বাহারি পার্ক থেকে ব্যস্ত রাস্তার বুলেভার্ডে সবুজায়ন— শহর সাজানোর নিত্যনতুন প্রকল্পের কাজ চলছেই। এ বার সেই তৈালিকায় যোগ হচ্ছে মাছ, কাছিম-সহ নানা জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ সমৃদ্ধ একটি ওয়াটার-হাব। পূর্ব কলকাতার ই এম বাইপাস লাগোয়া ক্যাপ্টেন ভেড়িতে এ বছরই সেই জলজ-হাব গড়ার কাজ শুরু করতে চলেছে মৎস্য উন্নয়ন নিগম।
বুধবার বিধাননগরে মৎস্য দফতরের প্রশাসনিক ক্যালেন্ডার প্রকাশ অনুষ্ঠানে এই পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেন মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ। মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, গোয়ার ‘পঞ্জিম ইনস্টিটিউট অব ওশনোলজি’র অনুকরণে গড়া হবে হাবটি। তবে শুধু পর্যটক টানতে নয়, সমুদ্র বিজ্ঞানে আগ্রহীদের জন্য সেখানে থাকবে গবেষণার সুযোগও।
মৎস্যমন্ত্রী জানান, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে হাব গড়ার প্রাথমিক নকশা তৈরির কাজও সম্পূর্ণ। তাঁর সম্মতি পেলেই কাজ শুরু হবে। দফতরের কর্তাদের আশা, মুখ্যমন্ত্রীর সায় পেতে বিশেষ বেগ পেতে হবে না। কারণ সরকারি সূত্রে খবর, ওই হাব গড়ার ভাবনা প্রথম মাথায় এসেছিল মুখ্যমন্ত্রীরই। বিধাননগরের পরে চিংড়িহাটা মোড় পেরিয়ে রাস্তার দু’ধারে বিস্তৃত ক্যাপ্টেন ভেড়ি। |
সম্প্রতি নিউ টাউনে ইকো পার্কের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের উদ্বোধন সেরে ফেরার পথে জলাশয়টি নজরে পড়তেই মমতা বলেছিলেন, “এখানে কিছু একটা করলে হয় না!” তখনই তিনি পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের মাধ্যমে মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহকে ফোন করে ওই জলাশয় বিষয়ে নির্দেশ দেন। ভেড়ির সংস্কার করে সেটিকে কী ভাবে সাজানো যায় তা নিয়ে দুই মন্ত্রীকেই ভাবতে বলেন তিনি।
মুখ্যমন্ত্রীর ইচ্ছেতেই এ বার ক্যাপ্টেন ভেড়ি নতুন চেহারা পেতে চলেছে। চন্দ্রনাথবাবু অবশ্য এখনই বিস্তারিত কিছু জানাতে চাইছেন না। তবে মৎস্য দফতর সূত্রে খবর, জলাশয় সংস্কার, পাড় বাঁধানো, হাঁটার রাস্তা তৈরির পাশাপাশি মাছ, জলজ প্রাণী ও উদ্ভিদ বিষয়ে সাধারণের আগ্রহ গড়ে তোলাই এর লক্ষ্য। বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের একটি অ্যাকোয়ারিয়াম এবং একটি কাছিম-ঘর তৈরির পরিকল্পনা আছে মৎস্য দফতরের। দফতরের কর্তাদের একাংশের অভিমত, জলজ উদ্ভিদ ও প্রাণী সম্পর্কে আগ্রহ বাড়ানোর মতো রসদও থাকবে এখানে।
এ দিন বিভাগীয় ক্যালেন্ডার প্রকাশ অনুষ্ঠানে গত আর্থিক বছরের ঘাটতি পূরণ করে মৎস্য দফতরকে লাভের মুখ দেখাতে নির্দিষ্ট কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে দাবি করেন চন্দ্রনাথবাবু। মন্ত্রী বলেন, “জলাশয় সংরক্ষণ, মাছ-উৎপাদন বৃদ্ধির বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। ইতিমধ্যেই মৎস্য নিগম কাজে সাফল্যের মুখ দেখেছে। দু’বছরের মধ্যে যাতে রাজ্যে মাছ উৎপাদনের ঘাটতি মিটিয়ে উদ্বৃত্তের মুখ দেখা যায় সে চেষ্টাও চলছে।” |