ইডেনের বাইশ গজে যখন বাংলাকে বাঁচানোর ইনিংস খেলছেন সুদীপ চট্টোপাধ্যায়, বাইশ গজের বাইরে তখন সুদীপদের ‘বাঁচানোর’ টোটকা দিয়ে গেলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়।
সুদীপের ৯৬ রানের ইনিংস নিয়ে স্বভাবতই উচ্ছ্বসিত সিএবি। আর এটা নিয়েই সিএবি কর্তাদের সতর্ক করে দিলেন সৌরভ। বলে গেলেন, লক্ষ্মীরতন শুক্ল-অশোক মলহোত্র জুটির নেতৃত্বে বাংলা এ বছর সুদীপ, অভিমন্যু ঈশ্বরণের মতো বেশ কিছু তরুণ প্রতিভার খোঁজ পেয়েছে। কিন্তু এঁদের নিয়ে শুধু উচ্ছ্বসিত হলেই চলবে না। কারণ তাঁদের এখানেই ফেলে রাখলে তাঁরা আর এগোতে পারবেন না। তাই তাঁদের যতটা সম্ভব আগলে রাখতে হবে। তাঁরা যাতে ঠিকঠাক কোচিং পান, সে দিকে নজর দিতে হবে। এবং সেটা শুধু একটা রঞ্জি মরসুমে নয়, চালাতে হবে গোটা বছর ধরে। খেয়াল রাখতে হবে, দুটো রঞ্জি মরসুমের মধ্যিখানের সময়টাও যেন সঠিক ‘মনিটরিং’-এর মধ্যে থাকেন তরুণ ক্রিকেটাররা। যেন এক মরসুমে ভেসে উঠে পরের মরসুমেই হারিয়ে না যান তাঁরা। |
ইডেনে চলছে সুদীপদের লড়াই। দর্শক সৌরভ তখন
বাংলা অধিনায়কের সঙ্গে। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
সিএবি-কে একটা প্রাথমিক নীল নকশাও দিয়েছেন সৌরভ। বলেছেন, রাজ্যের তরুণ প্রতিভাবান ক্রিকেটারদের একটা তালিকা তৈরি করা হোক। ব্যাটসম্যান, পেসার, স্পিনারের ভিত্তিতে তাঁদের ভাগ করা হোক কুড়ি-পঁচিশ জনের ছোট ছোট দলে। এবং তাঁদের বিশেষ কোচিংয়ের জন্য নিয়ে আসা হোক আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা প্রাক্তনদের। যে প্রাক্তনরা বছরে অন্তত চার-পাঁচ বার এসে কোচিং করিয়ে যাবেন তরুণদের। সুদীপের উদাহরণ টেনেই সৌরভ বুঝিয়েছেন, অনূর্ধ্ব ২৫ টিমে সে ভাবে প্রভাব ফেলতে না পারা সুদীপ কী ভাবে অশোকের মতো কোচের নেতৃত্বে এত উন্নতি করেছেন। আর তাই সৌরভ চান, বাংলা ক্রিকেটকে এমন কোচেরা ‘নার্স’ করুন যাঁদের আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতা আছে। যাঁরা টেকনিকের সঙ্গে টেম্পারামেন্ট শেখাতে পারবেন তরুণদের।
বাংলা নিয়ে সৌরভের স্ট্র্যাটেজি এখানেই শেষ নয়। আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন প্রাক্তন হিসেবে তিনি কিছু নামও প্রস্তাব করে গিয়েছেন সিএবি-র কাছে। যাঁদের মধ্যে রয়েছে গুন্ডাপ্পা বিশ্বনাথ, অনিল কুম্বলের মতো বড় নাম। শোনা গেল সিএবি কর্তাদের তিনি বুধবার বলেছেন যে, তরুণরা কেরিয়ারের শুরুর দিকে বিভিন্ন কোচেদের পরামর্শ পান। ছোটবেলার কোচ থেকে শুরু করে ক্লাব কোচ, আঞ্চলিক টিমের কোচ, এনসিএ-র কোচ— বিভিন্ন ক্রিকেটীয় ঘরানার এই মিশেলে অনেকেই বিভ্রান্ত হয়ে পড়তে পারেন। সেখানে কেরিয়ারের শুরুতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটারের প্রশিক্ষণ পেলে তরুণদের ফোকাস ঠিক রাখাটা অত কঠিন হবে না। সৌরভ আরও বলে গিয়েছেন যে, দরকারে তিনি নিজে প্রাক্তনদের সঙ্গে এ ব্যাপারে কথা বলবেন। এবং সিএবি কর্তাদের কাছে তাঁর নাকি আবেদন, অন্তত মার্চ মাসের মধ্যে যেন রাজ্যের তরুণ ক্রিকেটারদের একটা তালিকা তাঁকে দেওয়া হয়। তা হলে কাজ শুরু হতে পারে এপ্রিল থেকেই। |