|
|
|
|
জোট প্রশ্নে দ্বিধায় বিহার কংগ্রেস, ভার দিল্লিকেই
নিজস্ব সংবাদদাতা • পটনা
৯ জানুয়ারি |
আরজেডি না জেডিইউ, বিহারে কংগ্রেস কার হাত ধরবে, তা নিয়ে স্পষ্টতই দ্বিধায় দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। দ্বিধায় বিহার কংগ্রেসও। বিহারে দলের একাংশ যখন পুরনো বন্ধু লালুপ্রসাদ যাদবের সঙ্গেই থাকতে চান, তখন বাকিরা চান নীতীশের হাত ধরতে। তাই বিহারের দায়িত্বপ্রাপ্ত এআইসিসি -র দুই সম্পাদক শেষ পর্যন্ত বিষয়টি নিয়ে সিদ্ধান্তের ভার দিল্লিতে দলের শীর্ষ নেতৃত্বের উপরে ছেড়ে দিয়েছেন। ১৭ জানুয়ারি দিল্লিতে এআইসিসি -র বৈঠকে এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান তাঁরা।
নীতীশ বিজেপি -র সঙ্গ ত্যাগ করার পর থেকেই তাঁর সঙ্গে জোট গড়া নিয়ে গুঞ্জন শুরু হয়েছে কংগ্রেসের অন্দরে। রাহুল গাঁধী বিষয়টি নিয়ে দু’দফায় রাজ্য নেতাদের সঙ্গে দিল্লিতে বৈঠকও করেন। কিন্তু তার পরেও বিহারে নির্বাচনী সমঝোতার ব্যাপারে কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি দল। বিহার কংগ্রেসের একাংশের মতে, লালু এবং রামবিলাস, দু’জনেই দু’টি ইউপিএ সরকারকে সমর্থন দিয়েছেন। সুতরাং তাঁদের সঙ্গেজ় জোট গড়ে নির্বাচনে যাওয়া ভাল। ২০০৪ সালের ভোটে তিনটি দলই ভাল ফল করে। ২০০৯ সালে আসন ভাগাভাগি নিয়ে জটিলতা থাকায় প্রাক্ -নির্বাচনী জোট হয়নি। ফলে তিন দলেরই ফল খারাপ হয়। কংগ্রেসের এক রাজ্য নেতার বক্তব্য, “অতীত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে লালু এ বার অনেক বেশি নমনীয় হবেন বলেই মনে করা হচ্ছে। প্রাথমিক আলোচনায় তেমন ইঙ্গিতও মিলেছে।”
এই পরিস্থিতিতে আজ রাহুলের বাসভবনে তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন লালুপ্রসাদ। অনেকে মনে করছেন, লালুর দিকেই ঝুঁকে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব। বস্তুত কংগ্রেসের অধিকাংশ বর্ষীয়ান নেতা লালুর সঙ্গে জোট গড়ার ব্যাপারে আগ্রহী। এমনকী কংগ্রেস সূত্র বলছে, সনিয়া গাঁধীও তাই চান। এত দিন সেই জোটের পথে বাধা বলতে ছিলেন রাহুলই। তিনি নীতীশের দিকে ঝুঁকে ছিলেন। সে দিক থেকে রাহুল -লালু আজকের বৈঠকের মাত্রাটাই অন্য রকম। এই বৈঠক দু’পক্ষের জোট সম্ভাবনা অনেকটাই বাড়িয়েছে বলে মনে করছেন কংগ্রেসের অনেকেই।
কংগ্রেসের নীতীশপন্থীরা অবশ্য এখনও জোট নিয়ে আশাবাদী। তাঁদের বক্তব্য, সময় থাকতে জেডিইউ -এর সঙ্গে আলোচনা দ্রুত শুরু করা উচিত। ইতিমধ্যেই বামেদের সঙ্গে নীতীশের আলোচনা শুরু হয়েছে। বেশি দেরি করলে কংগ্রেসকে ভুগতে হবে। এই শিবিরের বক্তব্য, দুর্নীতির মামলায় লালু দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। এখন জামিনে মুক্ত থাকলেও নির্বাচনে ওই মামলার প্রভাব পড়তে পারে। যদিও কংগ্রেসের অনেকে আবার মনে করছেন, বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে নীতীশ কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যাবেন কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। রাজ্যের বিশেষ মর্যাদার প্রশ্নে কেন্দ্রকে কাঠগড়ায় তুলে নীতীশ যে ভাবে সরব হয়েছেন, তাতে তাঁর পক্ষে জোটে সামিল হওয়া কঠিন। বিহারকে বিশেষ মযার্দার বিষয়টি একেবারেই নীতীশের নিজস্ব ‘অ্যাজেন্ডা’। নির্বাচনে এটাকেই যে তিনি প্রচারের হাতিয়ার করবেন, তা জানিয়েও দিয়েছেন। যদিও লোকসভা ভোটে নীতীশের সামনে মূল প্রশ্ন হয়ে দাঁড়াতে পারে, তিনি কোন পক্ষে? মোদী না কংগ্রেস? সে ক্ষেত্রে তীব্র মোদী -বিরোধী নীতীশ কংগ্রেসের দিকেই ঝুঁকতে পারেন বলে কংগ্রেসের নীতীশপন্থীরা।
রাজ্যের ৪০টি লোকসভা আসনে কংগ্রেসের কী অবস্থা, তা খতিয়ে দেখতে রাজ্য এবং জেলা নেতাদের সঙ্গে দু’দিন বৈঠক করেছেন বিহারের ভারপ্রাপ্ত এআইসিসি -র সম্পাদক কে এল শর্মা এবং পরেশ ধানানি। রাজ্য কংগ্রেসের সহ -সভাপতি তথা মুখপাত্র প্রেমচন্দ্র মিশ্রের কথায়, “মূলত রাজ্যের নেতাদের মনোভাব জানতে এবং ৪০টি লোকসভা আসনে দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি জানতে ওঁরা এসেছেন।” |
|
|
|
|
|