পশ্চিমবঙ্গ থেকে পণ্য আমদানি করতে চায় আন্তর্জাতিক হাইপার মার্কেট সংস্থা লুলু হাইপার মার্কেটস। এ ব্যাপারে সুবিধা অসুবিধা খতিয়ে দেখতে বৃহস্পতিবার সংস্থার কর্তারা কলকাতায় বেঙ্গল চেম্বার অব কমার্স এবং নন রেসিডেন্ট ওভারসিজ অ্যাসোসিয়েসন অব বেঙ্গল (এনআরওএবি) আয়োজিত এক বাণিজ্য সম্মেলনে যোগ দেন। কেবল লুলু গোষ্ঠীই নয়, পশ্চিমবঙ্গে শিল্প স্থাপন-সহ ব্যবসার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে ৩৫ জন বাণিজ্য প্রতিনিধি সম্মেলনে সামিল হন।
দীর্ঘ দিন ধরেই প্রাধানত অনাবাসী বাঙালি উদ্যোগপতিদের সংগঠন এনআরওএবি পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে থাকা অনাবাসী ভারতীয়দের একটি ব্যবসায়িক সম্পর্ক স্থাপনের চেষ্টা চালাচ্ছে। এর আগে দোহা এবং দুবাইয়ে দুটি সম্মেলন করলেও তেমন সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই এ বার সম্মেলন কলকাতায় করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে এলআরওএবি। দু’দিনের ওই সম্মেলনে অনাবাসী বাঙালি ছাড়া কিছু বিদেশি শিল্প গোষ্ঠীকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে।
সম্মেলনের উদ্বোধনের শেষে লুলু গোষ্ঠীর প্রতিনিধি সঞ্জু ফিলিপ বলেন, “এই রাজ্য সম্পর্কে আমাদের কিছু আশঙ্কা ছিল। বনধ ইত্যাদির ফলে পণ্য সরবরাহ ব্যাহত হওয়া বা ব্যবসার ক্ষেত্রে সরকারের সহযোগিতা কতটা পাওয়া যাবে, তা নিয়ে। তবে সম্মেলনে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের বক্তব্য আমাদের উত্সাহিত করেছে।”
লুলু গোষ্ঠী বছরে ৫০০ কোটি ডলারের ব্যবসা করে। পশ্চিম এশিয়া, ইয়েমেন এবং মিশরে তাদের ১০৯টি সুপার মার্কেট রয়েছে। খুব শীঘ্রই তারা মালয়েশিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ায় একাধিক মেগা বিপণন কেন্দ্র চালু করবে। এর জন্য পণ্য আমদানি বাড়াতে হবে। ফিলিপ বলেন, “পশ্চিম এশিয়ার দেশগুলিতে ‘ইন্ডিয়া ব্রান্ড নেম’-এর কদর ভাল। তাই আমরা ভারত থেকে পণ্য আমদানি করতে আগ্রহী। বর্তমানে দিল্লি-সহ আরও কয়েকটি রাজ্য থেকে আমরা পণ্য আমদানি করছি। পশ্চিমবঙ্গ থেকেও করতে চাই। সুযোগ থাকলে এই রাজ্যে ফার্মিং করতেও আমরা আগ্রহী। সমস্ত বিষয় খতিয়ে দেখতেই আমাদের এখানে আসা।”
কেবল লুলু গোষ্ঠীই নয়, আরও কয়েকটি বড় মাপের আন্তর্জাতিক বিপণন সংস্থাও রাজ্য থেকে পণ্য আমদানির সম্ভাবনা খতিয়ে দেখেতে সম্মেলনে যোগ দিয়েছে। বিপণন ছাড়াও ইঞ্জিনিয়ারিং, তথ্যপ্রযুক্তি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ-সহ বিভিন্ন শিল্প ও বাণিজ্য সংস্থার প্রতিনিধিরাও ছিলেন।
এ দিন সম্মেলন শেষে রাজ্যের দুই মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এবং সুব্রত সাহা জানান, রাজ্যে প্যারা মেডিকাল কলেজ স্থাপনের জন্য সম্মেলনে যোগ দিতে আসা নিউজিল্যান্ড, সিঙ্গাপুর এবং পশ্চিম এশিয়ার তিনটি সংস্থা তাঁদের কাছে ইচ্ছা প্রকাশ করেছে। এ ছাড়া রাজ্য থেকে গোলাপ ফুল রফতানি করার ব্যাপারেও একাধিক সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা এ দিন অনেকটাই পাকা হয়ে গিয়েছে।
চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “প্যারা মেডিকাল ইনস্টিটিউশন গড়ার মাধ্যমে রাজ্যে যে বড় মাপের লগ্নি আসবে, তা নয়। কিন্তু ওই সব সংস্থার কর্তারা বলেছেন, বিভিন্ন দেশে তাঁদের হাসপাতাল, ডায়গ্নস্টিক সেন্টার রয়েছে। এখান থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদের ওই সব সংস্থায় চাকরির ব্যবস্থা তাঁরা করে দেবেন। পশ্চিমবঙ্গে প্রশিক্ষণের খরচ কম। তাই এখানে ওই ধরনের প্রতিষ্ঠান খুলতে আগ্রহী এই সব সংস্থা।” |