চেয়ার পেতে জনতার দরবারে নালিশ শুনবেন অরবিন্দরা

৯ জানুয়ারি
প্রেমটা ছিল বেশ পুরনো। হয়তো আগামী বছরেই চার হাত এক হত। কিন্তু দিল্লির চলতি ঠান্ডায় সেই সম্পর্কেও যেন শৈত্যের ছোঁয়া। প্রেমিকার মন কি আর মানে ! প্রেমিকের চিন্তায় নাওয়া -খাওয়া শিকেয়। কিন্তু প্রেমিক তো আর ফোন ধরে না। প্রেমিকারও ঘুম আসে না। শেষমেশ প্রেমিককে বাগে আনতে মুশকিল আসানের দ্বারস্থ প্রেমিকা।
কথা হচ্ছিল দিল্লির নতুন মুশকিল আসানের। নাম অরবিন্দ কেজরিওয়াল। দিল্লির নতুন মুখ্যমন্ত্রী।
মন মেলানোর ওই মামলায় শেষে কাজির ভূমিকা অবশ্য নেননি কেজরিওয়াল। কিন্তু অভিযোগ আসা তাতে থামেনি। প্রেমিক -প্রেমিকার মনোমালিন্য থেকে স্বামী -স্ত্রীর হাতাহাতি ! দিল্লিবাসীর সমাধানে একটাই মেড ইজিকেজরিওয়াল।
ব্যক্তিগত জীবনে ঘোর বাস্তববাদী। কিন্তু দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীর নতুন ইনিংস হার মানায় বলিউডি চিত্রনাট্যকেও। অনিল কপূর অভিনীত নায়কের মতো এখানেও অরবিন্দ কেজরিওয়াল হলেন সেই মুখ্যমন্ত্রী যিনি কাউকে রেয়াত করেন না। যিনি দুর্নীতির গন্ধ পেলেই এক নির্দেশে আটশো অফিসারকে বদলি করতে দু’বার ভাবেন না। যাঁর দুর্নীতি হেল্পলাইন শুরুর সাত ঘণ্টায় চার হাজার অভিযোগ জমা পড়ে। যিনি রাজনীতিতে কার্যত ভুঁইফোড় হয়েও অগণিত ভারতবাসীকে স্বপ্ন দেখাচ্ছেন কেন্দ্রে বিকল্প সরকারের। যাঁর ধূমকেতুসম উত্থানে কেঁপে গিয়েছে গোটা বিজেপি শিবির। যার কারণে দুশ্চিন্তায় বিজেপির প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী নরেন্দ্র মোদীও।
অরবিন্দের ঘোড়াকে রুখতে যখন পরিকল্পনায় ব্যস্ত গোটা বিজেপি শিবির, তখন অরবিন্দের কাছে পাখির চোখ সেই জনতাই। আম -আদমির ভোটে জিতে আসা অরবিন্দ ভালই জানেন, জনতাই তাঁর সম্বল। তাই ক্ষমতায় আসার পরই একের পর জনমুখী সিদ্ধান্ত বেরিয়েছে কেজরিওয়ালের হাত থেকে।
লোকসভা নির্বাচন এগিয়ে আসছে। আর মানুষ চাইছেন দ্রুত সমাধান। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, দুর্নীতির সঙ্গে রয়েছে ব্যক্তিগত সমস্যাও। মানুষ চান এক নিমেষে কিছু করে দেখান কেজরিয়াল। চটজলদি সমাধান দিতে আম -জনতাকে তাই প্রতি শনিবার তাঁর দরবারে আসতে বলছেন কেজরিওয়াল। দুর্নীতি কিংবা জল বন্ধ, বিষয় হতে পারে যে সব কিছুই। রোগ যাই হোক না কেন, নিদান দিতে তিনি নিজে উপস্থিত থাকছেন শনিবারের বারবেলায়। সাহায্য করতে উপস্থিত থাকছেন মন্ত্রিসভার সতীর্থরাও। আপাতত ঠিক হয়েছে, প্রতি শনিবার কেজরিওয়াল তাঁর মন্ত্রীদের নিয়ে দিল্লি সচিবালয়ের সামনের রাস্তায় চেয়ার পেতে বসবেন। যেখানে এসে মানুষ তাঁদের অভিযোগ জানাতে পারবেন। কেজরিওয়াল বলেন, “নিরাপত্তার কারণে অনেক মানুষ আমার কাছে পৌঁছতে পারছেন না। তাই এই ব্যবস্থা। এখানে নিরাপত্তার বালাই থাকবে না। তবে আমি কেবল শনিবার বসব।”
রাজ্য সামলানোর চাপও রয়েছে। তাই সপ্তাহের অন্য দিনগুলি মুখ্যমন্ত্রীর চেয়ার পেতে বসা সমস্যা। কিন্তু তিনি না থাকলেই বা কী ! তাঁর হয়ে মন্ত্রিসভার কোনও না কোনও সদস্য অভিযোগ শুনবেন। চরিত্র বুঝে সে সব তাঁরা পাঠাবেন সংশ্লিষ্ট দফতরে। মুখ্যমন্ত্রী বললেন, “সারা সপ্তাহ কোনও না কোনও মন্ত্রী সচিবালয়ের সামনে থাকবেন। চিকিৎসা বা হাসপাতালে পাঠানোর মতো আপৎকালীন বিষয় তাঁরাই দেখবেন।”
কিন্তু গোলাপে কাঁটাও থাকে। মানুষ তাঁর উপর ভরসা করতে শুরু করেছেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কেজরিওয়াল তার মান রাখতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় রয়েছে দলেই। বেশ কিছু সমস্যা আছে, যেগুলির সমাধান সময়সাপেক্ষ। অথচ মানুষ চান সব কিছুর দ্রুত সমাধান। আগামী দিনে কী ভাবে জনতার সেই চ্যালেঞ্জ তিনি সামলান, এখন সেটাই দেখার।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.