দিনের আলোয় গাড়িতে তুলে ধর্ষণ মেদিনীপুরে
ব্যস্ত এলাকা থেকে দিনেদুপুরে এক যুবতীকে গাড়িতে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠল মেদিনীপুর শহরে। পরে ধর্ষণে অভিযুক্ত তিন জন যুবতীটিকে খুনের চেষ্টাও করে বলে অভিযোগ। আশঙ্কাজনক অবস্থায় যুবতী এখন মেদিনীপুর মেডিক্যালে চিকিৎসাধীন। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারের জন্য তাঁদের চাপ দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার দুপুরে ওই ঘটনার পরে, রাতেই মেদিনীপুর কোতয়ালি থানায় অভিযোগ দায়ের করেন যুবতীর মা। বুধবার রাতে মঙ্গল দাস নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে পুলিশ। বছর তিরিশের বিবাহিত ওই যুবকের বাড়ি মেদিনীপুর শহর লাগোয়া কালগাঙে। বৃহস্পতিবার মঙ্গলকে মেদিনীপুরের ভারপ্রাপ্ত সিজেএম শুভ্রসোম ঘোষাল ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত পুলিশ-হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার ভারতী ঘোষ বলেন, “তদন্ত চলছে। এক অভিযুক্তকে ধরা হয়েছে। অন্য দু’জনের খোঁজ চলছে।” পুলিশ সূত্রের খবর, প্রাথমিক তদন্তে ধর্ষণের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ।
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সদর শহরে আদালতের সামনে থেকে দিনেদুপুরে এক তরুণীকে এ ভাবে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের ঘটনার পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশ প্রশ্ন তুলেছেন নিরাপত্তা নিয়ে। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, নাগরিকদের উদ্বিগ্ন হওয়ার কারণ নেই। এটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। তবে দিন কয়েক আগেই রাজ্যে তোলপাড় ফেলে দেওয়া মধ্যমগ্রাম-কাণ্ডের পরে, ধর্ষিতা বা তাঁর পরিবারের নিরাপত্তার বিষয়টি নেহাত উড়িয়ে দেয়নি জেলা পুলিশ।
পুলিশ সুপারের আশ্বাস, “নিরাপত্তার বিষয়টি আমরা দেখছি।” পুলিশ সূত্রের খবর, প্রয়োজনে ওই তরুণীর ওয়ার্ডে পুলিশ মোতায়েন করা হবে। এ দিন হাসপাতালে ধর্ষিতার পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন পুলিশ সুপার।
মধ্যবিত্ত পরিবারের বছর তিরিশের ওই যুবতীর বাড়ি বেলদায়। ২০০২-এ কলকাতার এক যুবকের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়েছিল। তাঁর আট বছরের একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের কয়েক বছরের মধ্যেই স্বামীর মনোমালিন্য হওয়ায় ছেলেকে নিয়ে বাপের বাড়িতে চলে আসেন তিনি। বিবাহ বিচ্ছেদের মামলাও করেন। যুবতীর স্বামী এখন কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন। মেদিনীপুর আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা চলছে। ওই আদালত চত্বরেই ফটো-কপি করার দোকান রয়েছে মঙ্গলদের। মঙ্গলই বেশিরভাগ সময় দোকানে থাকেন। কোর্টের কাগজপত্র ফটো-কপি করাতে গিয়ে ওই তরুণীর সঙ্গে আলাপ হয় মঙ্গলের।
মামলার দিন থাকায় মঙ্গলবার সকালেই আদালতে এসেছিলেন ওই তরুণী। কাজ সেরে দুপুর ২টো নাগাদ বেলদা ফেরার বাস ধরার জন্য ওই মহিলা কোর্ট চত্বরের বাইরে অপেক্ষা করছিলেন। অভিযোগ, সেই সময় গাড়িতে দুই সঙ্গীকে নিয়ে এসে মঙ্গল আচমকা তাঁর মুখে কাপড় চেপে ধরে, তাঁকে গাড়িতে তুলে নেয়। পুলিশের অনুমান, গোপগড়ের জঙ্গলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করা হয় যুবতীটিকে। ওই দিন সন্ধ্যার মুখে ফের গাড়িতেই তাঁকে নামিয়ে দেওয়া হয় জগন্নাথমন্দির চক এলাকায়। যুবতী তখন অচেতন। তাঁর মাথাতেও আঘাত ছিল। স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে মেদিনীপুর মেডিক্যালে ভর্তি করান। হামলাকারীদের মধ্যে মঙ্গলকে যুবতী চিনতে পেরেছিলেন বলে অভিযোগপত্রে তার নাম ছিল। মঙ্গলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে বাকি দু’জনের খোঁজ পাওয়ার চেষ্টা করছে পুলিশ। মঙ্গলের পরিবার অবশ্য এ ব্যাপারে মন্তব্য করতে চায়নি।
যুবতী এ দিনও কথা বলার অবস্থায় ছিলেন না। হাসপাতালে তাঁর মা মাথার কাছে বসে রয়েছেন। বললেন, “অন্য দিন বাড়ির কেউ না কেউ ওর সঙ্গে আদালতে আসে। আমিও কত বার এসেছি আগে। মঙ্গলবার ও একা-একাই এসেছিল। আর সে দিনই এই ঘটনা ঘটল!” তরুণীর ভাই বলেন, “যারা দিদির সঙ্গে এমন আচরণ করেছে, তাদের চরম শাস্তি চাই।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.