|
|
|
|
পাকা চাকরির দাবি মৎস্যখটির কর্মীদের
সুব্রত গুহ • কাঁথি |
রাজ্যে পালা পরিবর্তন হয়েছে। কিন্তু ওদের অবস্থার কোনও পরিবর্তন হয়নি। মৎস্য দফতরের সামুদ্রিক মৎস্যখটিগুলির অস্থায়ী কর্মীরা (স্বাস্থ্যকর্মী, সাফাইকর্মী ও নিরাপত্তারক্ষী) এখনও সরকার নির্ধারিত ন্যূনতম মজুরির চেয়ে অনেকটা কম পান। তা-ও গোটা বছর নয়, মাত্র সাত মাসের পারিশ্রমিক পান তাঁরা। সারা রাজ্যে প্রায় শ’খানেক এমন কর্মী থাকলেও শুধুমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলাতেই এদের সংখ্যাটা ৫৫। তিন দশক ধরে আবেদন-নিবেদন জানিয়েও কাজ না হওয়ায় এ বার তাঁরা স্থায়ীকরণ ও বারো মাস কাজের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের পথে নামতে চলেছেন। সম্প্রতি এই নিয়ে কাঁথির মহকুমাশাসকের কাছে ডেপুটেশনও দিয়েছে কাঁথি মহকুমা মেরিন খটি কর্মচারী সমিতি।
সংগঠনের সম্পাদক বাবলুকুমার গিরি বলেন, “খটির কর্মীদের বেতন-বৃদ্ধি আর স্থায়ীকরণের দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরেই বিভিন্ন মহলে আবেদন-নিবেদন জানিয়েছি আমরা। কিন্তু রাজ্য মৎস্য দফতর স্থায়ীকরণ নিয়ে কোনও আশার কথা শোনাতে পারেনি। নতুন রাজ্য সরকারের অর্থ দফতর থেকে ২০১৩ সালে অস্থায়ী কর্মীদের জন্য ন্যূনতম যে বেতন হার ধার্য করা হয়েছে, তা থেকেও মৎস্যখটির কর্মীদের বঞ্চিত করে চলেছে রাজ্য মৎস্য দফতর।”
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, আশির দশকে মৎস্য দফতর রাজ্যের উপকূলের মৎস্যখটিগুলিতে মাসিক ৫০০ টাকার চুক্তিতে ২৫ জন মেডিক্যাল অ্যাটেনডেন্ট ও মাসিক ৩০০ টাকা চুক্তিতে ৩০ জন সাফাইকর্মী ও নিরাপত্তারক্ষীকে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করে। কাঁথি মহকুমা মেরিন খটি কর্মচারী সমিতির সভাপতি আশিসকুমার পণ্ডার কথায়, “অস্থায়ী ভাবে নিযুক্ত হলেও ভবিষ্যতে স্থায়ীকরণের আশায় ছিলেন নিযুক্তেরা। কিন্তু সেই আশা পূরণ হয়নি।” যদিও একাধিক আন্দোলনের ফলে মেডিক্যাল অ্যাটেনডেন্টদের পারিশ্রমিক মাসিক ৫০০ টাকা থেকে বেড়ে বতর্মানে ৩ হাজার টাকা ও অন্যদের পারিশ্রমিক মাসিক ৩০০ টাকা থেকে বেড়ে ২ হাজার টাকা করা হয়েছে। তবে, আগের মতোই এখনও বছরে মাত্র সাত মাস বেতন মেলে। অথচ, এখন প্রায় সারা বছর ধরেই খটিগুলি খোলা থাকে বলে দাবি সমিতির সম্পাদক বাবলুকুমার গিরির।
মৎস্যখটির কর্মীদের স্থায়ী করা হচ্ছে না কেন?
সহ-মৎস্য অধিকর্তা (সামুদ্রিক) সুরজিৎ বাগ জানিয়েছেন, খটিগুলিতে অস্থায়ী ভাবে কর্মরত ৫৫ জন কর্মীর মধ্যে ৩১ জনকে স্থায়ী করার জন্য ২০১১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি একটি তালিকা রাজ্যের মৎস্য অধিকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু আইনি জটিলতায় স্থায়ীকরণ সম্ভবপর হয়নি। সুরজিৎবাবু বলেন, “মৎস্যখটির কর্মীরা যেহেতু সরকারি নিয়মানুসারে বছরে আট মাস বা ২৪০ দিন একটানা কাজ করেন না, তাই আইনগত জটিলতা থাকার ফলেই তাঁদের স্থায়ীকরণ করায় সমস্যা রয়েছে।” মৎস্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সরকার নির্ধারিত হারে খটি কর্মচারীদের বেতন দেওয়ার আগে তাঁদের আরও কিছু কাজের সঙ্গে যুক্ত করার ভাবনা চলছে। আপাতত নতুন কী কী কাজ তাঁদের দেওয়া হবে তাই নিয়ে দফতরে আলোচনা চলছে। নতুন কাজগুলি বুঝিয়ে দেওয়ার পরে সরকার নির্ধারিত হারে বেতন বৃদ্ধি করার আশ্বাস দিয়েছেন মৎস্য আধিকারিক। |
|
|
|
|
|