ধুঁকতে থাকা স্মার্টফোন বহুজাতিক ব্ল্যাকবেরিতে আরও ২৫ কোটি ডলার ঢালবে ভারতীয় বংশোদ্ভুত প্রেম বত্সের সংস্থা ফেয়ারফ্যাক্স ফিনান্সিয়াল হোল্ডিংস। গত বছর সেপ্টেম্বরে কানাডার ওই স্মার্টফোন নির্মাতাকে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিল যারা।
বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে ব্ল্যাকবেরি জানিয়েছে, আগামী ১৬ জানুয়ারির মধ্যেই আরও ২৫ কোটি ডলারের কনভার্টিব্ল ডিবেঞ্চার (ঋণপত্র) কিনবে ফেয়ারফ্যাক্স। পরে যা বদলে নেওয়া যাবে সংস্থার শেয়ারে।
গত সেপ্টেম্বরে কথা হয়েছিল যে, অ্যাপল, গুগ্ল, স্যামসাংয়ের মতো সংস্থার কাছে ক্রমশ বাজার হারাতে থাকা স্মার্ট ফোন বহুজাতিকটিকে শেয়ার-পিছু ৯ ডলার দরে কিনে নেবে ফেয়ারফ্যাক্স। এ জন্য মোট ৪৭০ কোটি ডলার উপুড় করবে কানাডার বিমা ও আর্থিক পরিষেবা সংস্থাটি। কিন্তু পরে সেই পরিকল্পনা বাতিল করতে বাধ্য হয় ব্ল্যাকবেরি। ঠিক হয়, তার বদলে যে সব আর্থিক সংস্থার হাতে ব্ল্যাকবেরির শেয়ার রয়েছে, তাদের কাছ থেকে ডিবেঞ্চারের (ঋণপত্র) মাধ্যমে ১০০ কোটি ডলার তুলবে তারা। ঢেলে সাজার চেষ্টা হবে সংস্থাকে।
তখন ওয়াকিবহাল মহল মনে করেছিল, ফেয়ারফ্যাক্সের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে ৪৭০ কোটি ডলার জোগাড় না-করতে পারার কারণেই বিক্রি থমকে গেল ব্ল্যাকবেরির। তবে তখনই জানা গিয়েছিল, টাকা জোগাড়ের জন্য যে ১০০ কোটি ডলারের ডিবেঞ্চার তারা ছাড়বে, সংস্থার বৃহত্তম অংশীদার (প্রায় ১০%) হওয়ার দৌলতে তার মধ্যে ২৫ কোটি ডলারের ঋণপত্র কিনবে ফেয়ারফ্যাক্সই। সব মিলিয়ে প্রায় ১০০ কোটি ডলার লগ্নি করতে পারে তারা। পরে ওই ডিবেঞ্চার শেয়ারে বদলে নেওয়ার সুযোগ খোলা রাখা হবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, সেই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবেই ফেয়ারফ্যাক্সের এই বিনিয়োগ।
উল্লেখ্য, মোবাইলে প্রথম ই-মেল পরিষেবা চালু করে ব্ল্যাকবেরি। সেই অর্থে স্মার্ট ফোনের পথিকৃত্ তারাই। কিন্তু পরে অ্যাপলের আই-ফোন, গুগ্লের অ্যান্ড্রয়েড এবং তা ব্যবহার করে স্যামসাংয়ের নিত্য-নতুন উদ্ভাবনের সঙ্গে অনেক দিন ধরেই প্রতিযোগিতায় এঁটে উঠতে পারছিল না তারা। ক্রমশ হাতছাড়া হচ্ছিল বাজার। লোকসানের বোঝা কমাতে সংস্থা বাধ্য হচ্ছিল বিপুল সংখ্যায় কর্মী ছাঁটাই করতেও। এই পরিস্থিতিতেই ব্ল্যাকবেরিকে কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেয় প্রেম বত্সের ফেয়ারফ্যাক্স। কানাডার ওয়ারেন বাফে হিসেবে খ্যাত বত্স জানান, দীর্ঘ মেয়াদে ব্ল্যাকবেরির ঘুরে দাঁড়ানোর সম্ভাবনা উজ্জ্বল বলেই এই বিনিয়োগ করতে আগ্রহী তাঁরা। কিন্তু তার জন্য প্রয়োজনীয় টাকা জোগাড়ে জটিলতা তৈরি হওয়ার কারণেই সম্ভবত অন্তত তখনকার মতো থমকে যায় ব্ল্যাকবেরির হাতবদল। |