ডাবুতে সংরক্ষিত অরণ্যে অবাধে বৃক্ষনিধন, নজর নেই প্রশাসনের
চোরাকারবারিরা গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে ক্যানিংয়ের ডাবুতে।
বাম আমলে ১৯৮৬ সালে বাম আমলে সেচ দফতরের ক্যানাল বিভাগ দক্ষিণ ২৪ পরগনার ক্যানিং-১ ব্লকের নিকারিহাটা গ্রাম পঞ্চায়েতের ডাবুতে প্রায় ১০৪ একর জমির উপর প্রায় কুড়ি হাজার গাছ লাগানো হয়েছিল। অনেকেই সেখানে ঘুরতে আসতেন। সেচ দফতরের অনুমতি নিয়ে চড়ুইভাতিও করতেন কেউ কেউ। সেচ দফতরের উদ্যোগে জায়গাটিতে ইউক্যালিপটাস, সোনাঝুরি, অর্জুন, শিরীষ, মেহগনি গাছ লাগানো হয়। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে চোরাকারবারিরা সেই সব গাছ কেটে পাচার করে দিচ্ছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, সংরক্ষিত ওই এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই দুষ্কৃতীদের আনাগোনা শুরু হয়। বসে যায় মদ, গাঁজার আসর।
সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী মন্টুরাম পাখিরা বলেন, “পর্যটনশিল্পের প্রসার করতে ডাবুতে একটি পর্যটনকেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। জায়গাটা ঘুরে দেখে রিপোর্ট জমা দিয়েছি। পর্যটন দফতরের সঙ্গেও কথা হয়েছে। গাছ কাটা বন্ধ করতে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
স্থানীয় বাসিন্দা সুজয় পুরকাইত, ভদ্রেশ্বর মণ্ডল বলেন, “সেচ দফতরের উদাসীনতায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ডাবুর পরিবেশ। সমাজবিরোধীদের আখড়া হয়ে ওঠায় নিরাপত্তাও নেই। রাতের অন্ধকারে গাছ কাটা তো চলছেই। এখনই যদি প্রশাসন পদক্ষেপ না করে, তবে খুব শিগগিরই সমস্ত গাছ সাফ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা।”
এ ভাবেই কেটে ফেলা হয়েছে একাধিক গাছ।—নিজস্ব চিত্র।
ডাবুতে কর্মরত ক্যানাল বিভাগের কর্মী নিমাইচন্দ্র পুরকাইত, ঘনশ্যাম নস্কর জানান, ওই এলাকা রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পাঁচ জন কর্মী ও তিন জন নৈশপ্রহরী রয়েছেন। কিন্তু রাতের অন্ধকারে সমাজবিরোধী ও চোরাকারবারীরা আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে সংরক্ষিত ওই এলাকায় আসছে। গাছ কেটে নিয়ে যাচ্ছে। ফলে তাঁরা কার্যত নিরুপায়। তাঁদের অভিযোগ, “কিছু বলতে গেলেই প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছে চোরাকারবারীরা। সমস্ত বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” শুধু এটাই নয়, সংরক্ষিত এলাকার ভিতরের নলকূপও দুষ্কৃতীরা চুরি করে নিয়ে গিয়েছে বলে তাঁদের দাবি। ঘনশ্যামবাবু বলেন, “আগে এখানে ঢুকতে প্রবেশমূল্য দিতে হত। কিন্তু পরিকাঠামো বেহাল হয়ে পড়ায় প্রবেশমূল্য নেওয়া বন্ধ হয়ে গিয়েছে। পানীয় জলের নলকূপগুলো সমাজবিরোধীরা চুরি করে নিয়ে গিয়েছে।” বাসিন্দারা জানান, আগে ডাবুতে চড়ুইভাতি করতে আসতেন অনেকে। কিন্তু বেহাল পরিকাঠামো আর নিরাপত্তার অভাবে এখন আর তেমন কেউ আসেন না। ভিতরে পর্যাপ্ত পানীয় জল ও শৌচাগারও নেই।
ক্যানাল বিভাগের একজিকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার আশিস দত্তর বক্তব্য, “ডাবুতে যে গাছ কেটে নেওয়া হচ্ছে, তা জানিয়ে থানায় একাধিকবার অভিযোগ করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “দফতরের কাজের জন্য ওখানে একটি ক্যাম্প অফিস তৈরি হয়েছে। সেটি কোনও পর্যটন কেন্দ্র বা চড়ুইভাতি করার জায়গা নয়। তবে আমাদের অনুমতি নিয়ে কেউ কেউ ওখানে যায় পিকনিক করতে। তবে পর্যটকদের কোনও সমস্যা হচ্ছে বলে শুনিনি।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.