শহরের জেকে, নিস্তারিনীর মতো বড় কলেজগুলি-সহ জেলার বেশিরভাগ কলেজে সব আসনে প্রার্থী দিতে পারেনি এসএফআই। ১০ জানুয়ারি জেলার সিধো কানহো বীরসা বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতাধীন ১২টি কলেজের নির্বাচন। তার আগেই বরাবাজারের বিক্রম টুডু, বলরামপুর কলেজ, নিতুড়িয়ার পঞ্চকোট মহাবিদ্যালয়, মানবাজার কলেজ ও পুঞ্চার লৌলাড়া এই পাঁচটি কলেজে বিনা লড়াইতে জিতে গিয়েছে তৃণমূল ছাত্রপরিষদ (টিএমসিপি)। রঘুনাথপুরেও সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে টিএমসিপি।
গত বছরেও বরাবাজার ও কাশীপুরে ছাত্র সংসদ দখলে রেখেছিল এসএফআই। রঘুনাথপুরে প্রার্থী দিয়ে কিছু আসনে জিতেছিল, লড়াই করেছিল জেকে কলেজেও। সেখানে এক বছরের মধ্যে বরাবাজার ও রঘুনাথপুরে প্রার্থীই দিতে পারল না তারা। জেকে কলেজে এ বার টিএমসিপির সঙ্গে মূল লড়াই হচ্ছে ছাত্র পরিষদের। প্রার্থী দিতে না পারার জন্য এসএফআই নেতৃত্ব অবশ্য তৃণমূলের সন্ত্রাসকে দায়ী করেছেন। অভিযোগ অস্বীকার করেছে টিএমসিপি। তাদের দাবি, সাংগঠিনক দুর্বলতার জন্যই প্রার্থী পায়নি এসএফআই। এই সাংগঠনিক দুর্বলতার প্রসঙ্গ উঠে আসছে এসফআইয়ের নিচু স্তরের কর্মী-সমর্থকদের কথায়ও। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার নচিকেতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “জেলা প্রশাসন কলেজগুলির অধ্যক্ষদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে আলোচনা করে, সব কলেজে একদিনেই নির্বাচনের দিন স্থির করেছে। নির্বাচন ঘিরে কোনও কলেজের পরিস্থিতি উতপ্ত হয়েছে, এই মর্মে কোনও কলেজই বিশ্ববিদ্যালয়কে রিপোর্ট দেয়নি।”
জেলার বেশিরভাগ কলেজে এসএফআইয়ের এমন অবস্থা হলেও, ব্যতিক্রম ঝালদার অচ্ছ্রুরাম মেমোরিয়াল কলেজ ও কাশীপুরের মাইকেল মধুসূদন মহাবিদ্যালয়ে। তবে ঝালদার ক্ষেত্রে ফব’র ছাত্র সংগঠন ছাত্র ব্লকের সঙ্গে জোট করে প্রার্থী দিয়েছে তারা। একই চিত্র বাগমুণ্ডির সুইসার নেতাজি কলেজেও।
মুখে তৃণমূলের সন্ত্রাসের কথা বললেও, সাংগঠিনক দুর্বলতার কারণটি ঘুরে ফিরে আসছে। এই প্রেক্ষিতে সংগঠনের নিচু স্তরের কর্মী-সমর্থকদের কথায়, “বছরভর কলেজগুলিতে বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে ছাত্রদের কাছে যাওয়া হয়। গত এক বছর ধরে কার্যত কোনও কর্মসূচিই নেওয়া হয়নি কলেজগুলিতে। পড়ুয়াদের বিভিন্ন সমস্যায় পাশে থাকা সম্ভব হয়নি। এমনকী বহু কলেজেই ইউনিট সম্মেলন পর্যন্ত করতে আসেনি জেলা স্তরের নেতারা। তার ফল ভুগতে হয়েছে কলেজ নির্বাচনে।” তবে এসএফআই-এর জেলা সম্পাদক সনৎ কিস্কু দাবি করছেন, “প্রতিটি কলেজেই আমাদের যথেষ্ঠ কর্মী-সমর্থক রয়েছে। কিন্তু নির্বাচনের আগে পুলিশের উপস্থিতিতেই যে ধরনের সন্ত্রাস করেছে টিএমসিপি, তারপরে কেউ প্রার্থী হতে সাহস পায়নি।” টিএমসিপির জেলা সভাপতি গৌতম রায় বলেন, “আমরা সন্ত্রাস করলে অন্য কলেজে ছাত্রপরিষদ বা ডিএসও কীভাবে প্রার্থী দিতে পারল? আসলে পঞ্চায়েত নির্বাচন থেকেই স্পষ্ট হয় গিয়েছে, সিপিএমকে প্রত্যাখান করেছে মানুষ।” |