মা-বাবার নির্বাচিত পাত্রকে পছন্দ নয় তাঁর। অথচ হস্টেল থেকে তৃতীয় বর্ষের ওই ছাত্রীকে বাড়ি নিয়ে গিয়ে সেই পাত্রের সঙ্গেই বিয়ের তোড়জোড় করছিলেন তাঁরা। মনোমালিন্যের সূত্রপাত তা থেকেই। তার জেরেই বুধবার মালদহের কুট্টিতলাপাড়ায় মহিলা হস্টেলের ছাদ থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন ওই ছাত্রী।
আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। চিকিৎসকেরা জানান, তরুণীর হাত-পা-পাঁজরের একাধিক হাড় ভেঙে গিয়েছে। থেঁতলে গিয়েছে শরীরের অনেকাংশ। রাত পর্যন্ত চেতনাই ফেরেনি তাঁর।
ওই ছাত্রীর বাবা ও মা এ ব্যাপারে বিস্তারিত কিছু বলতে নারাজ। তবে পেশায় ছোট ব্যবসায়ী ছাত্রীর বাবা বলেন, “মেয়ের বিয়ে আমরাই ঠিক করেছিলাম। গত ২৬ ডিসেম্বর তার আশীর্বাদও হয়ে গিয়েছিল। বিয়ের জন্যই এ দিন মেয়েকে হস্টেল থেকে বাড়ি নিয়ে যেতে এসে ছিলাম। ও যে এমন কাণ্ড ঘটাবে ভাবতেও পারিনি।”
বাড়ির চাপে সে যে দিশেহারা, সহপাঠীদের কাছে তা জানিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। তাঁর এক সহ-আবাসিক বলেন, “ক’দিন ধরেই ও খুব অস্থির হয়ে ছিল। বার বারই বলত, ‘বাবা-মা’র দেখা পাত্র আমার পছন্দ নয়। জোর করে বিয়ে দিলে আমি কিন্তু যা খুশি করতে পারি।” তাঁরাই জানান, ওই ছাত্রী কবুল করেছিল তাঁর পছন্দের কাউকেই বিয়ে করতে চায় সে। মঙ্গলবার অনেক রাত পর্যন্ত জেগেছিল ওই ছাত্রী। মোবাইলে কয়েক বার ফোন করেছিল কাউকে।
বুধবার সকালে তাঁর বাবা-মা হস্টেলে এসে ‘মেয়ের শরীর খারাপ’ বলে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার জন্য মেট্রনের কাছে দরখাস্ত করেন। মেট্রন মমতাজ বেগম বলেন, “সকাল ৮টা নাগাদ মেয়ে অসুস্থ বলে ওঁর বাবা-মা ছুটি করিয়ে নেন। জানতাম না বিয়ের জন্যই ওঁরা মেয়েকে নিতে এসেছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবর পাই উঠোনে পড়ে রয়েছে ওই ছাত্রী। আমরা ধরাধরি করে হাসপাতালে নিয়ে যাই।”
ঘটনাটি শুনে স্থানীয় বিধায়ক তথা পর্যটন মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী বলেন, “ওই ছাত্রীর বাবা মা জোর করে বিয়ে দিতে চাইছিলেন। মেয়েটি রাজি ছিলেন না। আর তাই আত্মহত্যার চেষ্টা বলে মনে হয়।” |