বন্যায় ভেঙেছে পুরনো, নতুন সেতু হাতিহল্কায়
ভাঙা সেতু। চারপাশে অজস্র ফাটল, ফাঁকফোকর। বেহাল সেই সেতু দিয়েই বিপজ্জনক ভাবে চলছে পারাপার। যাচ্ছে সাইকেল-মোটর সাইকেল, এমনকী লরিও। যা পরিস্থিতি তাতে মেদিনীপুর সদর ব্লকের হাতিহল্কার সেতুটি যে কোনও সময় ভেঙে দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। ভাঙা সেতু আর মেরামত সম্ভব নয়। তাই নতুন সেতু তৈরির দাবি জানিয়েছিলেন স্থানীয়রা। সেই মতো পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা পরিষদ নতুন সেতু তৈরির তোড়জোড় শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার বাস্তুকারদের নিয়ে এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা পরিষদের পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ শৈবাল গিরি। সেতু দেখে তাঁর স্বীকারোক্তি, “সত্যিই পরিস্থিতি খুব খারাপ। যে কোনও সময়ে ভেঙে পড়তে পারে।” একই সঙ্গে পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের আশ্বাস, “নতুন সেতু হবে। আমরা প্রকল্প তৈরি করছি। অর্থ দেবে পঞ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ।”
গত মে মাসের বন্যায় সেতুটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পরে অক্টোবরের বন্যায় ক্ষতির বহর বাড়ে। সেতুটি ভেঙে পড়ে। তারপর সাময়িক মেরামত হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হয়নি। জেলা পরিষদ কর্তৃপক্ষের দাবি, নতুন সেতু আকারে পুরনো সেতুর থেকে বড় হবে। তা দিয়ে একসঙ্গে দু’টো লরি চলাচল করতে পারবে। পূর্ত কর্মাধ্যক্ষের সঙ্গে এ দিন এলাকায় আসেন সেচ দফতরের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার সুব্রত মজুমদার, জেলা পরিষদের এক্সিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার অরুণ রায় প্রমুখ। ইতিমধ্যে নতুন সেতুর জন্য মাটি পরীক্ষা শুরু হয়েছে।
হাতিহল্কার সেই দুর্বল সেতু। ছবি: রামপ্রসাদ সাউ।
মেদিনীপুর সদর ব্লকের এই এলাকাটি বেশ তাৎপর্যময়। হাতিহল্কা থেকে দেড় কিলোমিটার দূরেই রয়েছে পাথরা। একাধিক প্রাচীন মন্দিরের সূত্রে এই এলাকা ‘মন্দিরময় পাথরা’ হিসেবে পরিচিত। মন্দিরগুলির সংস্কার হয়েছে। দুই মেদিনীপুর তো বটেই, আশপাশ থেকেও অনেকে পাথরায় আসেন। তখন হাতিহল্কার বিপজ্জনক সেতু পেরিয়েই যাতায়াত করতে হয়। পাথরা পুরাতত্ত্ব সংরক্ষণ কমিটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক মহম্মদ ইয়াসিন পাঠান বলেন, “সেতুর অবস্থা দেখে ভয় হয়। চারপাশে কত ফাটল। নতুন সেতু হলে এলাকার মানুষ উপকৃত হবেন।” সেতুর একদিকে রয়েছে পাথরা গ্রাম পঞ্চায়েত, অন্যদিকে পাঁচখুরি-২ গ্রাম পঞ্চায়েত। সব মিলিয়ে ৩০টি গ্রামের মানুষ এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করেন। স্থানীয় বাসিন্দা হাকিম গায়েন, অহিত খাঁ, তারক হালদারদের কথায়, “ভাঙা সেতু দিয়ে প্রচুর সাইকেল, মোটর সাইকেল, লরি চলাচল করে। যোগাযোগের যে অন্য রাস্তা নেই।”
এটি নিচু এলাকা। পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে কংসাবতী নদী। ফলে, বন্যার সময়ে সেতুর উপর জল উঠে যায়। ইয়াসিন পাঠান বলছিলেন, “বন্যা হলেই গোটা এলাকা জলের তলায় চলে যায়। সেতুর উপর প্রায় ৮ ফুট জল থাকে।” পরিস্থিতি দেখে নতুন সেতু তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে জেলা পরিষদ। আনুমানিক ব্যয় ৫ কোটি টাকা। জেলার আরও কয়েকটি ভগ্নপ্রায় সেতুও নতুন করে তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে। শৈবালবাবুর কথায়, “আরও কয়েকটি বেহাল সেতু সংস্কার করা সম্ভব নয়। পাশে নতুন সেতু তৈরি করতে হবে।” এ দিন খড়্গপুর-১ ব্লকের কেশপালের বেহাল সেতুও পরিদর্শন করেন তিনি। ভাঙা সেতুর এক দিকে কেশপাল। অন্য দিকে বড়কলা। এই রাস্তা ধরে কম সময়ে মানিকপাড়া হয়ে ঝাড়গ্রামে পৌঁছনো যায়। এই সেতুটিও দীর্ঘদিন ধরে জীর্ণ। স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীর মান্নার কথায়, “প্রচুর মানুষ এই পথে ঝাড়গ্রাম যান। কয়েক বছর হল সেতুটি ভেঙেছে। কিন্তু মেরামত হয়নি।” পূর্ত কর্মাধ্যক্ষ জানান, কেশপালেও নতুন সেতু হবে। জেলা পরিষদ সূত্রে খবর, গড়বেতা-১ ব্লকের চাঁপাখাল এবং নয়াগ্রামের কেশরেখার ভাঙা সেতুর পাশেও নতুন সেতু তৈরির পরিকল্পনা করা হচ্ছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.