|
|
|
|
কর্তারা গ্রামে ক্ষোভ শুনে ফেরার পরে মঞ্জুর বরাদ্দ
নিজস্ব সংবাদদাতা • আসানসোল |
দাবি-দাওয়া ছিল দীর্ঘ দিনের। নানা স্তরে জানিয়েও ফল মেলেনি। কিন্তু কর্তারা গ্রামে এসে রাত কাটিয়ে সমস্যার কথা জানার পরেই পাল্টাতে শুরু করেছে চিত্র। গ্রামবাসীদের কাছ থেকে সরাসরি এলাকার অভাব-অভিযোগের কথা মহকুমাশাসক-সহ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা শুনে যাওয়ার পরেই সালানপুর ব্লকে উন্নয়নমূলক কাজের জন্য মঞ্জুর হয়ে গিয়েছে কোটি টাকার প্রকল্প।
মাস দেড়েক আগে প্রশাসনের অন্য আধিকারিকদের নিয়ে এলাকার দাবি-দাওয়া শুনতে সালানপুরে রাত কাটান আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস। সেখানেই নানা সমস্যার কথা জানান গ্রামবাসীরা। এর পরেও এই সব দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা। প্রশাসনের আধিকারিকেরা সরাসরি সমস্যার কথা শুনে ফেরার পরেই সে সব মেটানোর তোড়জোড় শুরু হয়।
খনি-শিল্পাঞ্চলের অন্য সব এলাকার মতো সালানপুরেও জলের সমস্যা বড় মাথাব্যথার কারণ বাসিন্দাদের কাছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ফেব্রুয়ারির গোড়া থেকেই গ্রামে গ্রামে জলের সমস্যা শুরু হয়ে যায়। এ নিয়ে বছর বছর গ্রামবাসীরা ক্ষোভ-বিক্ষোভও জানান। প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ ব্লকের ১১টি পঞ্চায়েতে মোট ৫২টি নলকূপ বসানোর জন্য প্রায় ৩১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছে। মহিষমুড়া, সামডিহি, ধুন্দাবাদ, হদলা এলাকায় পাঁচটি গভীর নলকুপ বসানোর জন্য সাংসদ তহবিল থেকে পাঁচ লক্ষ টাকা মিলেছে।
আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস জানান, এলাকার নিকাশি ব্যবস্থা নিয়েও নাগরিকদের ক্ষোভের শেষ ছিল না। সে কথা ভেবে ব্লকে একাধিক নর্দমা তৈরির পরিকল্পনা হয়েছে। ব্লক অফিস লাগোয়া এবং রূপনারায়ণপুরের লাল বাংলো থেকে রূপনগর পর্যন্ত, বোলকুণ্ডা গ্রাম, আলকুশা থেকে মহিষামুড়া পর্যন্ত পাকা নালা নির্মাণের জন্য দরপত্র ডাকা হয়েছে। একাধিক জায়গায় পাকা সড়কও নির্মাণ করা হচ্ছে। যেমন, ক্ষুদিকা গ্রাম, ফুলবেরিয়া, ডাবর লেফট ব্যাঙ্ক এলাকায় পাকা সড়ক নির্মাণের দরপত্র ডাকা হয়েছে।
প্রশাসনের আধিকারিকেরা জেনেছেন, সালানপুর এলাকায় একাধিক চাষযোগ্য জমি রয়েছে। কিন্তু প্রয়োজনীয় সেচের অভাবে এলাকার মানুষজন চাষাবাদ ঠিক মতো করতে পারেন না। গত বার রূপনারায়ণপুর এলাকায় একটি জোড়ের উপরে বাঁধ (চেক ড্যাম) নির্মাণের উদ্যোগ হয়েছিল। কিন্তু সেটি ঠিক মতো তৈরি করা হয়নি। ফলে, প্রবল বৃষ্টিতে সেটি ভেঙে যায়। এলাকায় প্লাবন হয়ে আশপাশের ঘড়বাড়িতে জল ঢুকে যায়। আসানসোলের মহকুমাশাসক জানান, এ বারও সালানপুর ব্লকে জোড়ের উপরে বাঁধ নির্মাণের জন্য সাত লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, জোড়বাড়ি এলাকার কুণ্ডলপাড়া শিশু শিক্ষাকেন্দ্র ও নেতাজি সুভাষ মাধ্যমিক শিক্ষাকেন্দ্রের ঘর নির্মাণের জন্য প্রায় আট লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। মহকুমাশাসক জানান, এই ব্লকের দু’টি পঞ্চায়েতে বোর্ড তৈরির বিষয়ে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। যার ফলে পঞ্চায়েত সমিতিরও স্থায়ী সমিতি গঠন করা যায়নি এখনও। তৈরি হয়নি কর্মাধ্যক্ষ। কিন্তু এ জন্য যেন কোনও ভাবেই ব্লকের উন্নয়ন থমকে না যায়, তা দেখার দায়িত্ব দিয়েছেন জেলাশাসক সৌমিত্র মোহন। মহকুমাশাসক আরও জানান, প্রাপ্ত অর্থের বেশির ভাগটাই এসেছে পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন পর্ষদ থেকে। এলাকার সাংসদ তহবিলের টাকাও পাওয়া গিয়েছে বলে জানান তিনি। লোকসভা ভোটের জন্য নির্বাচনী বিধি লাগু হওয়ার আগেই যাতে কাজ শেষ করা যায়, সে ব্যাপারেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন বলে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে। |
|
|
|
|
|