|
|
|
|
আত্মঘাতী বধূ, স্বামীর যাবজ্জীবন
নিজস্ব সংবাদদাতা • দুবরাজপুর |
বিয়ের পরেও পণের জন্য শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁর উপরে শারীরিক ও মানসিক অত্যাচার চালাতেন। ওই অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বিয়ের মাত্র ২ বছরের মাথায় গলায় দড়ি দিয়ে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হন ২১ বছরের ওই মেয়েটি। ন’ বছর আগের ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার বধূর স্বামী-সহ শ্বশুরবাড়ির তিন জনকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সাজা দিল দুবরাজপুর ফাস্ট ট্র্যাক আদালত।
মামলার সরকারি আইনজীবী রাজেন্দ্রপ্রসাদ দে বলেন, “২০০৫ সালের অগস্ট মাসে দুবরাজপুরের মেটেলা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে আত্মঘাতী হন রূপা গোপ (২১)। ওই বধূর বাপের বাড়ির অভিযোগের ভিত্তিতে বধূর স্বামী, ভাসুর ও শাশুড়ির বিরুদ্ধে বধূ নির্যাতন এবং পণের বলি (৪৯৮ক, ৩০৪ক ও ৩০৪খ) এই দু’টি ধারায় মামলা চলছিল। বুধবারই বিচারক অভিজিৎ দে অভিযুক্তদের দোষী সাব্যস্ত করেন। এ দিন বিচারক ৩০৪খ ধারায় বধূর স্বামী ভুবনেশ্বর গোপ, ভাসুর বিশ্বজিৎ গোপ এবং শ্বাশুড়ি অন্নপূর্ণা গোপকে যাবজ্জীবন সাজা শুনিয়েছেন।” একই সঙ্গে আদালত অভিযুক্তদের বধূ নির্যাতনেও দোষী পেয়েছে। সে ক্ষেত্রে বিচারক প্রত্যেকের তিন বছরের কারাদণ্ড নির্দেশ দিয়েছেন। এরই সঙ্গে দোষীদের ২০ হাজার টাকা জরিমানাও হয়েছে।
সরকারি আইনজীবী জানিয়েছেন, ২০০৩ সালের মার্চে খয়রাশোলের আমলাকুড়ি গ্রামের আনন্দগোপাল গোপের মেয়ে রূপার বিয়ে হয় পেশায় কৃষিজীবী দুবরাজপুরের মেটেলা গ্রামের ভুবনেশ্ব গোপের। রূপার পরিবারের লোকজন পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছিলেন, বিয়ের পর থেকেই অতিরিক্ত ১০ হাজার টাকা পণের দাবিতে ওই বধূর উপরে শ্বশুরবাড়ির লোকজন শারীরিক ও মানসিক নির্যাত চালাতেন। সেই অত্যাচার সহ্য না করতে পেরেই তাঁদের মেয়ে আত্মঘাতী হওয়ার পথ বেছে নেয়। এ দিনে রায়ে খুশি মেয়েকে কল্যাণী গোপ। তিনি বলেন, “অত্যাচার করে আমার মেয়েকে ওরা মেরেছে। ওদের আজীবন কারাদণ্ডের সাজা হওয়ায় আমরা খুশি।” অন্য দিকে, বিচারকের সাজা শোনার পরে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাজাপ্রাপ্ত স্বামী, দেওর ও শাশুড়ি। বিশ্বজিতের স্ত্রী বিন্দিবালা গোপ জানান, এই রায়ের বিরুদ্ধে তাঁরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হবেন। |
|
|
|
|
|