স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হল স্বামীকে। বুধবার রাতে গাইঘাটার পাঁচপোতা এলাকা থেকে ধরা হয় বিপ্লব বালা নামে গাজনার বাসিন্দা ওই যুবককে। বিপ্লবের বাবা জিতেন বালা-সহ পরিবারের বাকি অভিযুক্তেরা পলাতক বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গোটা অভিযোগের পিছনে ষড়যন্ত্রের ইঙ্গিত খুঁজে পাচ্ছে বালা পরিবার। ২০০২ সাল নাগাদ সুটিয়ায় একের পর এক গণধর্ষণ কাণ্ডের পরে গড়ে ওঠা প্রতিবাদী মঞ্চের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সদস্য জিতেনবাবু। এখনও আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত তিনি। জিতেনবাবু বলেন, “সমস্ত অভিযোগই মিথ্যা। পারিবারিক কারণে বিপ্লব এক বার রুবির গায়ে হাত তোলে। তারপরে ছেলেকে বাড়ি থেকে বের করে দিই। বউমাকে থানায় যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলাম। থানায় ফোনও করেছিলাম। কিন্তু বউমা ওই ঘটনার পরে বাপের বাড়ি চলে যায়।” প্রতিবাদী মঞ্চের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে নানা হুমকি এসেছে। মঞ্চের সম্পাদক বরুণ বিশ্বাসকে খুন করে দুষ্কৃতীরা। আক্রান্ত হন মঞ্চের সভাপতি ননীগোপাল পোদ্দার। জিতেনবাবুর দাবি, এ ক্ষেত্রে তৃণমূল নেতৃত্বের একাংশের পরামর্শেই পরিবারের সকলের নামে বধূ নির্যাতনের মামলা দায়ের করেছেন রুবি। ননীগোপালবাবুর মতে, ষড়যন্ত্র করা হয়েছে জিতেনবাবুর বিরুদ্ধে।
২০০৭ সালে বিপ্লবের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল গাইঘাটার মানিগ্রার বাসিন্দা রুবি বালার। বিপ্লবের এটি দ্বিতীয় বিয়ে। গত ২৯ ডিসেম্বর গাইঘাটা থানায় দায়ের করা অভিযোগে রুবি জানান, পণের টাকা চেয়ে তাঁর উপরে শারীরিক-মানসিক নির্যাতন চালাতেন বিপ্লব, তাঁর বাবা-মা এবং শ্বশুর বাড়ির আরও কয়েক জন। বিপ্লব পেশায় হাতুড়ে চিকিৎসক। নতুন চেম্বার করবেন বলে শ্বশুরবাড়ি থেকে দু’লক্ষ টাকা চেয়েছিলেন বলে দাবি রুবির। টাকা না পেয়ে এক বার তাঁকে বালিশ চাপা দিয়ে খুনের চেষ্টা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি। তবে কোনও রাজনৈতিক মহলের ইন্ধনে অভিযোগ দায়ের করেছেন বলে মানতে চাননি রুবিদেবী। তিনি বলেন, “শ্বশুরমশাই আমাকে মেরে বাড়ি থেকে বের করে দেন।”
পণ নিয়ে ছেলের বিয়ে দিয়েছেন বলে মানতে চাননি জিতেনবাবু। ২ লক্ষ টাকা দাবি করা হয়েছে তাঁদের পরিবারের তরফে, অস্বীকার করেছেন সে কথাও। যদিও রুবি বলেন, “বিয়েতে প্রায় দেড় লক্ষ টাকার গয়না-জিনিসপত্র নিয়েছিলেন বালা পরিবার।
খাদ্যমন্ত্রী তথা উত্তর ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূল পর্যবেক্ষক জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, “গোটা ঘটনা আমরা কিছুই জানতাম না। তবে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। দোষ করলে শাস্তি পেতে হবে।” |