গাড়ির সারিতে দখল রাস্তা, হাঁসফাঁস শহর
রাস্তার অর্ধেক অংশ জুড়ে গাড়ি। সার দিয়ে রাখা মোটরবাইক। চওড়া রাস্তা কার্যত পরিণত গলিতে।
দুর্গাপুর শহরের সিটি সেন্টার এলাকায় ব্যস্ত সময়ে এমন চিত্র চোখে পড়ে হামেশাই। যত্রতত্র ইচ্ছে মতো গাড়ি রাখার জেরে যানজট হচ্ছে মাঝে-মধ্যেই। পুলিশ জানায়, মাঝে-মধ্যে অভিযান চালানো হয়। তবে তা যে যথেষ্ট নয়, বোঝা যায় এলাকা ঘুরলেই।
দুর্গাপুর শহরে গত কয়েক বছরে পরপর গড়ে উঠেছে নানা কারখানা, শপিংমল, মাল্টিপ্লেক্স, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি সংস্থার অফিস। নানা অফিস-কাছারি গড়ে ওঠায় ব্যস্ত জায়গা হয়ে উঠেছে সিটি সেন্টার এলাকা। আনাগোনা বেড়েছে লোকজনের। যানবাহন যাতায়াতও ক্রমশ বেড়েছে। অথচ, পুরসভার ২২ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তর্গত এই সিটি সেন্টারে বেশির ভাগ জায়গাতেই কোনও পার্কিং জোন নেই। যেখানে পার্কিং জোন রয়েছে, সেখানেও রাস্তায় গাড়ি রাখার প্রবণতা দেখা গিয়েছে।
সিটি সেন্টারে একটি শপিংমলের সামনে।
শহরবাসীর অভিযোগ, সিটি সেন্টারের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার উপরেই সার বেঁধে গাড়ি দাঁড় করিয়ে রাখেন চালকেরা। ফলে, পথচারী ও অন্য যানবাহনের আরোহীদের অসুবিধার মধ্যে পড়তে হয়। বেঙ্গল অম্বুজা এলাকায় গড়ে উঠেছে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার অফিস। সেগুলি বেশির ভাগই মূল রাস্তার পাশে। সেখানে দু’চাকা ও চার চাকার গাড়ি নিয়ে প্রতি দিনই বহু মানুষজন যাতায়াত করেন। সে সব গাড়ি রাখা থাকে রাস্তার পাশেই। বাসিন্দাদের অভিযোগ, চার চাকার গাড়িগুলি রাস্তার পাশে এমন ভাবে রাখা থাকে যে অন্য কোনও গাড়ি এলে তাকে পার করা বিপজ্জনক হয়ে ওঠে। একই অবস্থা হয় মোটরবাইক আরোহীদের ক্ষেত্রেও। এমনই এক মোটরবাইক আরোহী সমীর সাহা বলেন, “রাস্তার উপরে গাড়িগুলি এমন ভাবে রাখা থাকে যে পেরোনোর সময়ে মনে হয়, ধাক্কা না লেগে যায়!”
গোটা সিটি সেন্টার জুড়েই চোখে পড়ে একই অবস্থা। সিটি সেন্টারের নতুন আদালত চত্বরের পাশেই একটি আবাসনের বাসিন্দাদের অনেকে গাড়ি রাখেন বাইরের রাস্তার পাশে। একই চিত্র দেখা যায় দুর্গাপুরে পুরসভার পাশে শপিংমলের কাছে। এই মলের নিজস্ব পার্কিং ব্যবস্থা থাকলেও সামনে ‘নো পার্কিং জোন’-এ দু’চাকা থেকে চার চাকার গাড়ি দাঁড় করানো থাকে। এই মলের আশপাশে অনেকগুলি বহুজাতিক সংস্থার শো-রুম ও দোকান আছে। সে সব সংস্থার বহু কর্মীর গাড়িগুলিও রাস্তার পাশে দাঁড় করানো থাকে বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। ফলে, সদাব্যস্ত এই রাস্তায় প্রায় সময়ই যানজট হয়।
নতুন আদালত চত্বরে।
পুলিশ ও পরিবহণ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টার এলাকার দিনে গড়ে তিন হাজারেরও বেশি মোটরবাইক আসে। যার বেশির ভাগই রাখা থাকে রাস্তার ধারে। এ ছাড়া চার চাকা গাড়ি আসে হাজারেরও বেশি। সেগুলিরও অধিকাংশ রাস্তার ধারে রাখা থাকে। সিটি সেন্টার এলাকায় চারটি পার্কিং জোন রয়েছে। সব মিলিয়ে দু’শো চার চাকার গাড়ি এবং পাঁচশোটি মোটরবাইক রাখা যায়।
সিটি সেন্টারে তিনটি শপিং মল চালু হয়েছে। রয়েছে কয়েকটি মার্কেট কমপ্লেক্স, হোটেল, মাল্টিপ্লেক্স, বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়, এডিডিএ কার্যালয়, দমকল, দু’টি স্টেডিয়াম, স্পোর্টস অ্যাকাডেমি-সহ নানা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু পর্যাপ্ত পার্কিং জোন নেই বলে অভিযোগ। চালকদের দাবি, সে কারণেই রাস্তার পাশে গাড়ি রাখতে বাধ্য হন তাঁরা। দুর্গাপুর সুর্বাবান চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের তরফে প্রফুল্লকুমার ঘোষ জানান, সিটি সেন্টারে যানজট বাড়ছে। তাঁর দাবি, “ব্যবসা বাণিজ্যের উন্নতির জন্য সিটি সেন্টারে উপযুক্ত পার্কিং জোন তৈরি করা হলে খুবই সুবিধা হয়।” পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি সেন্টার এলাকায় আগের থেকে পার্কিং ব্যবস্থার উন্নতি হয়েছে। নতুন পার্কিং জোন তৈরির জন্য জায়গার খোঁজ চলছে।
পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পূর্ব) সুনীল যাদব বলেন, “বেআইনি পার্কিং ধরতে মাঝে-মধ্যেই অভিযান হয়। গাড়ি আটক করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়। এই ধরনের অভিযান আবার হবে।”

ছবি: বিশ্বনাথ মশান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.