|
|
|
|
ইটভাটা নিয়ে গোলমাল, ভাঙচুর তৃণমূল অফিসে
নিজস্ব সংবাদদাতা • জামুড়িয়া |
ইটভাটাকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ বাধল জামুড়িয়ার বাইপাস এলাকায়। ভাঙচুর হয় তৃণমূলের একটি কার্যালয়েও। বৃহস্পতিবারের এই ঘটনায় এক তৃণমূল নেতা-সহ দু’পক্ষের পাঁচ জন জখম হন। তাঁদের মধ্যে তিন জনকে আসানসোল জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এক পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেছে। তদন্ত চলছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ তৃণমূলের জামুড়িয়া ১০ নম্বর ওয়ার্ড কমিটি কার্যালয়ে ভাঙচুর ও মারপিটের ঘটনা ঘটে। ওই ওয়ার্ড কমিটির সম্পাদক নীলু চক্রবর্তী অভিযোগ করেন, এলাকার একটি ইটভাটার মালিক, সিপিএম আশ্রিত শেখ ফিরোজ ও তাঁর ভাইপো আহমেদ আলি জনা তিরিশ দুষ্কৃতীকে নিয়ে তাঁদের কার্যালয়ে চড়াও হয়। প্রথমে ফিরোজ তাঁর মাথায় ভোজালির বাঁট দিয়ে আঘাত করে বলে অভিযোগ। এর পরে একে একে দুষ্কৃতীরা স্বপন রুইদাস, সত্যনারায়ণ রামানি-সহ তিন তৃণমূল নেতা-কর্মীকে মারধর করে। শেষে ঘরে ঢুকে এক তৃণমূল কর্মীর মা আলেয়া বিবিকেও মারধর করে তারা ফিরে যায় বলে অভিযোগ নীলুবাবুর। |
|
তাণ্ডবের চিহ্ন। —নিজস্ব চিত্র। |
শেখ ফিরোজের অবশ্য পাল্টা অভিযোগ, “আমি ১০ বছর ধরে ইটভাটা চালাচ্ছি। মাঝে কিছু দিন বন্ধ রেখেছিলাম। ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের (বিএলএলআরও) অনুমতি নিয়ে ৮ দিন আগে আবার ভাটা খোলার জন্য কর্মীদের নিয়ে এসে কাজ শুরু করতে যাই। নীলুবাবুর নেতৃত্বে কিছু লোকজন সে দিন কর্মীদের ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেয়। বৃহস্পতিবার আবার ভাটা চালু করতে গেলে নীলুবাবুরা বাধা দেন। তিনি আমাকে তাঁদের কার্যালয়ে ডেকে পাঠান। তাঁর কথা মতো ওই কার্যালয়ে ঢুকতেই আমাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। এলাকার মানুষের সাহায্যে আমি বেঁচে ফিরে আসি।”
তৃণমূল নেতা স্বপনবাবু জানান, নীলুবাবু, সত্যনারায়ণবাবু ও আলেয়া বিবিকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। স্বপনবাবু জামুড়িয়া থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন। নীলুবাবু তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ উড়িয়ে বলেন, “আমার মাথা ফেটেছে। পুলিশ তদন্ত করলেই সব পরিষ্কার হয়ে যাবে।” তাঁর দাবি, “ফিরোজের ইটভাটা নিয়ে আমাদের কিছু বলার নেই। তবে বছরখানেক আগে ভাটা চালানোর জন্য একটি ফাঁকা মাঠে ওরা মাটি কাটায় বড় গর্ত তৈরি হয়। বর্ষায় সেই গর্তে জমা জলে ডুবে মৃত্যু হয় এক বালিকার। তখন ক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করতে প্রশাসনের উদ্যোগে একটি বৈঠক হয়। সেখানে প্রশাসন জানিয়ে দেয়, বিধি মেনে ইটভাটার মালিকদের গর্ত মাটি দিয়ে ভরাটে উদ্যোগী হতে হবে। শেষ পর্যন্ত সেই কাজ ফিরোজেরা করেনি। তাই এলাকার মানুষের ক্ষোভ রয়েছে।” তাঁর অভিযোগ, “সে কারণে ফিরোজেরা এলাকার মানুষকে ভয় দেখিয়ে চুপ করিয়ে রাখার জন্য আমাদের উপরে হামলা চালায়।”
ব্লক তৃণমূল সভাপতি পূর্ণশশী রায়ের দাবি, লোকসভা ভোটের আগে এলাকায় আতঙ্ক ছড়াতে সিপিএম আশ্রিত দুষ্কৃতীরা এই ধরনের কাণ্ড ঘটাচ্ছে। সিপিএমের অজয় জোনাল সম্পাদক মনোজ দত্ত অবশ্য বলেন, “এই ঘটনার সঙ্গে রাজনীতির কোনও যোগ নেই। ইটভাটার জমি নিয়ে বিবাদের জেরেই এমন ঘটনা।” পুলিশ জানায়, পরিস্থিতি আপাতত আয়ত্তে রয়েছে। |
|
|
|
|
|