সরকারি নথিভুক্ত পুকুরকে বাস্তুজমিতে রূপান্তরের জন্য সুপারিশ করে বিতর্কে জড়ালেন দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট পুরসভার কার্যনির্বাহী অফিসার অমিয় ভট্টাচার্য। প্রাচ্যভারতীর আনন্দবাগান পাড়া এলাকায় ৩৭ শতক আয়তনের পুকুর ভরাট করার অভিযোগ ওঠে। খবর পেয়ে শনিবার জেলা প্রশাসন থেকে কড়া পদক্ষেপ নিয়ে পুকুর ভরাট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এলাকায় বসেছে পুলিশ পিকেট। পুকুর ভরাটের পিছনে কারা যুক্ত তা তদন্তে নেমে বুধবার পুরসভার অফিসারের লেখা সুপারিশ পত্রের কথা প্রকাশ্যে আসতে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে। মহকুমাশাসক সুদীপ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ওই চিঠি দেখেছি। পুকুরকে বাস্তু জমি রূপান্তরের জন্য সুপারিশের এক্তিয়ার অফিসারের নেই।” জেলাশাসক তাপস চৌধুরী বলেছেন, “সুপারিশ পত্রের প্রতিলিপি পেয়েছি। দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
পুর কার্যনির্বাহী অফিসার অমিয় ভট্টাচার্য বলেন, “ওই পুকুরটি ভরাটের বিষয়ে এলাকার তৎকালীন কাউন্সিলর এবং বাসিন্দাদের আপত্তি নেই বলে গণদরখাস্ত পেয়ে রূপান্তর করার পক্ষে মত দিয়েছিলাম। কিন্তু আমার কথাতে তো আর পুকুরটি বাস্তু জমিতে পরিণত হবে না। তা করবে ভূমি ও রাজস্ব দফতর।” পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান রাজেন শীল বলেন, “গত বছর ১৪ জুলাই বালুরঘাট পুরসভায় প্রশাসক বসে। দু’দিন আগে ১১ জুলাই পুর কার্যনির্বাহী অফিসারকে দিয়ে ওই সুপারিশ পত্র লিখিয়ে পুরসভার ক্ষমতা থেকে সরে যায় আরএসপি।” পুকুর ভরাট কাণ্ডের পিছনে এলাকার একটি ক্লাবের প্রাক্তন সম্পাদক তথা প্রাথমিক শিক্ষক জড়িত বলে পুলিশ জেনেছে। পুলিশ সুপার প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ভূমি ও রাজস্ব দফতর থেকে আজ, বৃহস্পতিবার পুকুর ভরাট করার ঘটনায় অভিযোগ করা হচ্ছে।”
স্থানীয়দের অভিযোগ, জলা ভরাট করার পিছনে তৃণমূলের এক নেতা তথা প্রোমোটারের মদত রয়েছে। তাই অভিযোগ পেয়েও তৃণমূল পরিচালিত বালুরঘাট পুরসভা কর্তৃপক্ষ চুপচাপ বসে ছিল। এ দিন সংশ্লিষ্ট ১৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর ব্রতময় সরকার অভিযোগ করেন, “পুরসভার বিগত বামবোর্ডের সময় ওই পুকুর ভরাটের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল। বিষয়টি জানকে পেরেই প্রশাসনকে ব্যবস্থা নিতে বলেছি।” প্রাক্তন কাউন্সিলর আরএসপির গায়েত্রী বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “ওই সময় ক্লাবের কয়েক জন সদস্য এবং এলাকার একাংশ বাসিন্দা পুকুর ভরাটে আপত্তি নেই বলে আমার কাছে দাবিপত্র দিয়ে আবেদন করেন। তা পুরসভার দায়িত্বপ্রাপ্ত অমিয়বাবুর কাছে পাঠাই। এর বেশি জানি না।” |