বিয়ের সময়ে স্ত্রীর নামে তিন বিঘা জমি লিখে দিয়েছিলেন প্রৌঢ় পাত্র। তবে, শর্ত ছিল, ‘সম্পর্ক’ ভাঙলে জমি ফিরিয়ে দিতে হবে। তেরো বছর পরে বিয়ে ভেঙে গেলে সে জমিই উদ্ধার করতে যান মুর্শিদাবাদের বুধরাপাড়া গ্রামের আজিবুর শেখ। বচসা ক্রমে হাতাহাতিতে গড়ায়। সেই সময়ে কন্যা-পক্ষের লোকজন আজিবুর ও তাঁর তিন সঙ্গীকে কুপিয়ে খুন করে।
বৃহস্পতিবার সেই মামলার রায় দিয়েছেন কান্দির ফাস্ট ট্র্যাক কোর্টের বিচারক চিন্ময় চট্টোপাধ্যায়। অভিযুক্ত ৯ জনেরই যাবজ্জীবন হয়েছে।
খড়গ্রামের বুধরাপাড়ার আজিবুর শেখ দ্বিতীয়বার যখন বিয়ের পিঁড়িতে বসেছিলেন, বয়স প্রায় চল্লিশ। পাত্রী, কাকার মেয়ে মেরিনা খাতুন। মেরিনার বয়স তখন সাকুল্যে তেরো। এমন অসম বয়সী স্বামী-স্ত্রী’র বিয়ের শর্তই ছিল, আজিবুর স্ত্রীর নামে তাঁর তিন বিঘা জমি রেজিস্ট্রি করে দেবেন। তবে বিয়ে ভেঙে গেলে সে জমি ফিরিয়েও দিতে হবে কন্যাপক্ষকে।
১৯৯৬-এ বিয়ের পর মেরিনাকে নিয়ে সুখেই দিন কাটছিল আজিবুরের। কিন্তু ২০১০ সালে সে বিয়ে ভেঙে মেরিনা নিকাহ করে বসেন ভগবানগোলার এক যুবককে। আজিবুর অবশ্য তাতে বিশেষ আপত্তি তোলেননি। তবে, বিয়ে ভাঙতেই তেরো বছর আগের সেই শর্তের কাগজপত্র নিয়ে সটান হাজির হয়েছিলেন মেরিনার বাড়িতে।
কিন্তু শর্ত মানতে তো! শস্য ভরা সেই তিন বিঘা জমি ফিরিয়ে দিতে বেঁকে বসেন মেরিনা ও তাঁর পরিবারের লোকজন। শুরু হয় বচসা। তখনকার মতো ফিরে এলেও জনা কয়েক সঙ্গী জুটিয়ে পরের দিন আজিবুর সোজা পা রাখেন সেই জমিতে। দখল নিতে জমি ঘিরে দিতে থাকেন বাঁশ দিয়ে। বিবাদ এ বার হাতাহাতিতে গড়ায়। সেই সময়ে আজিবুর ও তাঁর তিন সঙ্গীকে হাঁসুয়া ও দা দিয়ে কুপিয়ে খুন করে মেরিনার পরিবারের লোকজন। প্রায় চার বছর ধরে মামলা চলার পরে বৃহস্পতিবার রায় দিয়েছেন বিচারক। |