বেআইনিভাবে মদ বিক্রির খবর শুনে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে এসেছিল সামসেরগঞ্জ থানার পুলিশের গাড়ি। বৃহস্পতিবার দুপুরে নিমতিতা মোড়ে গাড়িটাকে থামতে দেখেই চম্পট দিয়েছিল মদের ক্রেতা বিক্রেতা সকলেই। পাশের গ্রাম ধানগড়া থেকে নিমতিতায় দাদুর বাড়িতে বেড়াতে আসা বছর দশেকের মফিউল বসেছিল পাড়ার তেলেভাজার দোকানে। বেশ অবাক হয়েই সে লোকজন ও পুলিশের দৌড় দেখছিল। অভিযোগ, পুলিশ মদের কারবারিদের না পেয়ে বেধড়ক মারধর করেছে মফিউলকেই। তাকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক সংগ্রাম চক্রবর্তী বলেন, “মফিউলের সারা শরীরে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। এ ধরণের আঘাত মারধর বা পড়ে গিয়ে হতে পারে। তবে মফিউল জানিয়েছে যে পুলিশ তাকে মারধর করেছে। হাসপাতালে তার বক্তব্যও নথিভূক্ত করা হয়েছে।”
|
দিন দু’য়েক আগে নিমতিতায় দাদুর বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল মফিউল। হাসপাতালের শয্যায় শুয়ে মফিউল বলে, ‘‘এ দিন দুপুরে দাদুর বাড়ির পাশেই এক তেলেভাজার দোকানে বসেছিলাম। হঠাৎ গাড়ি থেকে কয়েকজন পুলিশকে নামতে দেখে লোকজন ছুটে পালায়। আমি ওই দোকানেই বসেছিলাম। পুলিশ এদিক, ওদিক ছোটাছুটি করে কাউকে ধরতে না পেরে আমাকে এসে বলে, আমিই নাকি পুলিশ আসার খবর দিয়েছি। এরপর চড় থাপ্পড় মারতে শুরু করে। পালাতে গিয়ে পড়ে যাই। তখন ওরা সবাই মিলে লাথি মারতে থাকে।”
মফিউলরা তিন ভাই থাকে বিধবা মায়ের কাছে। দিদিমা রেনু বিবি বলেন, “ছেলেটা ক’দিনের জন্য বেড়াতে এসেছিল। কিন্তু এসব কী হয়ে গেল বলুন তো?” তিনি বলেন, “পুলিশ নাতিকে মারছে খবর পেয়েই ছুটে যাই। গিয়ে দেখি বাপ মরা ছেলেটাকে ওরা বিনা কারণে মারছে। পুলিশ এসেছিল বেআইনিভাবে যারা মদ বিক্রি করে তাদের ধরতে। আমার নাতি কী অন্যায় করেছিল যে পুলিশ এ ভাবে মারল!”
নিমতিতা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সিপিএমের নজরুল ইসলাম বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে ওই ছেলেটাকে পুলিশ মারধর করেছে। ওদের মধ্যে একজন সাব ইন্সপেক্টরও ছিলেন। পুলিশের মারে ছেলেটি সংজ্ঞা হারিয়ে ফেলেছিল। পুলিশ কিন্তু এটা ঠিক করল না।”
মুর্শিদাবাদের পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘‘তল্লাশিতে গিয়ে পুলিশ বছর দশেকের ওই ছেলেটিকে মারল কেন বুঝতে পারছি না। কী ঘটেছে আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। মারধরের ঘটনা যদি সত্যি হয় তাহলে জড়িত পুলিশকর্মীদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |