জমি কিনে বাড়ি করার জন্য পাক্কা ১২ হাজার টাকা দাবি করেছিল এলাকার কিছু যুবক। কিন্তু, তাদের চাহিদামত ওত টাকা দিতে না পারায় বুধবার গভীর রাতে কৃষ্ণনগরের শক্তিনগরের বেলতলার বাসিন্দা সন্দীপ সাহার বাড়িতে চাঙচুর চালাল স্থানীয় একদল যুবক। বাধা দিলে সন্দীপবাবুর পাশাপাশি তাঁর স্ত্রী ও তাঁর সত্তর বছরের শ্বাশুড়িকেও মারধর করা হয়। তার দু’বছরের ছেলেকেও মেঝেতে আছড়ে ফেলে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রাতেই সন্দীপবাবুর স্ত্রী যমুনাদেবীকে শক্তিনগর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। রাতেই ঘটনাস্থলে যায় কোতোয়ালি থানার পুলিশ। সন্দীপবাবু স্থানীয় চার যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশের অভিযোগ দায়ের করেছেন। কৃষ্ণগরের আইসি রাজকুমার মালাকার বলেন, “অভিযোগ পেয়েছি। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।”
সন্দীপবাবু পেশায় গৃহ শিক্ষক। এর আগে তিনি পাশেই বকুলতলাপাড়ায় থাকতেন। মাস আটেক আগে তিনি বেলতলায় জমি কিনে একটি টিনের বাড়ি বানান। আর তাতেই এলাকার কিছু যুবক তাঁর কাছ থেকে টাকা দাবি করতে থাকে। কিন্তু তিনি ওত টাকা দিতে অস্বীকার করেন। অভিযোগ, সেই কারণে দিন কয়েক আগে সন্দীপবাবুকে প্রাণে মারার হুমকিও দেয় ওই যুবকরা।
|
সন্দীপবাবু নিজের অবস্থানে অনড় থাকলে বুধবার রাত এগারটা নাগাদ এলাকার জনা কয়েক যুবক তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়। সন্দীপবাবু বলেন, “আমি ওদের দু’হাজার টাকা দিতে সম্মত হই। কিন্তু ওরা তাতে রাজি না হয়ে আমাকে গালাগাল করতে থাকে। ঘরের সব কিছু তছনছ করে। প্রতিবাদ করলে আমাকে মারধর করে। আমার স্ত্রী বাধা দিতে গেলে তাকেও মাটিতে ফেলে পেটায় ওই যুবকেরা। আমার দু’বছরের ছেলেকে মাটিতে ফেলে দেয়।” চিৎকার শুনে ছুটে আসেন প্রতিবেশীরা। আসেন সন্দীপবাবুর শ্বশুর বাড়ির লোকজন। অভিযোগ, ওই যুবকেরা সন্দীপ বাবুর শ্বাশুড়ি ও পড়শি হাসিরানী বিশ্বাসকেও পেটায়। খবর পেয়ে ছুটে আসেন এলাকার বাসিন্দা তথা দোগাছি পঞ্চায়েতের সদস্যা কংগ্রেসের সনিয়া দাস। তিনি বলেন, “অনেক আগেই ওই যুবকদের আমি সন্দীপবাবুর কাছে টাকার দাবি করতে নিষেধ করেছিলাম। কিন্তু ওরা না শুনে এ দিন ভাঙচুর চালাল।”
সন্দীপবাবুর বাড়ি কৃষ্ণনগর পুরসভা লাগোয়া এলাকায়। তাঁর বাড়ির পাশেই থাকেন পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহা। সন্দীপ বাবু বলে, “আমি একাধিক বার অসীমবাবুকে ওদের অত্যাচারের কথা বলেছি। কিন্তু কোনও ফল হয় নি।” এ দিন অসীমবাবু অবশ্য বলেন, “এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। ওই যুবকদের উপদ্রব করতে বারন করেছিলাম। তারপরও এমন ঘটনা ঘটাল। পুলিশকে বলেছি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করতে।” |