশো দিনের প্রকল্প যুক্ত হওয়ায় কাজে গতি বাড়ার পাশাপাশি শৌচাগার ও বাড়ির গুণগত মানও বাড়ছে। ফলে, আগ্রহী হচ্ছেন মানুষ।” |